লিওকে এক বার্সেলোনা সমর্থকের চিঠি
........................
প্রিয় লিও,
এই দিনটা দেখার জন্য একেবারেই তৈরি ছিলাম না। সবই তো ঠিকঠাক চলছিল, শুনেছিলাম আজ তুমি বার্সেলোনার সঙ্গে পাঁচ বছরের নতুন চুক্তি করবে। জানি, ক্লাবের আর্থিক অবস্থা ভালো না, জানি ক্লাবের পক্ষে তোমার স্যালারির ব্যয় বহন করা এখন সম্ভব না। কিন্তু ভেবেছিলাম কিছু একটা সুরাহা বেরোবে। তার বদলে কী পেলাম? বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাবের ওয়েবসাইটে ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পেশাদারি ভঙ্গিতে লেখা তোমার সঙ্গে ক্লাবের বিচ্ছেদের খবর। না এবার আর গুজব নয়। ক্লাবের আর্থিক দুরবস্থা আর স্প্যানিশ ফুটবল কর্তৃপক্ষের আর্থিক স্বচ্ছতার নিয়মকে উদ্ধৃত করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দুই পক্ষের সম্মতিতে যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শেষ যখন চেক করলাম তখনও তোমার তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। কোনো অলৌকিক কিছু ঘটা কি সম্ভব? কিন্তু বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাষায় আমাদের অলৌকিকের আশায় বুক বাঁধতে না করে দিয়েছেন। অতএব ২০ বছরের সম্পর্ক পিছনে ফেলে তুমি চললে এক অজানার উদ্দেশ্যে। পড়ে রইল স্বপ্নের ন্যু ক্যাম্প স্টেডিয়াম, লাল-নীল জার্সি আর আমার মতো কোটি কোটি বার্সেলোনা সমর্থকের বুক ভাঙার নৈঃশব্দ।
বিশ্বাস করো গত একটা বছর একেবারে ভালো যায়নি। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে করোনার চোখরাঙানির সঙ্গে যখন আমার দেশ ধুঁকছে তখন খবর পেলাম তুমি ব্যুরোফ্যাক্সের মেইল করে জানিয়ে দিয়েছ ক্লাবে থাকতে চাও না। কারণটা আমাদের অজানা ছিল না। গোটা ফুটবল বিশ্ব জানে তোমার সঙ্গে তৎকালীন বার্সেলোনা প্রেসিডেন্ট জোসেপ বার্তেমেউ-র সম্পর্ক একেবারেই ভালো না। আমার মতো অধিকাংশ কুলার্স মানে বার্সেলোনা সমর্থকই মেনে নেয় যে বার্তেমেউ-র পরিচালন দক্ষতার অভাব আর খামখেয়ালিপনার জন্যই ক্লাব ধুঁকছে।
জানতাম এ বছর ক্লাবের নির্বাচনে বার্তোমেউ হেরে যাবেই। আশানুরূপ ভাবেই প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলেন পুরনো মুখ জন লাপোর্তা। যে লাপোর্তার পরিচালনায় ২০০৩-২০১০ বার্সেলোনা সাফল্যের শিখরে উঠেছিল। আমরা আশায় বুক বাঁধলাম, তোমার সঙ্গে সুসম্পর্ককে ব্যবহার করে হয়তো তিনি যাবতীয় জটিলতা দূর করে দেবেন। কিন্তু ভুলে গেছিলাম গত এক বছরে ফুটবল বিশ্বে অনেক হিসাব-নিকাশ বদলে গেছে। কোভিড পরবর্তী সময়ে আর্থিক সঙ্গতি বজায় রাখতে অনেক ক্লাবকেই মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে। তার মধ্যে এ বছরের এপ্রিলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাবের কর্তা ফ্লোরেন্টিনো পেরেজের নেতৃত্বে কুড়িটা ক্লাব ‘ইউরোপিয়ান ফুটবল লিগ’-এর প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল। বার্সেলোনাও তার মধ্যে ছিল। তাঁদের যুক্তি ছিল এই নতুন লিগ ক্লাবগুলির আর্থিক অবস্থাকে শক্তিশালী করে ফুটবলকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। প্রস্তাবটা