সন্ন্যাসী, শিল্পপতি ও এক প্রতিষ্ঠানের জন্ম
বোম্বের পার্সি শিল্পপতি জামশেদজী নাসেরওয়ানজী টাটা জাহাজে চেপে জাপানের ইওকোহামা থেকে যাচ্ছিলেন ভ্যাঙ্কুভার। সময়টা উনিশ শতকের শেষ প্রান্ত, ১৮৯৩ সালের জুলাই মাস। সেই জাহাজেই তাঁর সঙ্গী ছিলেন এক হিন্দু সন্ন্যাসী। ইনিও চলেছেন আমেরিকায়, সেখানকার এক ধর্ম মহাসভায় বক্তৃতা দিতে। অসমবয়সী দু-জনের মধ্যে মাঝেমধ্যে গল্প-গাছা হত, হত নানা ভাবের আদানপ্রদান। এরকমই এক আড্ডার সময় জামশেদজীকে ওই সন্ন্যাসী ভারতের শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ে জানান তাঁর কিছু মনোভাবের কথা। মহেন্দ্রনাথ দত্তের ‘স্বামী বিবেকানন্দের জীবনের ঘটনাবলি’ বইয়ে আছে যে স্বামীজী প্রথম আলাপের সময়েই নাকি টাটাকে বলে, জাপান থেকে দেশলাপি নিয়ে গিয়ে দেশে বিক্রয় করে জাপানকে টাকা দিচ্ছ কেন? তুমি তো সামান্য কিছু দস্তুরী পাও মাত্র। এর চেয়ে দেশে দেশলাইয়ের কারখানা করলে তোমারও লাভ হবে, দশটা লোকেরও প্রতিপালন হবে এবং দেশের টাকা দেশেই থাকবে। কিন্তু টাটা সে-প্রস্তাবে অসম্মতি প্রকাশ করিয়া নানারূপ আপত্তি দর্শাইতে লাগিলেন। সে সময়ে টাটার জাপানি দেশলাই একচেটিয়া ছিল।’
এ দেশে ভারী শিল্প-স্থাপনে, বিশেষ করে লোহা-আকরিকনির্ভর শিল্পে টাটা-গোষ্ঠীর অবদান এখন আমরা সকলেই জানি। কিন্তু তখনও পর্যন্ত জামশেদজী টাটা ও পথে হাঁটা শুরু করেননি। সেদিন ওই হিন্দু সন্ন্যাসী, পরবর্তীকালের তুঙ্গ-খ্যাত স্বামী বিবেকানন্দই জামশেদজীকে উৎসাহ দিয়েছিলেন দেশীয় প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ভারী শিল্প-স্থাপনার জন্য। এবং দিয়েছিলেন আরও কিছু পরামর্শ। দেশীয় কারখানা গড়ে তুলে সে কারখানা থেকে শিল্পসামগ্রী গড়ে দেশে (এবং বিদেশেও) বাণিজ্য-সম্ভাবনা বাড়াতে না পারলে দেশের উন্নতির আশা ক্রমে কমেই যায়, এ ধারণায় স্বামীজী ছিলেন সোচ্চার। আর সেরকম কারখানার জন্য দরকার শিল্প-প্রযুক্তিবিদ, দেশের উৎসাহী যুবকদের মধ্যে থেকেই প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করে নিতে হবে সেরকম একদল কর্মঠ কর্মী।
জাহাজযাত্রার ওই বারো দিনে স্বামীজীর সঙ্গে আলোচনা এবং স্বামীজীর পরামর্শ জামশেদজীর মনে ছিলই, তাই এর বছর কয়েক পরে ১৮৯৮ সালে আমরা দেখি তিনি চিঠি লিখছেন স্বামীজীকে, যে চিঠিতে (২৩ নভেম্বর) তিনি স্বামীজীকে আবেদন জানান তিনি যেন তাঁর প্রস্তাবিত বিজ্ঞানশিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি প্রচারপত্র লিখে দেন। কিন্তু ততদিনে স্বামীজী রামকৃষ্ণ মিশনের কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, তাই এই অনুরোধ তাঁর পক্ষে রাখা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি টাটাদের কাছে পাঠালেন তাঁর সুযোগ্য শিষ্যা ভগিনী নিবেদিতাকে। এরই পাশাপাশি আমরা দেখি তাঁর ‘প্রবুদ্ধ ভারত’ পত্রিকায় এপ্রিল, ১৮৯৯ সংখ্যায় একটি লেখা প্রকাশিত হচ্ছে, যেখানে টাটার এই পরিকল্পনার জন্য জানানো হচ্ছে উদার সমর্থন [সমকালীন ভারতবর্ষ/ ৫, ২৪৫ পৃ]। শুধু তাই নয়, এই পত্রিকায় এরপরেও দু-বার (স্বামীজীর জীবিতাবস্থায়) এই প্রসঙ্গ এসেছিল। একবার লেখা হয়েছিল যে রানি ভিক্টোরিয়ার স্মৃতি-রক্ষার জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ হবে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠা; আর একবার লেখা হয় ঠিক কী রূপে গড়ে তোলবার পরিকল্পনা করা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে। তৈরি হবে ব্যাঙ্গালোরে, নাম হবে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স’ যদিও এর আগে ঠিক হয়েছিল এর নাম হবে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ’, আর এখানে থাকবে গবেষণার তিনটি বিভাগ— রসায়ন, ফলিত পদার্থবিদ্যা আর জীববিদ্যা। প্রত্যেকটা বিভাগে থাকবেন তিনজন করে অধ্যাপক ও তিনজন সহকারি অধ্যাপক।
স্বামীজীকে চিঠি লেখবার মাস-দুয়েক আগে, সেপ্টেম্বরে মাসে জামশেদজী একটি কমিটি বানিয়ে তার হাতে কিছু সম্পত্তি তুলে দিয়েছিলেন। তাঁর সম্পত্তির প্রায় অর্ধেকটা, যার পরিমাণ তিরিশ লক্ষ টাকা (যা থেকে বার্ষিক সুদ মিলবে সোয়া এক লক্ষ টাকা), তিনি দান করছেন একটি স্নাতকোত্তর গবেষণা-প্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য। ভারতের বুকে বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সবাই তো অবাক। এ আবার কী কথা! এ দেশের মানুষের কি অত বিজ্ঞান-গবেষণা করবার মতো ক্ষমতা আছে?
কিন্তু জামশেদজী অন্য ধাতের মানুষ। তিনি তাঁর সব পরিকল্পনা খুলে বললেন পারিবারিক বন্ধু শিক্ষাবিদ বারজোরজী পাদশাহ-কে। দু-জনে মিলে পরিকল্পনা করতে লাগলেন কীভাবে একটা আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা যায়। কিছু পরে এই পাদশাহ এসেছিলেন কলকাতাতেও। দেখা করেছিলেন স্বামীজীর সঙ্গে। অনুমান করা চলে, এই প্রতিষ্ঠান গড়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল।
২/
কিন্তু ভাইসরয় লর্ড কার্জন টাটার এই প্রস্তাবে বিশেষ উৎসাহিত হলেন না। তাঁর মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল, এখানে যথেষ্ট সংখ্যক ছাত্র পাওয়া যাবে না। সেটা হলে অধ্যাপকেরাও তো পড়াতে উৎসাহ পাবেন না। আর তাছাড়া এখান থেকে পাশ করে বেরনো ছাত্ররাও যে উপযুক্ত চাকরি পাবে না, এ ব্যাপারেও তিনি বেশ নিশ্চিত ছিলেন। সুতরাং আরও বেশি অর্থ সাহায্য না এলে এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করা যে ঠিক হবে না, এটাই জানাল সরকার নিযুক্ত অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্ট। এই কমিটিতে ছিলেন বিজ্ঞানী উইলিয়াম র্যামসে, যিনি নিষ্ক্রিয় গ্যাস আবিষ্কারের জন্য নোবেল পেয়েছিলেন ১৯০৪ সালে।
লর্ড কার্জন নিজে যেমন অরাজি ছিলেন, তেমনই চেষ্টা করছিলেন অন্যভাবেও বাধা দিতে। মহিশূরের দেওয়ান ঘোষণা করেছিলেন তিনি দেবেন সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা। এবং বার্ষিক এক লক্ষ টাকা। কার্জন কুপরামর্শ দিয়ে সেই সাহায্য কমিয়ে করে দেন বার্ষিক তিরিশ হাজার টাকায়। নিজেই একদিকে বলছেন অর্থসাহায্য যথেষ্ট না এলে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে লাভ নেই, অন্যদিকে তিনিই আবার চেষ্টা করছেন যাতে সাহায্য কম আসে!
