ফিচার

রবীন্দ্রনাথের প্ল্যানচেটে মিডিয়াম হতেন উমা গুপ্ত

মৃণালিনী ঘোষাল Jan 17, 2021 at 4:23 am ফিচার

অনেকেই জানেন, পরলোকচর্চায় বিশেষ আগ্রহ ছিল রবীন্দ্রনাথের। বিশেষত শেষ জীবনে এ বিষয়ে তিনি বেশ কোমর বেঁধে উদ্যোগী হয়েছিলেন। শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রসদনে রক্ষিত আটটি খাতা থেকে মৃত প্রিয়জনদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের লিখিত বিবরণ উদ্ধার করা হয়েছে। বিবরণগুলি লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথের তৎকালীন সচিব ডঃ অমিয়চন্দ্র চক্রবর্তী এবং রবীন্দ্র-অনুরাগী মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়। ‘ভৌতিক প্রসঙ্গ’ শিরোনামে সংরক্ষিত এই খাতাগুলিতে ১৯২৯ সালের শেষ দিকে রবীন্দ্রনাথের পরলোকচর্চা বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। গবেষক অমিতাভ চৌধুরীর সৌজন্যে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। এই গোটা পর্বে মৃতদের সঙ্গে যোগাযোগে রবীন্দ্রনাথকে মিডিয়াম হিসেবে সাহায্য করেছিলেন উমা গুপ্ত নামে পঁচিশ বছর বয়সী এক তরুণী। বলে রাখা দরকার, উমার সাহায্য নেবার অনেক আগে থেকেই রবীন্দ্রনাথ পরলোকচর্চা করেছেন, প্ল্যানচেটও করেছেন। কিন্তু মিডিয়ামের সাহায্য নিলেন এই প্রথম। ১৯২৯ সালের অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাস জুড়ে বিভিন্ন সময় উমার সাহায্যে তিনি মৃত আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। কে ছিলেন এই উমা গুপ্ত? তাঁর বিষয়ে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের বন্ধু ও অনুরাগী শ্রী মোহিতচন্দ্র সেনের কন্যা। সুপণ্ডিত ও দর্শনের অধ্যাপক মোহিতচন্দ্র সেন ছিলেন রবীন্দ্রনাথের প্রথম কাব্য সংকলন ‘কাব্যগ্রন্থাবলী’র সম্পাদক। শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষও ছিলেন কিছুদিন। উমা মোহিতচন্দ্রের দ্বিতীয় কন্যা। ডাকনাম বুলা। পরে শিশিরকুমার গুপ্তের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। উমা কাব্যচর্চাও করতেন। তাঁর দুটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছিল। ‘ঘুমের আগে’ এবং ‘বাতায়ন’। দ্বিতীয়টি প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর মৃত্যুর পর। বইটির ভূমিকা লিখেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। পিতা মোহিতচন্দ্র সেনের মতোই খুব অল্প আয়ু পেয়েছিলেন উমা। মোহিতচন্দ্র মারা গিয়েছিলেন পঁয়ত্রিশ বছর বয়েসে। উমা মারা যান সাতাশে। রবীন্দ্রনাথকে প্ল্যানচেটে সাহায্য করার বছর দুয়েকের মাথায়।

