জাপানি টর্পেডোয় ভারতের 'টাইটানিক-দুর্ঘটনা', মারা গেছিলেন ২৮০ জন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আঁচে তখন পুড়ছে গোটা বিশ্ব। ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে ভারতকেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষত ভারতের প্রতিবেশি জাপানই ছিল ব্রিটিশদের দুর্ধর্ষ দুশমন। ১৯৪২ সালের নভেম্বর মাসে জাপানিদের আক্রমণে ডুবে গেছিল ভারতের যাত্রীবাহে জাহাজ এসএস তিলাওয়া। ধরন ও ভয়াবহতার দিক থেকে এই দুর্ঘটনাকে তুলনা করা হয় কুখ্যাত টাইটানিক দুর্ঘটনার সঙ্গে। এর ফলে প্রাণ হারিয়েছিলেন মোট ২৮০ জন ।
১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর, ৭৩২ যাত্রী ও ২২২ জন ক্রু নিয়ে এসএস তিলাওয়া মুম্বই থেকে যাত্রা শুরু করে বিকেল ৫ টায়। গন্তব্য আফ্রিকা। বিশ্বযুদ্ধের আবহে ভারত মহাসাগরে সাবমেরিন-আক্রমণের ভয় ছিলই। ব্রিটিশ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক জাহাজের সংখ্যা অনেক কমিয়েও দিয়েছিল। প্রথম দু-দিন বিনা বিপদে যাত্রার পর তৃতীয় দিন জাপানি নৌসেনার I-29 সাবমেরিনের নজরে পড়ে যায় এসএস তিলাওয়া। যাত্রীবাহী জাহাজ দেখেও টর্পেডো ছুঁড়তে দ্বিধাবোধ করেনি জাপানি নৌসেনা। দুটি টর্পেডো চার্জ করা হয়েছিল। টাইটানিকের মতোই তিলাওয়া জাহাজেও যথেষ্ট সংখ্যায় লাইফবোট ছিল না। ফলে যাত্রীদের অনেকেরই পরিণতি হয়েছিল টাইটানিকের যাত্রীদের মতোই। অনেকের সলিল সমাধি ঘটে। অনেকে জাহাজের ভাঙা কাঠের টুকরো ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। সেই অবস্থায় কেউ-কেউ শিকার হয়েছিলেন ব্যারাকুডার মতো মাংসাশী জলচর প্রাণীর। ২৫ নভেম্বর এসএস বারমিংহ্যাম নামে একটি জাহাজ এস বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করে এবং ২৭ নভেম্বর এসে পৌঁছায় মুম্বইয়ের বন্দরে। সম্প্রতি এ বছর ২৩ নভেম্বর মুম্বইয়ের গ্র্যান্ড হোটেলে এসএস তিলাওয়া-র দুর্ঘটনার আশি বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি স্মরণসভায় সমবেত হয়েছিলেন মৃতদের পরিবারের সদস্যরা।
১৮৮৮ সালে গুজরাটের 'এসএস বৈতারণা' জাহাজের দুর্ঘটনাকেও অনেকে 'টাইটানিক ট্রাজেডি'-র সঙ্গে তুলনা করেন। তবে সেই ঘটনাটি ঘটেছিল মূল টাইটানিক-দুর্ঘটনার ২৪ বছর আগে। ১৮৮৮ সালের ৮ নভেম্বরের রাতে আরব সাগরের প্রবল ঝড়ে নিখোঁজ হয়ে যায় জাহাজটি। জাহাজের কোনো ভগ্নাবশেষ বা যাত্রীদের দেহও পাওয়া যায়নি।
.....................
#Indian Titanic #SS Tilawa #silly পয়েন্ট