বাড়ি একটি, ঠিকানা দুটি : দুই দেশের সীমানায় এক আশ্চর্য লাইব্রেরি

সামনের প্রবেশদ্বার দিয়ে ভিতরে ঢুকলে আপনাকে ঢুকতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাটি ছুঁয়ে, কিন্তু বই খুঁজতে হলে আপনাকে গিয়ে দাঁড়াতে হবে কানাডার মাটিতে। রিডিং রুমের মাঝখান দিয়ে গেছে আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখা। এমনই আশ্চর্য এক লাইব্রেরি রয়েছে কানাডা আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে। আরও মজার কথা হচ্ছে এই একটি লাইব্রেরি-বাড়িই আইন মোতাবেক বহন করছে দুই দেশের দুই আলাদা ঠিকানা। হ্যাস্কেল লাইব্রেরি ও অপেরা হাউজ (The Haskell Free Library and Opera House)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাতায় এই লাইব্রেরির ঠিকানা ৯৩, কাসওয়েল সরণী, ডার্বি লাইন, ভারমন্ট। অন্যদিকে কানাডার নির্ধারিত ঠিকানা ১ র্যু চার্চ, স্ট্যান্ডস্টেড, কুইবেক।
কানাডায় এই লাইব্রেরির কোনও প্রবেশপথ নেই। একটি আপদকালীন প্রস্থানপথ রয়েছে শুধু। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানায় কোনও বই নেই। যাবতীয় বইয়ের সম্ভার রয়েছে কানাডার ভূভাগে। আবার কিছু সংখ্যক দর্শকাসন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাগে পড়লেও অপেরা হাউজের মঞ্চটি রয়েছে কানাডার সীমানায়। ২০ হাজার বইয়ের সম্ভারওয়ালা এই লাইব্রেরি সাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়েছিল ১৯০৫ সালে। তার আগের বছরই উন্মুক্ত হয়েছিল অপেরা হাউজটি। এই লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা মার্থা স্টুয়ারট হ্যাস্কেল (Martha Stewart Haskell) চেয়েছিলেন, দুই প্রতিবেশি দেশের নাগরিকদেরই অধিকার থাকবে এই লাইব্রেরি এবং অপেরা হাউজে। সেজন্যই দুই দেশের সীমান্তে এই বাড়িটি তৈরি করা হয়। দুই রাষ্ট্রই এই লাইব্রেরিকে ঐতিহাসিক নিদর্শন বলে ঘোষণা করেছে। বইপ্রেমীদের মধ্যে কোনও কাঁটাতার বা সীমান্তরেখা সত্যিই যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, তার জলজ্যান্ত নিদর্শন এই লাইব্রেরি।
..........................