ফিচার

'ডাট' থেকে 'ডাটন' : মধুসূদনের সন্ততিদের পদবী বদলের বৃত্তান্ত

টিম সিলি পয়েন্ট Jan 25, 2024 at 8:43 pm ফিচার

দুটি বিয়ে। দুই পত্নী রেবেকা ও হেনরিয়েটা। তার ফলশ্রুতিতে মাদ্রাজ ও কলকাতায় দুটি পরিবার রেখে গিয়েছিলেন মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তবে এই দুই পক্ষেই কিন্তু মাত্র দু-এক প্রজন্মের মধ্যে কবির পদবী লোপ পেয়েছিল। কবির জীবনীকারদের এমনই মত।

কলকাতায় দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী হেনরিয়েটা কবির শেষ জীবনের ভরসার স্থল ছিলেন। তাঁদের প্রথম সন্তান শর্মিষ্ঠা অকালমৃত্যুর মুখে পড়েছিলেন। দ্বিতীয় সন্তান আলবার্ট নেপোলিয়ন বেয়াল্লিশ বছর বয়সে মারা যাবার আগে শেষদিন পর্যন্ত 'Dutt' পদবী ব্যবহার করলেও তাঁর সন্তানেরা 'Dutton' পদবী লিখেছেন। আলবার্টের মেয়ে ক্যাথরিনের বিয়ের সময়ের নথিতে এই পরিবর্তিত পদবীই পাওয়া যায়। ১৮৮৮ সালে যখন মধুসূদনের সমাধি তৈরি হয়, তাতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন চার্লস নেভিল ডাটন।  

অন্যদিকে মাদ্রাজে রেবেকা সহ তিন সন্তানকে দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে ত্যাগ করে এসেছিলেন মধুসূদন। তাঁরা কবির পদবী ত্যাগ করেছিলেন আরও আগে। এই পক্ষের প্রথম কন্যা বার্থা অকালে মারা যান। ফিবি দুঃখের জীবন কাটিয়েছিলেন। তৃতীয় সন্তান তথা পুত্রসন্তান জর্জ নিজে দুটি বিয়ের সময় পিতৃপদবী ব্যবহার করেছিলেন, তবে তাঁর প্রথম সন্তান জন্মানোর সময় নথিতে বংশনামের জায়গায় 'Dutton' ব্যবহার করতে দেখা যায়। বংশনাম একটি পুরুষতান্ত্রিক প্রথা। তবে মধুসূদনের পরবর্তী দুই প্রজন্মের মধ্যে তাঁর বংশ থেকে তাঁর নিজের পদবী লুপ্ত হওয়া অবশ্যই অন্যতর এক তাৎপর্য বহন করে আনে। কবির প্রথম পক্ষের বংশধারা কবিকে স্বভাবতই দ্রুত ভুলতে চেয়েছিল। কিন্তু কলকাতার দ্বিতীয় পক্ষও খুব বেশিদিন কবির বংশনাম রাখেননি।  কবির স্মৃতি নিজেদের নামের মধ্যে রক্ষা করতে খুব সচেষ্ট হননি কোনও পক্ষই। এই ঘটনা মধুসূদনের অপরিণামদর্শী, বিধস্থ ব্যক্তিজীবনের দিকেই হয়তো আঙুল তোলে। 

.................. 

ঋণ : আশার ছলনে ভুলি, গোলাম মুরশিদ 

#

Leave a comment

All fields are required. Comment will appear after it is approved.

trending posts

newsletter

Connect With Us

today's visitors

12

Unique Visitors

217289