শোভাবাজার রাজবাড়ির থিয়েটারের গল্প
শোভাবাজার-সুতানুটি মেট্রো স্টেশন থেকে পায়ে হাঁটা পথ। উত্তর কলকাতার দুর্গাপুজোগুলোর মধ্যে আজও বাঙালির প্রথম পছন্দ শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। এই রাজবাড়ির কৌলীন্য ও গৌরব সুবিদিত। এখন অনুষ্ঠানগৃহ হিসেবেও পাওয়া যায়। রাজা রাধাকান্ত দেব, রাজা নবকৃষ্ণ দেব প্রমুখের নাম কলোনিয়াল কলকাতার ইতিহাসে অপরিহার্য। এই রাজবাড়ি-প্রাঙ্গণেই একসময় মেম বাইজি এনে মজলিশ জমিয়েছিলেন রাজা নবকৃষ্ণ দেব। ১৮৪৪ সালে রাধাকান্ত দেবের উদ্যোগে এই রাজবাড়ির ভিতরে তৈরি হয়েছিল থিয়েটার। আজ তাঁরই গল্প রইল।
একটি বড় হলঘরের ভিতরে তৈরি হয়েছিল মঞ্চ। ১৮৪৪ সালের ১৯ অক্টোবর দুটি ইংরেজি নাটক দিয়ে শুরু হয়েছিল এই মঞ্চের যাত্রা। নাটকদুটির নাম ছিল 'দি লাভারস অব সালামাক্কা' আর 'দি ফক্স অ্যান্ড দি উলফ'। তারপরেই অবশ্য স্তব্ধ হয়ে যায় থিয়েটার। দীর্ঘ দু-দশক পর ১৯৬৫ সালে দেবীকৃষ্ণ বাহাদুরের উদ্যোগে এখানে আবার শুরু হয় নাট্যচর্চা। তৈরি করা হয় শোভাবাজার প্রাইভেট থিয়েট্রিকাল সোসাইটি। এবার আর ইংরেজি নাটক নয়, বাংলা নাটক অভিনয়ের তোড়জোড় শুরু হয়। প্রথম নাটক হিসেবে বেছে নেওয়া হয় মধুসূদনের বিখ্যাত প্রহসন 'একেই কি বলে সভ্যতা'। প্রথম অভিনয়ের তারিখ ছিল ১৮ জুলাই, ১৯৬৫।
এই একই নাটক আরও একবার অভিনীত হয় ২৯ জুলাই। লিখিত হবার পর প্রায় তিন বছর এই প্রহসনটি অভিনীত হয়নি। মধুসূদন বেলগাছিয়া থিয়েটারের জন্য এই প্রহসন লেখা সত্ত্বেও নানা বিতর্ক ও প্রতিকূলতার কারণে তাঁরা এটি অভিনয় করতে পারেননি। সেদিক থেকে শোভাবাজার থিয়েট্রিকাল সোসাইটি যথেষ্ট সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন বলতে হয়। বছর দেড়েক পরে মধুসূদনের ঐতিহাসিক ট্রাজেডি 'কৃষ্ণকুমারী'-ও এঁরা অভিনয় করেন। খুব বেশি অভিনয় না করলেও বাংলা শখের থিয়েটারের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা শোভাবাজার থিয়েট্রিকাল সোসাইটির জন্য অবশ্যই বরাদ্দ থাকবে।
...............
#shobhabazar rajbari #bengali theatre #madhusudan dutta #silly পয়েন্ট