প্রয়াত 'একালের ডারউইন' : স্মরণে প্রকৃতিবিদ এডওয়ার্ড উইলসন
প্রকৃতিবিদ্যায় অভাবনীয় অবদানের জন্য 'একালের ডারউইন' বলা হত তাঁকে। পতঙ্গবিদ্যার ক্ষেত্রেও তিনি নতুন দিশা দেখিয়েছিলেন। বিশেষত পিঁপড়ে নিয়ে অসাধারণ গবেষণার জন্য পরিচিত ছিলেন 'Ant Man' নামেও। গত ২৬ নভেম্বর, ৯২ বছর বয়সে জীবনাবসান ঘটল বিখ্যাত প্রকৃতিবিদ ও প্রাণ-সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ এডওয়ার্ড অসবোর্ন উইলসনের।
আধুনিক প্রকৃতিবিদ্যার ক্ষেত্রে উইলসন নিজেই ছিলেন আস্ত এক প্রতিষ্ঠান। জন্ম ১৯২৯ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা প্রদেশে। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেবার পর ডক্টরেট করেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সারাজীবনে ৩০ টিরও বেশি বই লিখেছিলেন। ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ 'Sociobiology: The New Synthesis'দিয়েই সবার নজরে এসেছিলেন। প্রবল বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছিল সেই বই। উইলসন দুবার পুলিৎজার পুরস্কার পান। প্রথমবার ১৯৭৯ সালে, 'On Human Nature' বইয়ের জন্য এবং ১৯৯১ সালে 'The Ants' বইয়ের জন্য। এছাড়াও পেয়েছেন অজস্র সম্মান ও পুরস্কার। ফিকশনেও উইলসন চমকে দিয়েছেন। 'Anthill' উপন্যাসে তিনি দেখিয়েছেন এক বালকের জলাভূমি রক্ষার সংগ্রাম। ১৯৯৪ সালে লিখেছেন আত্মজীবনী 'The Naturalist'। কর্মজীবনের সিংহভাগই তিনি নিয়োজিত করেছিলেন তিনি প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য। নিজের চিন্তাভাবনার অভিমুখকে 'Scientific Humanism' বলতে পছন্দ করতেন। 'Myrmecology' বা পিঁপড়ে সংক্রান্ত গবেষণায় তিনি উন্মোচিত করেছিলেন সম্পূর্ণ নতুন এক দিগন্ত। তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বিজ্ঞান সম্মান ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্সে ভূষিত করা হয়েছিল। ২০০৫ সালে তাঁর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় তাঁরই নামাঙ্কিত 'E.O. Wilson Biodiversity Foundation', যে প্রতিষ্ঠান আজও সাফল্যের সঙ্গে জীব সংরক্ষণের কাজ করে আসছে। ২০০৮ সালে উইলসন তৈরি করেন 'Encyclopedia of Life' নামে একটি ওয়েবসাইট, যেখানে তিনি পৃথিবীর ১.৯ মিলিয়ন জীবকে নথিভুক্ত করেন। তাঁর অভাবনীয় কর্মকাণ্ডকে স্বীকৃতি জানাতে সে বছরই তৈরি হয় তাঁর জীবন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র, যার নাম 'Darwin's Natural Heir'।
#প্রকৃতিবিদ্যা #Ant Man #এডওয়ার্ড অসবোর্ন উইলসন #Sociobiology #পরিবেশ ও প্রাণচক্র #টিম সিলি পয়েন্ট