ইঁদুরে ইলেকট্রনিক চিপ : ভারতীয় সেনায় যোগ দিচ্ছে 'র্যাট-সাইবর্গ' বাহিনি
ইঁদুরদের সেনা-জওয়ান বললে এবার থেকে আপত্তি করা যাবে না আর।
আজ্ঞে হ্যাঁ। ব্যাপারটা হয়তো সেদিকেই এগোচ্ছে। ইঁদুরের মাথায় অস্ত্রোপচার করে বসানো হচ্ছে বিশেষ ইলেকট্রনিক চিপ। সঙ্গে ছোট্ট ক্যামেরা আর মাইক্রোফোনও। শত্রুশিবিরে গোপনে সেঁধিয়ে তারা জোগাড় করে আনবে তাদের হাঁড়ির খবর। এমনই ভাবনা থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনিতে নিয়ে আসা হচ্ছে ইঁদুরদের বিশেষ বাহিনি। তাদের গতিবিধি সবটাই রিমোটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে দূর থেকে।
আরও পড়ুন : জলের তলায় আশ্চর্য গ্রিনহাউজ : ফসল ফলাচ্ছে 'নিমো-র বাগান'
মানবেতর প্রাণীদের কাটাছেঁড়া করে তাদের গুপ্তচরবৃত্তি বা যুদ্ধের কাজে লাগানোর বিষয়টা অবশ্য নতুন নয় একেবারেই। আমেরিকায় সিআইএ-র এরকম অনেক প্রজেক্ট ছিল বলে জানা যায়। প্রথমবার এমনই এক পরীক্ষা সিআইএ করেছিল একটি বিড়ালকে নিয়ে। সেটা ছয়ের দশক। ঠাণ্ডা যুদ্ধের আবহ। 'অ্যাকুস্টিক কিটি' নামে সেই প্রজেক্টে সে সময় ২০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রাক্তন সিআইএ কর্মকর্তা ভিক্টর মারকেট্টি তাঁর ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত ‘The CIA and the Cult of Intelligence’ বইতে এ বিষয়ে সামান্য বর্ণনা দিয়েছেন– “বিড়ালের ঘাড়ের নিচের অংশে ছোট রেডিও ট্রান্সমিটার লাগানো হয়েছিল। তার সঙ্গে সরু তারের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছিল বিড়ালের কানের অংশে লাগানো ছোট মাইক্রোফোন। সঙ্গে ছিল অত্যন্ত ছোট আকারের ব্যাটারি ও অ্যান্টেনা।" বিড়াল-প্রজেক্ট অবশ্য মুখ থুবড়ে পড়েছিল। কিন্তু থামেনি পশুপাখিদের নিয়ে এমন পরীক্ষানিরীক্ষা। ভার্জিনিয়ার নিজেদের হেডকোয়ার্টারস, হট স্প্রিং-এর ‘আই কিউ জু’ সহ আরও নানা গোপন ঘাঁটিতে সিআইএ বিভিন্ন পশু-পাখি নিয়ে এই ধরনের যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিল, তার খুব সামান্য অংশই জানা সম্ভব হয়েছে। শুধু তো আমেরিকা না, বিশ্বের পরাক্রমশালী সমস্ত শক্তিই গোপনে কমবেশি এই ধরনের গবেষণা চালিয়েছে। অভিযোগ শোনা যায় যে, উত্তর কোরিয়ার নাকি রয়েছে ‘সাইবর্গ’ ডলফিন বাহিনি। তারা বিপক্ষের নৌবাহিনিকে আক্রমণ করতে সক্ষম। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন ভারতীয় সেনাবাহিনির এই নতুন পরিকল্পনা। কেন ইঁদুর? ইঁদুর একদিকে যেমন অতি সহজেই যে-কোনও জায়গায় পৌঁছে যেতে পারবে, তেমনই তাদের দেখে সন্দেহও জাগবে না বিপক্ষের মনে। সবচেয়ে বড় কথা, ইঁদুর তো চোখে পড়াই কঠিন হবে। তাড়াতাড়িই এই পরিকল্পনা রূপায়িত করা হবে বলে জানা গেছে। Defence Research and Development Organisation (DRDO)-র বিজ্ঞানীরা এই কাজ করছেন জোরকদমে। তবে, এই নিয়ে বিতর্কও কম হচ্ছে না। প্রাণীসুরক্ষা-সংগঠনগুলি সরব হচ্ছে। এই প্রকল্প শেষমেশ বাস্তবায়িত হতে পারে কিনা, এখন সেটাই দেখার।
......................