গবেষণাগারে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি হল সিন্থেটিক ভ্রূণ, সম্ভাবনার পাশাপাশি উস্কে দিচ্ছে বিতর্কও
শুক্রাণু বা ডিম্বাণু ছাড়াই ভ্রূণের জন্ম কি সম্ভব? খোদার ওপর আরেকবার খোদকারি করে সেই অসম্ভবকেও সম্ভব করে দেখালেন বিজ্ঞানীরা। জিন-বিশেষজ্ঞ জোসেফ হান্নার নেতৃত্বে ইসরায়েলের উইজম্যান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের একদল গবেষক নিষিক্ত ডিম্বাণু বা জরায়ু ছাড়াই গবেষণাগারে ইঁদুরের একটি সিন্থেটিক ভ্রূণ তৈরি করে ফেলেছেন।
‘সেল’ (CELL) নামে বিখ্যাত সায়েন্স ম্যাগাজিনে এই বিস্তারিত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হওয়ার পর হইচই পড়ে গেছে বিজ্ঞানমহলে। জানা গিয়েছে, এটা ‘স্টেম সেলে’র কারসাজি। স্টেম সেল বা শাখা কোষ থেকেই কৃত্রিমভাবে ভ্রূণ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। ভ্রূণ থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় একটি প্রাণ বিকশিত হতে হতে যে-যে বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে থাকে, এই কৃত্রিম ভ্রূণ সেই সমস্ত বৈশিষ্ট্য অর্জন করছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র, রক্ত ইত্যাদির পূর্বাভাস ফুটে উঠছে তার মধ্যে। জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এ নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী সাফল্য। গবেষকদের পর্যবেক্ষণ, সাধারণত ইঁদুরে ভ্রূণ তৈরি হতে ২০ দিন সময় লাগে। কিন্তু গবেষণাগারে মাত্র সাড়ে আটদিনেই তা নিষিক্ত হয়েছে।
যেহেতু মাতৃদেহের বাইরে এই ভ্রূণটির বিকাশ হয়েছে, ফলে তার বৃদ্ধির যাবতীয় ধাপগুলি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। তাতে স্বাভাবিক স্তন্যপায়ী ভ্রূণের বেড়ে ওঠা বিষয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব হতে পারে। কেন গর্ভাবস্থায় ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যায় সে বিষয়ক অনেক ধোঁয়াশার অবসান ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন : জিন নিয়ে কারিকুরি, খোদার উপর খোদকারি? / সায়নদীপ গুপ্ত
তবে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি কিছু প্রশ্নও উঠছে। নীতিগত প্রশ্নে এই গবেষণার পরবর্তী ধাপ আটকে যাবে কিনা, সেই নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রাকৃতিক পদ্ধতি এড়িয়ে কৃত্রিমভাবে এই ভ্রূণ তৈরি কতটা নৈতিক, সেই প্রশ্ন উঠছে স্বাভাবিকভাবেই। কৃত্রিমভাবে এই ভ্রূণ তৈরি করা ইঁদুরের ক্ষেত্রে সম্ভব হলেও মানুষের সিন্থেটিক ভ্রূণ তৈরি কঠিন বলেই মনে করছেন গবেষকরা। তাঁরা এও স্পষ্ট করে জানাচ্ছেন, মানুষের সিন্থেটিক ভ্রূণ তৈরি নিয়ে তাঁরা ভাবছেনই না। কারণ তা অপ্রয়োজনীয়। তাঁদের এই গবেষণার উদ্দেশ্য মানুষের গর্ভকালীন ও ভ্রুণ-অবস্থাকালীন স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যার সমাধান।
..........................
ঋণ : futurism.com
#SYNTHETIC EMBRYO #Lab-grown Embryo # Weizmann Institute of Science #silly পয়েন্ট