লিঙ্গসাম্যের হিসেবে বিশ্বে ১৪০ তম স্থানে ভারত : কেন? কীভাবে?
ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের সমীক্ষায় ২০২১ সালের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট অনুযায়ী লিঙ্গসাম্যের নিরিখে ভারতের অবস্থান বিশ্বে ১৪০। তালিকায় মোট ১৫৬ টি দেশের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। অর্থাৎ ১৫৬-র মধ্যে ভারত ১৪০ তম। একেবারে ‘ফেলু বয়’ বলা যায়। অবশ্য লিঙ্গবৈষম্য বা লিঙ্গহিংসার এমন সব নমুনা আমরা চারপাশে রোজ দেখি যে ভারতের এমন ফলাফল আমাদের বিশেষ অবাক করে না। গত বছর এই তালিকায় ভারতের অবস্থান ছিল ১১২। এ বছর আরও ২৮ ধাপ পিছিয়ে গিয়েছে আমাদের দেশ।
এই সমীক্ষায় মূলত তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ এবং শিক্ষাক্ষেত্রে মহিলাদের সুযোগ। তিনটি ক্ষেত্রেই ভারতের অবস্থান বেশ পিছনের দিকে। ২০১৯ সালে ভারতে মন্ত্রীসভায় মহিলাদের অনুপাত ছিল ২৩.১ শতাংশ, ২০২১ এর গোড়ায় সেটা কমে দাঁড়িয়েছে ৯.১ শতাংশে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ ও সুযোগপ্রাপ্তির বিচারে পুরুষদের থেকে মহিলারা ৩২.৬ শতাংশ হিসেবে পিছিয়ে আছেন। উচ্চপদে মহিলাকর্মীদের অবস্থিতি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৪.৬ শতাংশে। ভারতে সামগ্রিকভাবে মহিলাদের আনুমানিক আয় পুরুষদের এক-পঞ্চমাংশ। এই বিশেষ মানদণ্ডে ভারত লিঙ্গসাম্যের তালিকায় সারা পৃথিবীতে শেষ দশটি দেশের মধ্যে একটি।
আরও পড়ুন : লিঙ্গবৈষম্যের মোকাবিলায় পুরুষদের সংগঠন : দশ বছরে পা দিল উত্তরপ্রদেশের MASVAW
তালিকার অন্যান্য দেশের দিকে তাকানো যাক। গত ৯ বছর ধরে এই তালিকায় প্রথম স্থানটি দখল করে রেখেছে আইসল্যান্ড। দুইয়ে ফিনল্যান্ড, তিনে নরওয়ে, চারে নিউজিল্যান্ড, পাঁচে সুইডেন, ছয়ে নামিবিয়া, সাতে রোয়ান্দা, আটে লিথুয়ানিয়া, নয়ে আয়ারল্যান্ড দশে সুইজারল্যান্ড। আর সবার শেষে রয়েছে আফগানিস্তান। ১৫৬ তম স্থানে। উপমহাদেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া লিঙ্গসাম্যের নিরিখে তৃতীয়। দক্ষিণ এশিয়ায় এ বিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে ভারতের থেকে। সারা বিশ্বে ৬৫ তম স্থান দখল করেছে তারা। এমনকী ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিলি.দ্বীপ, ভুটানও। তবে ভাজপা সরকারের কৃতিত্বের একটা জায়গা রয়েছে। এই তালিকায় পাকিস্তান রয়েছে ভারতের পিছনে, ১৫৩ নম্বর স্থানে।
….…………………..
তথ্যসূত্র : https://www.weforum.org/reports/global-gender-gap-report-2021