পরিবেশ ও প্রাণচক্র

নতুন গাছের নামে জুড়লেন ডিক্যাপ্রিও : পরিবেশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টাকে অভিনব কুর্নিশ

টিম সিলি পয়েন্ট Jan 18, 2022 at 11:34 am পরিবেশ ও প্রাণচক্র

ছোট্ট একটা দেশ ক্যামেরুন। তারই খানিক অংশ জুড়ে সযত্নে লালিত বনভূমি ‘এবো’। সেই এবোর জঙ্গলেই তরতর করে বেড়ে উঠছেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও।

ইয়ার্কি নয়, সত্যি! তবে ইনি সেই বিশ শতকের অবিসংবাদী হার্টথ্রব নন, বরং তাঁর নামাঙ্কিত একটি চিরহরিৎ উদ্ভিদ। সম্প্রতি এবোর জঙ্গলে খোঁজ মিলেছে উভ্যারিওপসিস গাছের এক নতুন প্রজাতির। প্রায় ৪ মিটার লম্বা গাছটির দিকে এক ঝলক তাকালেই চিনে নেওয়া যায় এর উজ্জ্বল হলদে-সবুজ রঙের ফুল দেখে। এই প্রজাতিটি শুধু যে একেবারে আনকোরা তাই নয়, উপরন্তু ‘অতি বিপন্ন’ বা ‘critically endangered’ তালিকাভুক্ত। ইউনাইটেড কিংডমের রয়্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেন্‌স এবং ক্যামেরুনের ন্যাশনাল হারবেরিয়ামের বিজ্ঞানীরা মিলিতভাবে এই উদ্ভিদ প্রজাতিটিকে নানাভাবে পরীক্ষা করেছেন, এবং শেষটায় এর নতুনত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে এর নাম দিয়েছেন Uvariopsis dicaprio । তাঁদের মতে এটুকু লিওনার্দোর প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। 

হলিউডি অভিনেতার প্রতি বিজ্ঞানের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন? শুনতে অবাক লাগলেও ব্যাপারটা আলটপকা নয় মোটেও। পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি নিয়ে লিওনার্দো অনেকদিন ধরেই সরব। সে অবশ্য অনেক আন্তর্জাতিক সেলেব্রিটিই অনেক বিষয় নিয়ে বক্তব্য রেখে থাকেন, তবে লিওনার্দো অনেকের থেকেই অনেক কাঠি এগিয়ে। রেভেন্যান্ট সিনেমার জন্য অস্কারজয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁর সেই চাঁছাছোলা সাবধানবাণী মনে পড়ে? না, সিনেমার প্রচারের স্বার্থে উচ্চারিত হয়নি সেই শব্দগুলো। ওই কথাগুলো বেরিয়ে এসেছিল সেই মানুষটার ভিতর থেকে যিনি সেই ১৯৯৮ সাল থেকেই পরিবেশের হয়ে কথা বলার জন্য নিজের ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছেন, যিনি লাভক্ষতির তোয়াক্কা না করে ‘The 11th Hour’ (২০০৭) এবং ‘Before the Flood’ (২০১৬)-এর মতো সোজাসাপ্টা তথ্যচিত্র বানিয়েছেন, নাম করে করে আঙুল তুলেছেন পাম তেল ব্যবসার নামে বিঘার পর বিঘা বনভূমি সাফ করে দেওয়া ধনকুবেরদের দিকে। এবো বনভূমির সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সোচ্চার হতে শোনা গেছে তাঁকে, কারণ এবো বেশ কিছু ‘critically endangered’ উদ্ভিদ প্রজাতির আপাত একমাত্র আশ্রয়। তাই সেই ঘরে নতুন সদস্যের খোঁজ পাওয়ায় বিজ্ঞানীরা তাকে চিহ্নিত করেছেন এমন এক নাছোড়বান্দা অভিভাবকের নামে। 

আরও পড়ুন : মাস্ক বিভ্রাট : অতিমারি-ঘটিত বিপুল বর্জ্য বাড়াচ্ছে বিপদ 

তবে লিওনার্দো প্রথম নন, এর আগে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি তাঁর পরিবেশ এবং শরণার্থী সংক্রান্ত কাজকর্মের পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন গোটা একটা মাকড়সা (Aptostichus angelinajoliae)! সেলিব্রিটিদের নামে নতুন প্রজাতির নামকরণের বেলায় যে সবসময় এত যুক্তিনিষ্ঠ শ্রদ্ধার পথেই চলা হয়, তা নয়। ২০১২ সালে ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক নতুন ফার্ন প্রজাতির নাম দেন Gaga germanotta, পপ তারকা লেডি গাগা-র গ্র্যামি ফ্যাশন ছিল এর অনুপ্রেরণা। একই ভাবে নতুন ধরনের গুবরে পোকার নামে (Agra katewinsletae) টাইটানিক-খ্যাত অভিনেত্রী কেট উইনস্লেটের নাম জুড়ে যাওয়ার পিছনেও আপাতভাবে কোনও জোরদার কারণ নেই। 

আরও পড়ুন : মহিলাদের উদ্যোগে বিদ্যুৎহীন গ্রাম এখন 'SOLAR VILLAGE': মহারাষ্ট্রের সাতারায় তৈরি হল দৃষ্টান্ত 

কারণ থাক বা না থাক, সেলিব্রিটিদের নামে খ্যাত হলে যদি একটা গাছ কিংবা দুটো প্রাণী নির্বিচারে হত্যার হাত থেকে বেঁচে যায়, আমাদের মতো আত্ম-আচ্ছন্ন জাতির থেকে একটু পাত্তা পায়, তাই বা কম কী! 

#Leonardo DiCaprio #Plant #Nature Conservation #প্রকৃতি সংরক্ষণ #উদ্ভিদ সংরক্ষণ #পরিবেশ #environment #silly পয়েন্ট #ওয়েবজিন #web portal

Leave a comment

All fields are required. Comment will appear after it is approved.

trending posts

newsletter

Connect With Us

today's visitors

21

Unique Visitors

219135