আমার একেবারেই পছন্দ হয়নি। টাকা দিয়ে ফুটবলকে ওইভাবে কিনে নেওয়া যায় নাকি? একবার শুধু ভাবো, কথাটা কে বলছে! বিশ্বফুটবলের মূল কক্ষ থেকে বহুদূরে থাকা এক দেশের এক সাধারণ বার্সেলোনা সমর্থক। যে দেশের ফুটবল লিগের নাম আইএসএল; যার নিয়মও অনেকটা ‘ইউরোপিয়ান ফুটবল লিগ’-এর মতো। সে যাই হোক, ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ‘উয়েফা’-র আপত্তি ও সমর্থকদের বিক্ষোভে যখন সেই পরিকল্পনায় ভেস্তে গেল তখনই বুঝলাম বার্সেলোনার অর্থনৈতিক অবস্থার কোনো সুরাহা হবে না।
এতো সমস্যার মধ্যেও তুমি আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে গেছ। খুব খুশি হয়েছিলাম তোমার কোলে কোপা আমেরিকা ট্রফিটা দেখে। তোমার আন্তর্জাতিক ট্রফির অপূর্ণ স্বপ্নটাও অবশেষে পূরণ হয়ে গেল। আমি আর্জেন্টিনার সমর্থক কিনা বড়ো কথা নয়, আমি চেয়েছিলাম তোমাকে খুশি দেখতে। ভেবেছিলাম এবার নিশ্চয়ই তুমি অনেক চাপমুক্ত হয়ে ছোটবেলার ক্লাবের সঙ্গ দেবে। কানাঘুষো শুনলাম ক্লাবের পরিস্থিতি মাথায় রেখে তুমি নাকি অর্ধেক মাইনেতে খেলতে রাজি হয়েছ। নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। জুন মাসে পুরনো চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পর এখন শুধু নতুন চুক্তির অপেক্ষা। তারপর কী হলো? ৫ আগস্ট, ২০২১। ক্লাবের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানিয়ে দেওয়া হলো তোমার সঙ্গে ক্লাবের ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’-এর কথা। ৬ তারিখ প্রেসিডেন্ট লাপোর্তা সাংবাদিক সম্মেলন করে পুরো কারণ ব্যাখ্যা করলেন, চুক্তির যাবতীয় খুঁটিনাটি তুলে তাঁর অসহায়তার কথা জানালেন।
আমরা তো এসব শুনতে চাইনি। আমরা তোমাকে ফিরে পেতে চেয়েছিলাম। আমরা জানতাম তুমি আর বার্সেলোনা অবিচ্ছেদ্য। বিবাদ তো পরিবারে হয়ই, তা বলে কি কেউ বাড়ি ছেড়ে চলে যায় নাকি? হ্যাঁ, বিচ্ছেদ একদিন অবশ্যই হবে, যেদিন তুমি অবসর নিয়ে তোমার বুটজোড়া তুলে রাখবে। সেদিন ৯০ হাজার দর্শকের ন্যু ক্যাম্প সেজে উঠবে সেই মহাপ্রস্থানের জন্য। এই পোড়া দেশে দাঁড়িয়েও মনে হবে চোখের সামনে পুরোটা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু তার বদলে পেলাম অনেক বিধিনিষেধ, আইনি জটিলতা, টাকার হিসাব-নিকাশের মধ্যে দিয়ে এক নিরুত্তাপ-নিস্তরঙ্গ বিচ্ছেদ। এই সামাজিক দূরত্বের পৃথিবীতে তুমি তোমার রাজপ্রাসাদ ছেড়ে চলে যাচ্ছ বিদেশ-বিভুঁইয়ে।
আজ থেকে তো তোমার সঙ্গে সম্পর্ক না। সেই ২০০৫-০৬ সাল থেকে। তখন আমি রোনাল্ডিনহোর ভক্ত। তাই বার্সেলোনাকে ভালো লাগে। এদেশে তখনও লা লিগা অতো জনপ্রিয় হয়নি। টুকটাক খোঁজখবর রাখা ওই আর কি! তখন একজন বলল, একটা নতুন ছেলে উঠেছে, যা কাটায় না! তারপর দেখলাম তোমার খেলা। তখনও জানতাম না তোমার ‘গ্রোথ হরমোন’-এর সমস্যা ছিল। জানতাম না আর্জেন্টিনার নিউ ওয়েল বয়েজ ক্লাবের ১৩ বছর বয়সী ‘বিস্ময় প্রতিভা’-র চুক্তিপত্র সাক্ষরিত হয়েছিল একটা টয়লেট পেপারে! বার্সেলোনার জার্সি গায়ে তোমার প্রথম ম্যাচ আমি দেখিনি। সেই ১৬ অক্টোবর, ২০০৪ সালে প্রথমবার লা লিগায় এসপ্যানিওলের বিরুদ্ধে ম্যাচের ৮২ মিনিটে পরিবর্ত হিসাবে ৩০ নম্বর জার্সি পরে তুমি যেদিন মাঠে নামলে, সেদিনের কথা বলছি।