প্রথম দিকে সরকারের উদাসীনতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি তৈরির কাজ বেশ বাধাপ্রাপ্ত হয়। এমনকি টাটারাও প্রস্তাব বাতিল করবেন এরকম একটা সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু জামশেদজী তাঁর স্বপ্নকে সার্থক করবার আশা ছাড়েননি, অন্তত যতদিন জীবিত ছিলেন। যে কারণে এরপর ১৯০০ সালের দিকে দেখি তিনি চলেছেন আমেরিকায়। ব্রিটিশ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে ওই ব্যাপারে আলোচনা করে তাঁদের সমর্থন আনতে। সে সময় সেখানে ছিলেন নিবেদিতাও। নিবেদিতাও তখন এই পরিকল্পনার সমর্থনে পূর্ণ সহযোগিতা করবার মানসিকতা নিয়েই কাজে নেমে পড়েছেন।
ওই সময়ে এক নৈশ ভোজসভায় টাটার সঙ্গে শিক্ষাবিভাগের কর্তা স্যার জর্জ বার্ডউড এবং নিবেদিতার কী ধরনের কথাবার্তা হয়েছিল, সে প্রসঙ্গ আছে ‘নিবেদিতা লোকমাতা’ বইয়ে। নিবেদিতা তাঁর প্রবল ব্যক্তিত্ব এবং জোরালো বক্তব্যের চ্ছ্বটায় সবাইকে মুগ্ধ করে দিয়েছিলেন।
সে সময় জগদীশচন্দ্র রয়েছেন বিলেতেই। দ্বিতীয় বৈজ্ঞানিক সফরে প্যারিসে বক্তৃতা দিয়ে তিনি এসেছেন লন্ডনে। তাঁর অবস্থা তখন কিছুটা বেকায়দায়। জীব আর জড়ের মধ্যে প্রভেদ ঘুচানোর এক অবিশ্বাস্য পরীক্ষা করে দেখিয়ে ও দেশের বিজ্ঞানীদের মধ্যে তিনি জাগিয়ে তুলেছিলেন সন্দেহ এবং অবিশ্বাসের এক বাতাবরণ। অনেকেই সেদিন তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারে নেমে পড়েছিলেন। সেই সঙ্গে দেশের সরকারও তাঁকে গবেষণার জন্য যথেষ্ট সুযোগ সুবিধে দিচ্ছিল না; তাই নিবেদিতা চেয়েছিলেন যদি এই প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়, তবে জগদীশচন্দ্রও হয়তো এখানে অধ্যাপনা এবং গবেষণার সুযোগ পেতে পারেন। তাঁর মানসিক শান্তির ব্যবস্থা হয়তো হতে পারে এর ফলে।
সরকারি কর্তাব্যক্তিরা নানাভাবে চেয়েছিলেন এই প্রতিষ্ঠানটি যেন সম্পূর্ণভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাহলে খবরদারির সুবিধে হবে। অন্যদিকে নিবেদিতা (এবং টাটা তো বটেই) সেটা চাইছিলেন না মোটেও। নিবেদিতা এরপর বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির কাছে চিঠি লেখেন, পত্রপত্রিকায় লেখালিখি করেন, তাঁর চিঠিপত্রে এর বেশ কিছু নমুনা মেলে।
৩/
আইআইএসসির জন্য মূল সাহায্য এসেছিল মহিশূরের রাজপরিবার থেকেই। জামশেদজী টাটা তাঁর পরিকল্পনা খুলে বলে নিজের দলে প্রথমে এনেছিলেন এই রাজপরিবারের দেওয়ান শেষাদ্রি আয়ার-কে। দেওয়ান সাহেব এরপর রাজি করান রাজা চতুর্থ কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার-কে। তিনি রাজি হন টাটাকে এখনকার বেঙ্গালুরুর কাছে তিনশো একাত্তর একর জমি দিতে। ব্যাঙ্গালোরে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার আরও কিছু সুবিধে ছিল, যেমন এখানে কাছেই শিবসমুদ্রম জলবিদ্যুৎকেন্দ্র, ফলে বিদ্যুৎশক্তির অভাব ঘটবে না কখনও; তা ছাড়া কাছাকাছি রয়েছে প্রাকৃতিক খনিজ উৎস; এবং আবহাওয়াও বেশ মনোরম।
