আপদ
..................
ভরা পুকুর দেখলে ফাঁকা মাঠ বয়ে বেড়াতে ইচ্ছে করে না। ঐ যে দু শালিখ, এইবার কেউ ডাকবে মনে হয়। কৃষ্ণচূড়ায় আউলে উঠেছে শ্যাওলাজমা কার্নিশ। ধুঁকতে থাকা তুলসীমঞ্চ একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে সেদিকে। 'মরণ হয় না তোর!' গলা ফুলিয়ে উড়ে গেল চাটুজ্যেদের পায়রা। বিবিদিদি দানা ছড়িয়ে অপেক্ষা করছে তার জন্যে। ঘা পরিষ্কার থামিয়ে এঁটো থার্মোকলের থালা হাটকায় ভুলু। সে জানে সে মরবে শিগগিরই, তবু যতদিন আছে তাকে খেতে হবে। আগে না পৌঁছলে, কালুয়ার সঙ্গে পেরে উঠবে না। দানা ছড়াতে ছড়াতে বিবির মনে হয় বিকেলের নাম অন্য কিছু হলে ভালো হত। দুপুরের মধ্যে যেমন তীব্রতা ছুটে যায়, বিকেলের মধ্যে তেমন বিষাদ ফোটে না।
বাল! এত লিখে কী ছিঁড়ব আমি? প্রতি শিক্ষিত বেকারের আত্মহত্যায় অপছন্দের চাকরির সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছি। কলমের চেয়েও কাগজের পরিচর্যায় সময় কাটছে বেশি। তার গান্ধীছাপ ব্যঙ্গ করে তবু... থাক। বেখেয়ালি জীবনে লাগাম হাকড়ে ক্রমশ গড়পরতা হতে হতে ঘাই মেরে দু চার লাইন লেখার পরেই ফের বুঝতে পারি, উটপাখি জন্ম চূড়ান্ত অপরাধ। তাই জন্মদিনের চেয়েও মাসের ত্রিশ তারিখ আমার কাছে অপূর্ব, অমোঘ। বুঝি মৃত্যুর পরে বিখ্যাত হওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।
আরও পড়ুন : দূর বসতের শব্দ-রিফু / শৌভিক মুখোপাধ্যায়
..................
[অলংকরণ : ঐন্দ্রিলা চন্দ্র]