দু বছরে সাতশো কেজি প্লাস্টিক অপসারণ : নজির কলেজপড়ুয়ার
২০১৯ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম’-এর (UNEP) ‘প্লাস্টিক টাইড টার্নার চ্যালেঞ্জ’ প্রকল্পে নাম লিখিয়েছিলেন বরোদার সায়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী স্নেহা শাহি। স্বেচ্ছাসেবক পরিবেশকর্মী হিসাবে অনুমোদন মিলেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে। ১৮ জন তরুণ পরিবেশকর্মীকে নিয়ে তৈরি দলের নেতৃত্বে ছিলেন স্নেহা। বিগত দু বছরে স্নেহা ও তাঁর দলবল গুজরাটের নদী, খাল, নর্দমা-সহ বিভিন্ন জলাশয় থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ৭০০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করেছেন। ছোট্ট দল নিয়ে মাত্র দু বছরেই এই বিপুল কর্মকাণ্ড নজর কেড়ে নিয়েছে সকলের। স্থানীয় জলাশয়ের বাস্তুতন্ত্রকে ধ্বংসের মুখ থেকে ফিরিয়ে এনে প্রাণ সংরক্ষণেও ভূমিকা নিচ্ছেন তাঁরা।
প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে স্নেহাদের লড়াই ও প্রচার শুরু হয়েছিল কলেজ ক্যাম্পাস থেকেই। কলেজেরই একটি নর্দমা পরিষ্কার করার মাধ্যমে তাঁরা কাজ শুরু করেন। তারপর আঞ্চলিক মজে যাওয়া খাল থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথকীকরণের উদ্যোগ নেন তাঁরা। তাঁরা খেয়াল করেছিলেন, প্লাস্টিক বর্জ্যের মাধ্যমে জলস্রোত রুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় বাসস্থান ও স্বাভাবিক যাতায়াত হারাচ্ছে ঘড়িয়াল এবং মিষ্টি জলের কচ্ছপ। সেইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জলাশয় তীরবর্তী বাস্তুতন্ত্রও। ব্যাহত হচ্ছে জলজ উদ্ভিদ ও তাদের ওপর নির্ভরশীল পতঙ্গদের স্বাভাবিক জীবন।
বিষয়টি নজরে আসার পরেই মূলত জলজ বাস্তুতন্ত্র নিয়েই কাজ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন স্নেহা। বদ্ধ জলাশয়, খাল, নদী— সমগ্র গুজরাট জুড়ে চলে তাঁর দলের প্লাস্টিক অপসারণ অভিযান। সেইসঙ্গে তাঁরা চালিয়ে যান লাগাতার সচেতনতামূলক প্রচারও। সংগ্রহ করা বর্জ্য নানাভাবে পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের ধারাবাহিক কাজের ফলে রাজ্যে বেড়েছে কচ্ছপ এবং অন্যান্য সরীসৃপের সংখ্যা। বর্তমানে বরোদায় তরুণ শিক্ষার্থীদের পরিবেশ দূষণরোধী কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্নেহা। সেইসঙ্গে বেঙ্গালুরুর অশোকা ট্রাস্ট ফর রিসার্চ ইন ইকোলজি থেকে পিএইচডি করছেন গুজরাটি তরুণী। গবেষণা আর হাতেকলমে ফিল্ড ওয়ার্ক - এই দুয়ের মাধ্যমেই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার কাজ তিনি চালিয়ে যেতে চান।
আরও পড়ুন:মাস্ক বিভ্রাট : অতিমারি-ঘটিত বিপুল বর্জ্য বাড়াচ্ছে বিপদ