শহর সিরিজ
কথামুখ
আমার যা মুদ্রাদোষ কেবল তুমিই দেখেছিলে
দেখেছিলে কলুটোলা, ইষ্টিকুটুমরঙা গলি
তুমুল ভাদর দিনে বর্ষাতি কীরূপে হারায়
জেনেছিলে কালচক্রে কত পৃষ্ঠাজুড়ে কোন দাগ
রচনাবলির ভাঁজে পড়ে আছে। ঘুমোতে পারেনি।
অর্বাচীন মেট্রো আর সুপ্রাচীন ট্রামের সরণী,
তোমরা তো জেনেছিলে জন্মজড়ুলের মত স্থির
ক-পোঁচ চায়ের রঙে ঝাঁঝালো তর্কটি নতমুখী
দেবীপক্ষে কোন সুখ ঝেঁপে আসে উৎসবপ্রহর
লবণহ্রদের মত ঘোলাটে বিস্তারকামী তুমি
দেখোনি কি কোন চোখে নোনাজল অধিক গড়ায়?
অথবা সে সুতানুটি পুরনো বইয়ের গন্ধলীন
মুছে যায় যারা তারা কোনোদিন ঠিকানা রাখে না।
আমার এ মুদ্রাদোষ তুমিই জেনেছ অযথা
এবং কী অহেতুক এই তীক্ষ্ণ এই শিলাপাত
প্রতিটি বায়ুর কণা নরমাংসভোজনের স্বাদে
লিপ্ত হলে পরবাস এ শহর তোমাকে মানায়!
১.
যে কারণে ফিচার লিখি না
কফিশপস্পৃষ্ট এই শপিংমলের কলিকাতা
দৃঢ়নিশ্চয়ের মত উজ্জ্বল মুখভঙ্গিমা তার
যেভাবে নিজেকে ঢাকে ম্লানমুখ বাতিল কলোনি
গদ্যে বাস্তুহীন। নকশিসম্ভব আর একা।
২.
তবে এ ঘৃণাই নাও।
চাঁদের ক্ষয়াটে উল্টোপিঠ কখনো দেখেনি কেউ অনবধানের বশে দেখে ফেললে তবু, অথবা পড়িলে মনে প্রত্নকুসুমের কোনও কথা, শহরের নামটুকু নিঃশেষে ভুলে গেছি বলে আপাদমস্তক মুড়ে চাদর জড়িয়ে নেব ফের, নিশ্চিত ধরেই নেব মফস্বলগামী কোনও ট্রেন
উৎসমূল শব্দের পিছুডাক অভিধানে নেই।
আরও পড়ুন
কলকাতার আড্ডা – চাঁদের দেশের গল্পসল্প
৩.
এই ঘিঞ্জি বৃন্দগাথা।
বড় বেশি বাকপটু তোমাদের দমবন্ধ পাড়া।
নতুন বল্কল পেলে অন্য কোনও শহরে ঠিক জন্ম নেব
কলকাতা ছাড়া।
৪.
আসিতে বিলম্ব হল।
তোমার বাগানে ঢের জ্যাম ধুলোজট।
এবং পাঁজর নিংড়ে শুষ্ক করে দিতে পারো অরণ্যপ্রপাত
একথাও জেনেছি তবে ভাগ্যদোষে কিঞ্চিৎ দেরিতে
শীতল মুদ্রা পায় মালিনী এত কাদামাটি সেঁচে!
"তবু কি বৃক্ষের কাছে ফেরা কেউ বন্ধক রেখেছে?"
[অলংকরণ - অভীক।]
#কলকাতা #কবিতা #সৃজিতা সান্যাল