মিছিলের ডায়রি থেকে : ৪
দুপুর রোদে ফাট ধরছে মাটির। জল কমছে পুকুরে। শুকিয়ে উঠছে মাঠ। তালগাছটা খানিক উপরে উঠে মেঘের খোঁজ করছে। পাচ্ছে না। কলাপাতায় হলুদ ছোপ ধরেছে। ইতঃস্তত ঘুরতে থাকা কয়েকটা কুকুর, লাল পিঁপড়ের সারি, একটা নাম না জানা বাচ্চা সাপ, একলা বাছুর, স্কুলের ঘন্টা, আপ-ডাউন ট্রেনের ভোঁ আর টিকিটবাবু। ব্যস।
এখানে লোক কম হয়। সকালটা পার করে দিতে পারলে, দুপুর সন্ধ্যেয় অনায়াসে এক একটা বই শেষ। মাঝেসাঝে কিছু লোক জমে। বই বন্ধ হয়। অকাল ইন্টারভ্যালে সিনেমার মেয়াদ যায় বেড়ে। পাল্লা দিয়ে লম্বা হয় দিন। চড়তে থাকে রোদ।বাড়তে থাকে তাত। ফসল নিড়োনো দুপুরের ক্ষেত সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে পালাতে হাতছানি দেয়।
কখনো বা বাধ্য করে তোলে।
আত্মহত্যার তারিখ পিছতে থাকি।
ফাঁকা হয়ে ওঠা এমন এক-একটা দুপুরে খুব ফোন করতে ইচ্ছে করে।কি করছে ? কেমন আছে?একটু কথা বলতে পারবে কি?
উত্তরও মজুদ। তারও ঘুম থেকে উঠে একটা নির্দিষ্ট গন্তব্য আছে। ব্যস্ত থাকে ।
আরও পড়ুন : মিছিলের ডায়েরি থেকে : ৩ / শৌভিক মুখোপাধ্যায়
ফোন করলে কি ধরবে? যদি না ধরে, রাগ যদি না কমে! ভাবতে ভাবতে ফোন বেজে বেজে কেটে যায় । একা লাগে। প্রতি রাতে যখন সব চুপ, নিজের নিঃশ্বাসের শব্দটুকু ছাড়া আর কিছু কানে আসে না, তখন এভাবেই কাছের মানুষদের কাছে ভরসা খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে মন। যদি পায়, ঘুম হয়। গাঢ় ঘুম। আর না পেলে, আবার একেকটা রাতে খুব দূরে যেতে ইচ্ছে করে।
.............................................
[পোস্টার : অভীক]