নদী আর রাক্ষসের গল্প
....................
১
শান্ত জ্যোৎস্নার বন
ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পুণ্যতোয়া নদী
আর এক রাক্ষস ভেসে যেতে যেতে হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে বলল
এ-অঙ্গ ভেসে গেছে পাপে
তারপর সেই রাক্ষস সমস্ত বন এলোমেলো করে
সমস্ত খাতা তছনছ করে
লিখে ফেলল কতিপয় শ্লোক
কাব্য জন্ম নিল
২
অতঃপর এই কাব্য কোথায় যাবে?
নদীর পার? অতলান্ত বিকেল
অথচ নদীটি অচলা নয়
আর প্রতিদিন
বিকেলের অর্থ বদলে যায়
৩
কবিটি কোথায় যায়?
কোন ক্লান্ত বর্ষা
ঝিঁ ঝিঁ পোকা সুর
আদিগন্ত মেঘেদের জামা
যতদূর চোখ যায়
লিখে রাখা আছে
প্রাচীন রাক্ষসগাথা
৪
ছাল ছিঁড়ে যায় রাক্ষসের
ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে একগুচ্ছ সাদা পাতা
পরীক্ষাহলে খুব দ্রুত লিখনের পরে
কেউ যেন জমা দিয়েছিল
হস্তলিপি অপাঠ্য হলে সমস্ত উত্তর
কাব্যাধিক কাব্য
অশ্রুতে ধরা পড়া চাঁদ
৫
নদীটি শান্তি পাক
চাঁদটিও ঘর পাক দূর মফস্বলে
যেখানে বিকেলের উঠোন
যেইখানে শালিখের ডানা
থেকে ঝরে পড়ে আজও সুবর্ণ অক্ষর
৬
এতক্ষণে আপনারা একটা কিংবদন্তির মাঝখানে ঢুকে পড়েছেন
বুঝতে পারছেন কবি আসলে পূর্বাশ্রমের রাক্ষস
এক লুণ্ঠন শেষ করে আরেক জন্মের দিকে
সে হেঁটে আসছে একটা সরু সুতোর ওপর
যুগান্তরের ঘণ্টা বাজছে
....................................
[অলংকরণ : শবনম আরা]