আত্মা, পরলোক, মৃতদের সঙ্গে যোগাযোগ ইত্যাদি বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠিক কী মনে করতেন, সে নিয়ে তর্ক-বিতর্ক প্রচুর হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের তৎকালীন সচিব অমিয়চন্দ্র চক্রবর্তী যেমন তাঁর আচরণকে ‘মহাপৌরুষেয় ছেলেমানুষী’ বলেছেন। অমিতাভ চৌধুরীকে চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “মানুষের মননজাত নিছক কল্পনাকে ছলনা না বলে মায়া রচনা বলাই ভালো - স্মৃতিবিস্মৃতিকে নিয়ে খেলা - তার সঙ্গে ধ্রুব সত্যের যোগ নেই। রবীন্দ্রনাথের পক্ষে এটা মহাপৌরুষেয় ছেলেমানুষী, অস্বীকৃতিকেই অন্যভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা, তিনি নিজেই যা গ্রহণ করেননি, তা যেন অতিশয়োক্তি দ্বারা ভুল বুঝতে চেয়েছেন।… রবীন্দ্রনাথ জানতেন আমার এবং অন্যের সম্পূর্ণ অপ্রতীতির কথা। তাঁর চরিত্রশক্তির পরিচয় দিয়েছিলেন আমাদের উপর কোনো প্রভুত্ব প্রয়োগের চেষ্টা না করে। আমরাও তাঁর ঐ কিছুদিনের খেলায় বাধা দিইনি, একননা জানতাম তিনিও যথার্থ বিশ্বাস করেননি। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের আন্দোলনে তাঁর মনে নানা সূক্ষ্মচিন্তা, চৈতন্যের অনুভব জেগে উঠেছে, তাতেই তিনি তখনকার মতো তৃপ্ত ছিলেন। …” বিভিন্ন সময়ে রবীন্দ্রনাথের নিজের বক্তব্য থেকে মনে হয়, তিনি প্রথম জীবন থেকেই খোলা মনে কৌতূহলের সঙ্গে বিষয়টা জানতে ও বুঝতে চাইতেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্ভবত কিছুটা সদর্থক মন নিয়েই বিষয়টাকে দেখতে চেয়েছেন। বিশ্বাস খুব দৃঢ় ছিল এমন বলা না গেলেও, বিশ্বাসের দিকেই যেন একটু বেশি ঝুঁকে ছিলেন। তবে পরলোকতত্ত্বকে তিনি ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে জড়াননি। জীবনের একেবারে সায়াহ্নে ১৯৩৯ সালে তিনি মৈত্রেয়ী দেবীকে যা বলেছিলেন, তাতে এই আভাস পাওয়া যায়। ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’ বইয়ে এই বক্তব্যটি উদ্ধৃত হয়েছে - “পৃথিবীতে কত কিছু তুমি জানো না, তাই বলে সে সব নেই? কতটুকু জানো? জানাতা এতটুকু, না-জানাটাই অসীম। সেই এতটুকুর উপর নির্ভর করে চোখ বন্ধ করে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া চলে না। … যে বিষয়ে প্রমাণও করা যায় না, অপ্রমাণও করা যায় না, সে সম্বন্ধে মন খোলা রাখাই উচিত। যে কোন একদিকে ঝুঁকে পড়াটাই গোঁড়ামি।” 

উমার ক্ষমতার কথা জেনে প্রথমে রবীন্দ্রনাথ স্পষ্টতই সংশয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু প্রথমদিনই তাঁর সংশয় কিছুটা দূর হয়ে আগ্রহ জেগে ওঠে। ১৯২৯ সালের ৬ নভেম্বর রানী মহলানবিশকে লেখা একটি চিঠিতে তিনি লিখেছেন - “সেদিন বুলা এসেছিল। হঠাৎ কথায় কথায় প্রকাশ পেল তার হাতে প্রেতাত্মা ভর করে পেন্সিল চালিয়ে কথা কইতে পারে। বলা বাহুল্য শুনে মনে মনে হাসলুম। বললুম - আচ্ছা দেখা যাক। প্রথম নাম বেরোল মণিলাল গাঙ্গুলি। তার কথাগুলোর ভাষা এবং ভঙ্গীর বিশেষত্ব আছে। উত্তরগুলো শুনে মনে হয় যেন সেই কথা কইছে।” তাঁর সংশয় নিঃশেষে দূর হয়ে গিয়েছিল তা নয়। কিন্তু উমা সম্ভবত কিছুটা হলেও তাঁর আস্থা অর্জন করতে পেরেছিলেন। সে কারণেই উমার সাহায্যে পরপর তিনি প্রিয় মানুষদের আহ্বান জানাতে থাকেন।   