১৯০৭ সালে মহিশূরের রানি বাণীবিলাস দিলেন তিনশো একাত্তর একর জমি, আর পাঁচ লক্ষ টাকা। মূলত এই অর্থ এবং টাটার সঞ্চিত সেই তিরিশ লক্ষ; এই দিয়েই সেই প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হল ১৯১১ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি তারিখে। স্থাপনার কাজটা করলেন মহিশূরের সেই রাজা কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার। প্রতিষ্ঠানের প্রথম ডিরেক্টর (বাংলার পরিচালক বলা উচিত, তবে ওই শব্দটি সিনেমার সঙ্গেই ভালো মানায়, তাই সরাসরি ডিরেক্টর) হলেন অধ্যাপক মরিস ট্র্যাভার্স নামে এক বিদেশি বিজ্ঞানী। ইনি এ দেশে এসে থাকতেন রেস কোর্স রোডের তাজ ওয়েস্ট এন্ড-এ, রোজ সকালে ঘোড়ায় চড়ে যেতেন প্রতিষ্ঠান তৈরির কাজকর্ম দেখতে। আর সঙ্গে রাখতেন একটা কোল্ট রিভলভার, যার নাম তিনি নিজেই দিয়েছিলেন ‘দ্য অ্যালকেমিস্ট’!
আরও পড়ুন : বাঙালিকে ‘অন্ত্রপ্রনর’ হবার পথ দেখিয়েছিলেন স্যার রাজেন্দ্রনাথ মুখার্জী / অহনা বড়াল
প্রথমে এখানে শুরু হয়েছিল দুটি মাত্র বিভাগ— ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি (তড়িৎ-প্রযুক্তি) আর জেনারেল অ্যান্ড অ্যাপলায়েড কেমিস্ট্রি (সাধারণ ও ফলিত রসায়ন)। আর চব্বিশজন ছাত্র। এরপর ধাপে ধাপে বিভাগ বৃদ্ধি পায়, আর বারতে থাকে এর খ্যাতি এবং পরিচিতি। আজকে ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং র্যাঙ্কিং-এ একনম্বর প্রতিষ্ঠান এটাই।
তবে সবচেয়ে দুঃখের ব্যাপার, আইআইএসসি তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা যাঁর, সেই জামশেদজী দেখে যেতে পারেননি তাঁর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানের বাস্তব চেহারা। এর উদ্বোধনের কয়েক বছর আগে ১৯০৪ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন : ভুলতে বসা এক বাঙালি শিল্পোদ্যোগী : যন্ত্রকারিগর জগদীশ্বর ঘটক / মন্দিরা চৌধুরী
এই প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বেশি শ্রীবৃদ্ধি ঘটতে শুরু করে বেশ কয়েক বছর পরে, ১৯৩৩ সালে, যখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদ ছেড়ে দিয়ে এখানে এসে ডিরেক্টরের আসনে বসছেন বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরামন। ততদিনে তিনি নোবেল পেয়ে গোটা বিশ্বেই পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনিই এখানে নতুন নতুন বিভাগ খুলে, প্রতিভাবান তরুণ গবেষকদের এনে এর খ্যাতি অনেক গুণ বারিয়ে তোলেন। হোমি জাহাঙ্গির ভাভা বা বিক্রম সারাভাইয়ের মতো বিজ্ঞানীরা এখানে গবেষণা করেই খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। যত দিন বেড়েছে, বেড়েছে এই প্রতিষ্ঠানের পরিধিও। তিনশো একাত্তর থেকে বেড়ে মোট জায়গার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চারশো আঠাশ একর। আজকের ভারতে আইআইএসসি-র মতো প্রতিষ্ঠানকে তার উচু মর্যাদা ধরে রাখা অবশ্যই জরুরি।
………………………
#Jamsetji Tata #Swami Vivekananda #silly পয়েন্ট