এক ফুঁয়ে রোগ ধরবে 'পাইরোব্রেথ' : নতুন দিশা দেখাবে বাঙালির আবিষ্কার?
করতে হবে না এন্ডোস্কপি। এমনকী প্রয়োজন নেই বায়োপসিরও। বাঙালি বিজ্ঞানী ডঃ মানিক প্রধানের অভিনব উদ্ভাবন 'পাইরোব্রেথ' মাত্র একটা ফুঁ বিশ্লেষণ করেই ধরে ফেলবে পেটের জটিল ব্যামো। মানুষের ফুঁ বিশ্লেষণ করেই নাকি ধরা পড়ে যাবে পেপটিক আলসার, গ্যাস্ট্রিকের মতো রোগ, এমনকি পাকস্থলির ক্যান্সারও। এই নতুন যন্ত্র এক ধাক্কায় যেমন রোগ-নির্ণয়ের খরচ কমাবে, তেমনই দেখাবে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করার পথ। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়ে হইচই ফেলে দিয়েছে মানিকবাবু ও তাঁর নেতৃত্বাধীন দলের আবিষ্কার 'পাইরোব্রেথ'।
হাওড়ার আমতার বাসিন্দা মানিকবাবু উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, খড়গপুর আইআইটি ও ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে তিনি কলকাতার ‘সত্যেন্দ্রনাথ বোস ন্যাশনাল সেন্ট্রার ফর বেসিক সায়েন্সেস’-এ কর্মরত। 'পাইরোব্রেথ'-এর জন্য তাঁর দলে কাজ করেছেন অভিজিৎ মাইতি, অনিল মাহাত, সায়নী ভট্টচার্য ও সুজিত চৌধুরী। পাঁচ বছর ধরে প্রায় ১,২০০ মানুষের ফুঁ দেওয়ার ধরন বিশ্লেষণ করেছেন তাঁরা। কীভাবে কাজ করবে এই যন্ত্র? মানিকবাবুর কথায়, "১০-১২ ঘণ্টা না খেয়ে পাইরোব্রেথ যন্ত্রে দিতে হবে ফুঁ। কোন মানুষ কী ধরনের ফুঁ দিচ্ছেন, তার ধরণ বিশ্লেষণ করে বোঝা যাবে কার কী সমস্যা? অথবা আদৌ কোনও সমস্যা আছে কিনা।" আন্তর্জাতিক গবেষণা পত্রিকা ‘ইউরোপিয়ান জার্নাল অব মাস স্পেকট্রোমেট্রি’তে পাইরোব্রেথ যন্ত্রের সাফল্যের কথা লিখেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে এই যন্ত্রের পেটেন্টের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন মানিকবাবুরা। এ-বছরই তাঁরা পেটেন্ট পেয়েছেন। ফলে সব ঠিক থাকলে খুব তাড়াতাড়িই যন্ত্রটি বাজারে আসতে চলেছে। অবশ্য এখনও কোনও কোনও মহলে এই যন্ত্রের সাফল্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিপুল মাত্রায় ব্যবহৃত হলে তবেই হয়তো আসল পরীক্ষা হবে 'পাইরোব্রেথ'-এর। এই যন্ত্র সফল হলে ভারতের মতো গরীব দেশে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে একটি বিরাট বিপ্লব ঘটে যাবে, তাতে সন্দেহ নেই।
..................
তথ্যসূত্র : বর্তমান, bbc news