'গ্লাস ফ্রগ'-এর আশ্চর্য রহস্য ভেদ করলেন বিজ্ঞানীরা
প্রকৃতির এক আশ্চর্য সৃষ্টি এই বিশেষ প্রজাতির ব্যাং। মূলত মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অঞ্চলে এই নিশাচর ব্যাংদের দেখা মেলে। নাম 'গ্লাস ফ্রগ'। এমনিতে গায়ের রং গাঢ় সবুজ, কিন্তু বিশেষ কিছু সময়ে ইচ্ছেমতো নিজেদের পেটের দিকের অনেকটা অংশ স্বচ্ছ করে তুলতে পারে এরা। সেই অবস্থায় কাচের মতোই তাদের দেহের অভ্যন্তরের সবকিছু দেখা যায়। মূলত ঘুমনোর সময়েই এরা দেহকে স্বচ্ছ করে তোলে। সম্প্রতি ভেদ হল এই ক্ষমতার নেপথ্য কারণ।
সামুদ্রিক প্রাণীদের কারও কারও মধ্যে এই অদ্ভুত ক্ষমতা দেখা যায়। কিন্তু ডাঙার প্রাণীদের মধ্যে এমন ক্ষমতা খুবই বিরল। বিজ্ঞানীদের মতে, তাদের এই কৌশল মূলত আত্মরক্ষার জন্যই। দিনের বেলা ঘুমনোর সময় অরক্ষিত থাকবে বলেই নিজেদের স্বচ্ছ করে তোলে, যাতে সহজে কারও দৃষ্টি আকর্ষণ না করে। ১৯৭২ সালে ইকুয়েডরে প্রথমবার এই ব্যাং-কে আলাদা করে চিহ্নিত করেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তাদের এই আশ্চর্য ক্ষমতার রহস্যভেদ করা যায়নি। এতদিনে বিজ্ঞানীরা সেই রহস্যের সমাধান করেছেন। 'Science' জার্নালে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, ঘুমের সময় শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ লোহিত রক্তকণিকাকে এরা লিভারে একত্র করে। তাতে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না। কিন্তু দেহে অক্সিজেন ও অন্যান্য জরুরি উপাদান সরবরাহের জন্য বজায় থাকে লসিকা বা প্লাজমার প্রবাহ। গবেষক জুঞ্জি ইয়াও (Junjie Yao)-এর কথায়, আত্মরক্ষার জন্যই এদের এভাবে অভিযোজন ঘটেছে। প্রাণীজগতে নানারকম অদ্ভুত ক্যামোফ্লাজের নিদর্শন রয়েছে। তার মধ্যে 'গ্লাস ফ্রগ'-এর এই বিশেষ ক্ষমতা ক্যামোফ্লাজের এক অনন্য উদাহরণ।
....................