হুতোম পেঁচার নাট্যচর্চা : কালীপ্রসন্ন সিংহ ও বাংলা থিয়েটার
'হুতোম পেঁচার নকশা' বা মহাভারতের অনুবাদ শুধু না, কালীপ্রসন্ন সিংহের আগ্রহ ছিল নাট্যচর্চাতেও। নিজের বাড়িতেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রঙ্গমঞ্চ। বিদ্যোৎসাহিনী রঙ্গমঞ্চ। আর এই রঙ্গমঞ্চের সূত্রেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন নাটককার, অভিনেতা ও পরিচালক। 'কালীসিঙ্গি'-র নাট্যচর্চা অনেকটাই অনালোকিত। আজ সেই বিষয়েই কিছু কথা বলা যাক।
১৮৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যোৎসাহিনী রঙ্গমঞ্চে প্রথম নাটকাভিনয় হয় ১৮৫৭ সালের ১১ এপ্রিল। ভট্টনারায়ণের সংস্কৃত নাটক 'বেণীসংহার'-এর বাংলা অনুবাদ অভিনীত হয়। অনুবাদ করেছিলেন রামনারায়ণ তর্করত্ন। অভিনয়ে স্বয়ং কালীপ্রসন্ন অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও ছিলেন মহেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, ক্ষেত্রমোহন ঘোষ প্রমুখ। দর্শকাসন অলংকৃত করেছিলেন এদেশীয় অভিজাত মানুষজন ও বিদেশী সাহেবরা। অভিনয় উচ্চপ্রশংসিত হয়।
উৎসাহিত হয়ে কালীপ্রসন্ন এরপর নিজেই অনুবাদ করে ফেলেন কালিদাসের 'বিক্রমোর্বশী'। ১৮৫৭ সালের ২৪ নভেম্বর বিদ্যোৎসাহিনী মঞ্চে অভিনীত হয় 'বিক্রমোর্বশী'। কালীপ্রসন্ন নিজে রাজা পুরুরবার ভূমিকায় অভিনয় করেন। বিদ্যোৎসাহিনী মঞ্চে অভিনীত তৃতীয় নাটকটি কালীপ্রসন্নের লেখা মৌলিক নাটক। নাটকের নাম 'সাবিত্রী সত্যবান'। অভিনয়ের তারিখ ১৮৫৮ সালের ৫ জুন। তবে যতদূর জানা যায়, এটি পাঠ-অভিনয় হয়েছিল। আর তার আগেই গ্রন্থাকারে প্রকাশ পেয়েছিল নাটকটি। পরের বছর এমনভাবেই পাঠ-অভিনয় হয়েছিল ভবভূতির 'মালতীমাধব' নাটকের। কালীপ্রসন্ন ছিলেন বিদ্যোৎসাহিনী মঞ্চের প্রাণপুরুষ। তিনি ছিলেন একাধারে উদ্যোক্তা, অনুবাদক, নাটককার, পরিচালক ও অভিনেতা। তাঁর নাট্যচর্চার পিপাসা মিটেছিল এই মঞ্চকে কেন্দ্র করেই। এই রঙ্গমঞ্চ আরও অনেক অভিজাত বাঙালিকে এই ধরনের শখের নাট্যমঞ্চ নির্মাণে উৎসাহিত করেছিল।
..........................
#Kaliprasanna Singha #Hutom Pyanchar Noksha #silly পয়েন্ট #কালীপ্রসন্ন সিংহ