নামমাত্র হিজিবিজি
জানলা বন্ধ করার পরেই ভরদুপুরের ঘরে নেমে আসে নিঝঝুম আলো-আধাঁরি। ভাতঘুমের আলিস্যি আর খড়খড়ির ফাঁকে নরম হয়ে আসা রোদ্দুর বিলি কাটে অন্ধকারের চুলে। ঠিক তখনই তোমার কথা মনে পড়ে। তোমাদের কথা। যেন তেতেপুড়ে যাওয়া পথিককে মাটির সরা থেকে কেউ গড়িয়ে দিল এক ঘটি বরফঠাণ্ডা জল। ওইসব উপকথায় তোমরা সবাই এক। আগের মতন। তোমাদের দুঃখের রং, ক্লান্তির রং, হতাশার রং এক। অতএব আনন্দের। সব এবড়োখেবড়ো রাস্তার শেষে সেখানে আছে কোনও এক ছায়াঘেরা গলি। ফেরার জন্য। ঘরে। যে গলি চেনা গলার স্বরের মতন। কুলুঙ্গিতে একলা জ্বলা পিদিমের আলোর মতন। শান্ত। ঢেউহীন। যেমন করে বুকজল থেকে উঠে হাঁসেরা জিরোয় পালকে মুখ গুঁজে, তেমনি জ্বলতে জ্বলতে ফুরিয়ে আসা যে কেউ সেখানে জিরিয়ে নিতে পারে দু-দণ্ড। জ্বরের কপালও পেতে পারে জলপটি।
জানলা বন্ধ করলেই কলপারের জোলো হাওয়া চুঁইয়ে পড়ে মনের ভিতরমহল। ভিজে ওঠে পরিপাটি শালগ্রাম। পুরোনো চিরকুট খুঁজে পায় ছেড়ে আসা স্টেশনের ঠিকানা। যা হতে পারত, যা হয়নি কখনো, সেইসব গল্পের ছেঁড়া পাতা ঘুরপাক খায় নিরিবিলিতে। চোখ টানে। তুমি সবুজ দেখার আরাম নিয়ে তাকিয়ে থাকো তাদের দিকে। দেখার জন্য আলো লাগে না কোনোদিনই। দৃষ্টি লাগে। অল্প হাসির শব্দে লুকিয়ে থাকে দিগন্তজোড়া ইশারা। একটুখানি কথার আওয়াজে চাওয়াদের ভিড়িয়ে তোলা তীরে। মানুষ ইচ্ছে জানায় তারার কাছে। গাছের কাছে। উড়ন্ত ডানার কাছে। তবে কি দেখতে পায় সেইসব জাদুতারাদের, গাছেদের, উড়ন্ত ডানাদের... ভরদুপুরের ঘরে? জানলা বন্ধ করলেই...?
কভার ছবি ঋণ : Bonnie Rinier
#গদ্য #discourse #আলেখ্য মিত্র