শুনেছি বার্সেলোনার সময়টা তার আগে পর্যন্ত ভালো যাচ্ছিল না। টানা ছয় বছর লা লিগা ট্রফি জিততে পারেনি দল, কোনো রকমে চারে বা ছয়ে শেষ করছে। ইউরোপীয়ান প্রতিযোগিতাতেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য নেই। চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদে তখন চাঁদের হাট। রোনাল্ডো (ফেনোমেনো), জিদান, বেকহ্যাম, ফিগো, রবার্তো কার্লোস, রাউল কে নেই! ভূতপূর্ব রিয়াল মাদ্রিদ ও স্পেনের আন্তর্জাতিক দলের কোচ দেল বস্কি সে সময়ে মজা করে বলতেন যে, তাঁর আমলে বার্সেলোনা শুধু ক্লাবের জন্মদিনই উদ্যাপন করার সুযোগ পেত। আর বার্সেলোনা মানে তো শুধু একটা ফুটবল ক্লাব নয়, আপামর কাতালুনিয়াবাসীর স্বাতন্ত্র্যের সংগ্রামের প্রতীক সে। এসব আবেগ বোঝা আমার পক্ষে সম্ভব না। তবে শুনে ভালো লেগেছিল বার্সেলোনা ‘mes que un club’ অর্থাৎ ‘মোর দ্যান এ ক্লাব’। জোহান ক্রুয়েফের আমল থেকেই যে বাণী বার্সেলোনার দেওয়ালে খোদাই করে দেওয়া হয়েছিল।
২০০৩ সালে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন আজকের লাপোর্তা। পরের মরশুমেই রোনাল্ডিনহো নামের এক সদা হাস্যমুখ জাদুকর বার্সেলোনার স্বর্ণযুগের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করল। তারপর দেখলাম হাজারো নামী মুখের ভীড়েও ছোটখাটো একটা মানুষ হয়ে উঠলেন সকলের থেকে সেরা, ক্রমে সর্বকালের ‘অন্যতম’ সেরা। জাভি, ইনিয়েস্তা, বুস্কেটস, দানি আলভেস, পুওল প্রত্যেকেই আমার প্রিয় বার্সেলোনা প্লেয়ার। তাঁদের প্রতি পূর্ণ সম্মান দিয়েও বলা যায় তুমিই হয়ে উঠলে বার্সেলোনার নিউক্লিয়াস। তার সঙ্গে ছিলেন আমাদের কোচ গুয়ার্দিওলা। তিকিতাকা থেকে ফলস নাইন—নিত্যনতুন ফুটবলীয় পরিকল্পনা এবং তার সূচারু প্রয়োগে ক্লাবঘর সাফল্যে ভরে উঠল। এরপর সেই ফুটবল যজ্ঞে ঢুকে পড়ল নেমার-সুয়ারেজরাও। অদ্ভুত মুগ্ধতায় দেখতাম তোমার রাইট উইং থেকে কাট করে ঢুকে বাঁকানো শটের গোল, কিংবা সোলো রানে সাত জনকে কাটিয়ে করা গোল, কিংবা সেকেন্ড পোস্টের কোণা দিয়ে গোঁত খেয়ে ঢুকে যাওয়া ফ্রি-কিক। শুধু গোল তো নয়, তার সঙ্গে রয়েছে অমানবিক দূরদৃষ্টিতে তিন-চার জন ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে গোলের জন্য সাজিয়ে দেওয়া অসংখ্য অ্যাসিস্ট। সমর্থক বা প্রতিপক্ষের কাছে প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে গেল তোমার কোমরের দোলায় তিনজনকে ছিটকে দেওয়ার মুভ, কিংবা ডিফেন্ডারের পায়ের ফাঁকা দিয়ে বল গলিয়ে নাটমেগ করে এগিয়ে যাওয়া। কিংবদন্তী হয়ে গেল প্রতিটি গোলের পর আকাশের দিকে দু হাত তুলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়া সেলিব্রেশন।