প্রত্যেক প্ল্যানচেটের সময় রবীন্দ্রনাথ ও উমাকে ঘিরে বসে থাকতেন অন্তরঙ্গ কেউ কেউ। কখনও আসর বসত জোড়াসাঁকোয়, কখনও শান্তিনিকেতনের উদয়নে। শ্রোতা হিসেবে এক-একবার এক-এক দল। রবীন্দ্রনাথ নিজেই প্রশ্ন করতেন। খাতা পেনসিল নিয়ে তৈরি হয়ে বসে থাকা উমাদেবীর শরীরে আগমন ঘটত প্রার্থিত আত্মার। তাঁর হাত দিয়েই লেখা হত আত্মার উত্তর। ১৯২৯-এর অক্টোবরে পুজোর ছুটিতে শান্তিনিকেতনে বেশ কয়েকদিন রবীন্দ্রনাথ উমার সাহায্যে বিদেহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এইসব আলাপচারিতার কোনও লিখিত বিবরণ পাওয়া যায় না। পাওয়া যায় না নভেম্বরের ৪, ৫ ও ৮ তারিখে হওয়া পারলৌকিক আলাপচারিতার বিবরণও। নভেম্বরের ৬, ২৮, ২৯ এবং ডিসেম্বরের ১৬ তারিখের বিস্তৃত বিবরণ উক্ত খাতাগুলিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তাতে অশরীরীদের নামের তালিকা নেহাত ছোটো নয়। কবির ডাকে সাড়া দিয়ে এসেছিলেন তাঁর স্ত্রী মৃণালিনী দেবী, নতুন বৌঠান কাদম্বরী দেবী, বড় মেয়ে মাধুরীলতা (বেলা), ছোটো ছেলে শমীন্দ্রনাথ (শমী), নতুন দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথ, ভাইপো বলেন্দ্রনাথ, ভাইপো হিতেন্দ্রনাথ, বলেন্দ্রনাথের স্ত্রী সাহানা দেবী, ভাইঝি অভিজ্ঞা, অবনীন্দ্রনাথের জামাই সাহিত্যিক মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়, কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, সাহিত্যিক সুকুমার রায়, বন্ধু লোকেন পালিত, বন্ধু মোহিতচন্দ্র সেন, বন্ধুপুত্র সন্তোষচন্দ্র মজুমদার, শান্তিনিকেতনের প্রাক্তন দুই অধ্যাপক ও কবি-শিষ্য সতীশচন্দ্র রায় ও অজিতকুমার চক্রবর্তী। সবচেয়ে বেশিবার এসেছিলেন শমীন্দ্রনাথের আত্মা। এছাড়া আনাহুতভাবে এসে পড়েছিলেন কবির স্নেহধন্য অপূর্বকুমার চন্দের স্ত্রী ও কবির বন্ধু চারুচন্দ্র দত্তের মেয়ে লোপামুদ্রা, কবির মা সারদাদেবীর কোনও এক সখী সর্বজয়া, সরিৎবাসিনী, ঠাকুরবাড়ির দাসী রাসমণি, জনৈক হালদার মশাই, আরতি মল্লিক, শান্তি মিত্র, চণ্ডীবালা প্রমুখও। লোপামুদ্রা বাদে এঁদের কেউই কবির সরাসরি পরিচিত ছিলেন না। 

