একটি পুজোর গোড়ার কথা
দাঙ্গা তখন সবে থেমেছে। কোন দাঙ্গা ? পরবর্তীতে যার উল্লেখে সংবাদপত্রে লেখা হয়েছিল ‘গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং’। ক্ষয়-ক্ষতি-আতঙ্কের নিরিখে পূর্বের সমস্ত রায়ট যার কাছে তুচ্ছ মনে হয়েছিল। সাল ১৯৪৬। মানবতার ইতিহাসে অন্যতম কলঙ্কিত দিন ১৪ই আগস্ট।
হিংসার ইন্ধনে কলকাতার মানচিত্র আলাদা হয়েছে ধর্মের কাঁটাতারে। অঞ্চল-নাম হারিয়ে শহরে তখন শুধুই হিন্দু মহল্লা, মুসলিম মহল্লা।
সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি তখনও নিয়মিত ঘটনা। সেই সময় মেঘনাদ সাহা, যদুনাথ সরকার, শরৎ বসু, লীলা রায় প্রমুখের উদ্যোগে ২১শে আগস্ট তৈরি হল Social Welfare Organization। বিক্ষুব্ধ অঞ্চলে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো, আর্ত উদ্ধারের পাশাপাশি, মানবতার উপর যেটুকু বিশ্বাস তখনও টিমটিম করে জ্বলছে, সেই সলতেটিকে আরও একটু উস্কে দিয়ে সৌভ্রাতৃত্বের আদর্শ ফিরিয়ে আনাই ছিল উদ্দেশ্য।
সেই মতো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা স্থির করার জন্য সদস্যরা একত্র হলেন। লীলা রায়ের পরামর্শে সংগঠনের নাম বদলে গেছে বাংলায়। সবাই বুঝতে পারছেন দ্রুতই কিছু একটা করা দরকার, কিন্তু কী করা যায়! বুদ্ধি দিলেন ড. মেঘনাদ সাহা। দুমাসের মধ্যেই বাঙালির মহা-উৎসব। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তার আয়োজনের মধ্যে দিয়েই যদি প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া যায়। ক্ষতি কী?
৭০ বছর পেরিয়ে আসা দক্ষিণ কলকাতার ‘সমাজসেবী সংঘ’-র পুজো শুরু হয়েছিল এভাবেই।
******************************************
তথ্য সূত্র: কলকাতার দুর্গাপুজোর গল্পসল্প - সম্রাট চট্টোপাধ্যায়
******************************************
অলংকরণ: বিদিশা বিশ্বাস
চিত্র সম্পাদনা: অর্পণ দাস
******************************************
#দুর্গাপুজো #কলকাতা #সমাজসেবী সংঘ #দাঙ্গা #মেঘনাদ সাহা #যদুনাথ সরকার #ঐক্যের পুজো #ফিচার #শৌভিক মুখোপাধ্যায় #সিলি পয়েন্ট #বাংলা পোর্টাল #ওয়েবজিন #web portal