ঈশ্বরও তোমায় ফেরাননি। সব থেকে বেশি ব্যালন ডি-ওর আর গোল্ডেন বুট বিজেতা তুমি। আমি ওরকম সমর্থক নেই যে তোমার সঙ্গে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর তুলনা টেনে এনে অন্যকে ছোটো করব। কারোর কাছে তুমি শ্রেষ্ঠ, কারোর কাছে ক্রিশ্চিয়ানো। তোমরা দুজনেই ফুটবলকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ উচ্চতায় নিয়ে গেছ। আমি দেখেছি তোমরা থাকাকালীন এল ক্লাসিকোর দ্বৈরথ। দেখেছি ব্যালন ডি ওর-এর মঞ্চে তোমাদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। তবে অনেকেই বলে একার কাঁধে ক্লাবকে টানার ক্ষমতা নাকি তোমার নেই। আগে তর্ক করতাম, এখন আর করি না। এই বিতর্কের কোনো মূল্য নেই। চোখের সামনে দেখলাম জাভি, ইনিয়েস্তা, দানি আলভেস, নেমার চলে গেল—একে একে নিভিছে দেউটি। শুধু তুমি রয়ে গেলে। পিকে, বুস্কেটসরাও অবশ্য রইল। কিন্তু কোটি কোটি টাকা খরচ করেও বাকি শূন্যস্থানগুলি পূরণ হলো না। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে লাগল নকল বুঁদিগড়। আমাদের অসহায়তা, হেটার্সদের ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ আর ক্লাব কর্তৃপক্ষের দিশাহীনতার সামনে মাত্র কয়েকজন বিশ্বস্ত সেনানী নিয়ে তুমি দাঁড়িয়ে রইলে। সেই দৃষ্টিনন্দন ফুটবল নেই, তবুও যতক্ষণ তুমি মাঠে আছো ততক্ষণ অলৌকিকের আশা করি। আজও করি। যদি তুমি ফিরে আসো। কিন্তু জানি আমার মতো অগুণিত বার্সেলোনা সমর্থকের মতো রোজারিও-র সেই ছোট বাচ্চাটির কুড়ি বছর পার করে আসা জীবনে আজ শুধুই রাত, শীত আর শিশিরের জল।
আরও পড়ুন : এক হৃদয়ের দুই অলিন্দ : তিলোত্তমা ও ইস্ট-মোহন দ্বন্দ্ব / অলর্ক বড়াল
অনেকে দেখি প্রশ্ন তুলছেন দায় কার? বর্তমান প্রেসিডেন্টের সদিচ্ছার অভাব, আগের প্রেসিডেন্টের ব্যর্থতা নাকি তোমার অর্থলোলুপতা? জানি না, জানার ইচ্ছাও নেই। উঠছে ফুটবল সংক্রান্ত প্রশ্নও। তোমার পরবর্তী গন্তব্য কি ফ্রান্সের ধনকুবের ক্লাব পিএসজি? সেখানে কি তুমি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে পারবে? আমি শুধু জানতে চাই, তুমি কি তাহলে খুশি হবে? আরেকজন আমাকে প্রশ্ন করল, আমার মতো ‘মেসির ভক্তরা’ কি আদৌ বার্সেলোনাকে সমর্থন করবে এরপর? হ্যাঁ করব। লাপোর্তার যুক্তির সঙ্গে আমি একশ শতাংশ সহমত, আমি বিশ্বাস করি, “দিনের শেষে প্রেসিডেন্ট, সমর্থক সবকিছুর উপরে এফ সি বার্সেলোনা, দ্য ক্লাব। এমনকি পৃথিবীর সর্বকালের সেরা ফুটবলারের চেয়েও উপরে।” যে দেশে অর্থের অভাবে গত দু দশকে অসংখ্য সফল ক্লাব উঠে গেছে, অসংখ্য আকাদেমি বন্ধ হয়ে গেছে, সে দেশে দাঁড়িয়ে আমি mes que un club-এর বক্তব্যে বিশ্বাস করি। কিন্তু কী লাভ? এসব এখন মিথ্যে! সত্যি এটাই যে, জীবনের মতো ময়দানেও কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। এখন শুধুই তোমার স্মৃতির স্পর্শ। যেমন আমাদের সুমন গেয়েছেন, “সে চলে গিয়েছে, তবুও যায়নি, যেমন যায় না আসলে কেউ”। অবিশ্বাস্য জেনেও আজ ভগ্নহৃদয়ে ঈশ্বরের কাছে আবেদন জানিয়ে চলেছি, তুমি আরেকবার ফিরে এসে প্রথমদিনের মতো আবার সব পুড়িয়ে ছাই করে দাও। পরক্ষণেই জানি এটা সত্যি নয়। সত্যি এটাই যে চার-পাঁচটা প্লেয়ারকে অনায়াসে কাটিয়ে বাঁ পায়ের বাঁক খাওয়ানো শটে গোলে বল জড়িয়ে দেওয়ার পর দশ নম্বর জার্সিধারী প্লেয়ারটি ন্যু ক্যাম্পের মাঠে দু হাত তুলে ঈশ্বরকে স্মরণ করবে না। ভালো থেকো, আমরাও ভালো থাকব। গ্র্যাসিয়াস, আদিওস।
...........................