পারলৌকিক যোগাযোগের দিনগুলো রবীন্দ্রনাথকে ক্রমেই ভাবিয়ে তুলছিলেন উমা। মৈত্রেয়ী দেবীকে কবি বলেছিলেন - “(বুলা) কী রকম করে সব লিখত বল তো? আশ্চর্য নয় তার ব্যাপারটা? … ও কেন মিছে কথা বলবে? কী লাভ ওর এ ছলনা করে? … এমন সব কথা বলেছে যা ওর বিদ্যাবুদ্ধিতে কখনও সম্ভব নয়। যদি স্বীকার করবে, একটুও সময় না নিয়ে আমি প্রশ্ন করা মাত্র তার ভাল ভাল উত্তর, উপযুক্ত উত্তর ও ফসফস করে লিখে যেতে পারে তাহলে ওকে অসামান্য বলে মানতে হয়। আমি কী প্রশ্ন করব, তা তো আর ও আগে থেকে জানত না যে প্রস্তুত হয়ে আসবে? এই ধর না, নতুন বৌঠান আমার সঙ্গে কী রকম ভাবে কথা বলতে পারেন, তা ওর পক্ষে বোঝা শক্ত। তিনি বললেন - “বোকা ছেলে, এখনও তোমার কিছু বুদ্ধি হয়নি।’ একথা এমনি করে তিনিই আমায় বলতে পারতেন। ওর পক্ষে আন্দাজ করে বলা কি সম্ভব? তা ছাড়া আরও অনেক কথা লিখেছিল, যা ও জানতে পারে না বা তেমন করে প্রকাশ করতে পারে না। একবার একটা খাঁটি কথা লিখলে - ‘তোমরা আমাদের কাছে এত রকম প্রশ্ন কর কেন? মৃত্যু হয়েছে বলেই তো আমরা সবজান্তা হয়ে উঠিনি।’ কত অদ্ভুত অদ্ভুত কথা সে লিখেছিল, অনেক বোঝাও গেল না। শমী বলছে - ‘আমি বৃক্ষলোকে আছি, সেখানে এক নূতন জগৎ সৃষ্টি করছি।’ কে জানে কী তার মানে। যে রকম দ্রুত গতিতে লিখে যেত, আশ্চর্য লাগত। একটা কথা শুনে তার অর্থ বুঝে উত্তর লিখে যাওয়া, এক মুহূর্ত বিরাম না করে, আমি তো মনে করি না যে সহজে সম্ভব। তাছাড়া এত মিথ্যা বলেই বা লাভ কী…।”  বিশ্বাসের দিকেই যে তিনি ঝুঁকছিলেন, তা আরও স্পষ্ট হয় ১০ নভেম্বর, ১৯২৯ তারিখে রানি মহলানবিশকে লেখা একটি চিঠিতে। প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ উমার হাতের লেখার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার কথা বলেছিলেন। সে প্রসঙ্গেই কিছু কথা এই চিঠিতে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ - “…প্রশান্ত তার চিঠিতে লিখেছে বুলার হাত দিয়ে যে লেখাগুলো বেরোয় বিশেষ করে তার পরীক্ষা আবশ্যক। আমার নিজের মনে হয় এসব ব্যাপারে অতি নিঃসংশয় প্রমাণ পাওয়া সম্ভব নয়। আমার আপন সম্বন্ধে যাকে ফ্যাক্টস বলা যায়, তাই নিয়ে যদি তুমি পরীক্ষা করো, তবে প্রমাণ হবে আমি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নই। যে গান নিজে রচনা করেছি, পরীক্ষা দিতে গেলে তার কথাও মনে পড়বে না, তার সুরও নয়। একজন জিজ্ঞাসা করেছিল চন্দননগরের বাগানে যখন ছিলুম তখন আমার বয়স কত। আমাকে বলতে হয়েছিল আমি জানিনে। বলা উচিত ছিল প্রশান্ত জানে। আমি যখন দক্ষিণ আমেরিকায় গিয়েছিলুম সে দু বছর হলো না তিন বছর না চার বছর, নিঃসংশয়ে বলতে পারিনে। শমীর মৃত্যু হয়েছিল কবে, মনে নেই। বেলার বিয়ে হয়েছিল কোন বছরে কে জানে। অথচ টেলিফোনে আমার সঙ্গে কথা বলার সময়ে তুমি যা নিয়ে আমার সম্বন্ধে নিঃসংশয় সেটা তোমার ধারণা মাত্র। তুমি জোর করে বলছ ঠিক আমার স্বর, আমার ভাষা, আমার ভঙ্গী। আর কেউ যদি বলে না; তারপরে আর কথা নেই। কেননা তোমার মনে আমার ব্যক্তিত্বের যে একটা মোট ছবি আছে, অন্যের মনে তা না থাকতে পারে, কিম্বা অন্য রকম থাকতে পারে। অথচ এই ব্যক্তিত্বের সাক্ষ্যই সবচেয়ে সত্য সাক্ষ্য, কেননা এটাকে কেউ বানাতে পারে না। আমার জীবনের বিশেষ বিশেষ তথ্য আমার চেয়ে প্রশান্ত বেশি জানে, কিন্তু জানার চেষ্টা করলেও আমার মোট ছবিটা সে নিজের মধ্যে ফোটাতে পারবে না। আত্মার চরম সত্য তথ্যে নয়, আত্মার আত্মকীয়তায়। ইতিমধ্যে পরশু বুলার হাতে একটা লেখা বেরিয়েছে তাতে নাম বেরোল না। বললে, নাম জিজ্ঞাসা কোরো না, তুমি মনে যা ভাবছ আমি তাই। তারপরে যেসব কথা বেরোল সে ভারি আশ্চর্য। তার সত্যতা আমি যেমন জানি আর দ্বিতীয় কেউ না।” প্রিয় মানুষদের এই ‘মোট ছবি’ বিষয়টা রবীন্দ্রনাথ উমার লেখা উত্তরে খুঁজে পাচ্ছিলেন বলেই তাঁর মনে একরকম বিশ্বাস এসেছিল। সে বিশ্বাস অকম্পিত নয়, অটল নয়। কিন্তু তাকে বিশ্বাস ছাড়া অন্য কিছু বলা সমীচীন নয় বোধহয়।  

