'সাইবর্গ' বানানোর সহজ উপায় : আসতে চলেছে 'শরীরবান্ধব' পলিমার?
সাইবর্গ। মানে আধা মানুষ, আধা রোবট। কল্পবিজ্ঞানের গল্প থেকে এরা বাস্তবের মাটিতে নেমে এসেছে অনেকদিনই। টারমিনেটরের মতো বিপুল জনপ্রিয় ছবির সিরিজ হয়েছে এদের নিয়েই। মানব-রোবট নিয়ে নিত্যনতুন গবেষণার শেষ নেই। সে কাজই কয়েক মাইল এগিয়ে গেল সাম্প্রতিক একটি উদ্ভাবনের ফলে। অন্তত তেমনই দাবি করছেন ডেলাওয়ার ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক।
মানবদেহের বিভিন্ন অংশে মাইক্রোচিপ প্রতিস্থাপন থেকে শুরু করে প্রস্থেটিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ইত্যাদি নানা পদ্ধতি নিয়ে বিজ্ঞানীরা বিগত কয়েক দশক ধরে বিস্তর পরীক্ষানিরীক্ষা চালাচ্ছেন। তবে এ কাজে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, এই ধরনের ইলেকট্রনিক বা সেন্সরজাতীয় জিনিস ব্যবহার করলে মানবদেহে তার নানা ক্ষতিকর প্রভাব পড়বেই। দেহে প্রতিস্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই এই যন্ত্র বা সেন্সরগুলি চারপাশের কোশ ও কলায় ক্ষত সৃষ্টি করতে থাকে। ফলে বিভিন্ন ধরনের ছোট-বড় প্রদাহ থেকে শুরু করে ক্যান্সারজাতীয় রোগের ঝুঁকিও থাকে। ডেলাওয়ার ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা এবার এই সমস্যার সমাধানে ব্যবহার করতে চলেছেন PEDOT (রাসায়নিক নাম PSS বা Poly Polystyrene Sulfonate) নামে এক ধরনের মিশ্র পলিমার।
দেহে প্রতিস্থাপনের আগে চিপ বা যন্ত্রের চারদিকে এই পদার্থের একটি আবরণ তৈরি করার কথা ভাবছেন তাঁরা। আবরণহীন চিপ বা যন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি সুরক্ষা দিতে পারবে এই PEDOT-আবরণী। গবেষক ডেভিড মার্টিনের কথায়, এই আবরণ থাকলে যন্ত্রের সিগনাল আদানপ্রদান ও ব্যাটারি-জীবনেরও কোনও তফাৎ হবে না। PEDOT-আবরণীর সাহায্যে সম্পূর্ণ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-চালিত মস্তিষ্কের সাইবর্গ তৈরি করা যাবে বলে গবেষকরা আশাবাদী। এই পদার্থে জৈব অণু যোগ করে স্বাস্থ্য পরিষেবাতেও কাজে লাগানো যেতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। এই বিষয়ে কোনও পূর্ণাঙ্গ গবেষণাপত্র প্রকাশ না করলেও আমেরিকান কেমিকাল সোসাইটির একটি অনলাইন মিটিং ও প্রদর্শনীতে গবেষকরা বিষয়টি উপস্থাপিত করেছেন। এখন জোরকদমে চলছে হাকতেকলমে গবেষণার প্রস্তুতি।
..................
ঋণ : freethink.com
ছবি : bbc.com