রবীন্দ্রনাথের প্ল্যানচেট এবং মিডিয়াম হিসেবে উমার ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক কোনওদিনই শেষ হবে না। তবে এই রহস্যময়ী তরুণী বিষয়ে আগ্রহ আমাদের জেগেই থাকবে। সত্যিই কি তাঁর মাধ্যমে এ মর্ত্যলোকের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতেন বিদেহীরা? তাই যদি হয়, তবে তার রহস্য কী? কোন ক্ষমতাবলে তিনি হয়ে উঠতেন দুই জগতের সেতু? এই নিয়ে আগ্রহী বা গবেষকদের খুব বেশি চর্চার সুযোগ ঘটেনি। সুযোগ দেননি উমা। ১৯৩১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মাত্র সাতাশ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি। 

এতগুলি আত্মার অস্তিত্ব-ভার নিজের মধ্যে ধারণ করতে করতেই কি জীবনীশক্তি ফুরিয়ে এসেছিল তাঁর?  অনেক প্রশ্ন, অনেক রহস্যের অবকাশ রেখে গেছে তাঁর অকালমৃত্যু। 



ঋণ : ১) রবীন্দ্রনাথের পরলোকচর্চা, অমিতাভ চৌধুরী, সপ্তর্ষি প্রকাশন।

২) রবিজীবনী (ষষ্ঠ, সপ্তম খণ্ড), প্রশান্তকুমার পাল, আনন্দ।  


#রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর #পরলোকচর্চা #প্রেতচর্চা #উমা গুপ্ত #মোহিতচন্দ্র সেন #প্ল্যানচেট #Planchet #Medium #মিডিয়াম #অমিয়চন্দ্র চক্রবর্তী #মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায় #রবীন্দ্রনাথের পরলোকচর্চা #মৃণালিনী ঘোষাল #সিলি পয়েন্ট

Leave a comment

All fields are required. Comment will appear after it is approved.

trending posts

newsletter

Connect With Us

today's visitors

60

Unique Visitors

215845