নদী বাঁচানোর বার্তা নিয়ে ঘাটে ঘাটে ঘুরবে টালিগঞ্জের সুদেষ্ণার নৌকা
উন্নয়ন আর মানুষের অবহেলায় গত কয়েক দশকে এদেশের একের পর এক নদী পাকাপাকিভাবে উঠে গেছে ইতিহাসের পাতায়। ঘটা করে 'গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান' বা 'নমামি গঙ্গে' প্রজেক্ট নেওয়া হলেও গঙ্গায় বর্জ্য আর কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া দুই-ই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতি বছর। আদিগঙ্গা থেকে ভাগীরথী, জলঙ্গী থেকে ইছামতি, মাথাভাঙা থেকে চূর্ণী - বিপন্ন নদীর সংখ্যা এই নদীমাতৃক বাংলাতেও কম না। বিভিন্ন জেলায় নদী নিয়ে ছোটো মাপের আন্দোলন দানা বাঁধছে। কিন্তু সেগুলো গণআন্দোলন হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সাম্প্রতিক অতীতে সিকিমে তিস্তার ভয়ঙ্কর ধ্বংলীলার সাক্ষী থেকেছে উত্তরবঙ্গ। তারও নেপথ্য কারণ হিসেবে বাঁধ নির্মাণ করে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকেই দায়ী করেছেন পরিবেশবিদরা। এরই মাঝে নদী বাঁচানোর বার্তা দেবার এক অভিনব পন্থা ভেবে ফেলেছেন টালিগঞ্জের তরুণী পরিবেশকর্মী সুদেষ্ণা পাল কর। মুর্শিদাবাদের আহিরণ ঘাট থেকে ৪০০ কিলোমিটার জলপথ পাড়ি দিয়ে তিনি এসে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করেছেন কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাটে।
অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে আগ্রহী সুদেষ্ণার ইচ্ছে, তিনি একাই 'কায়াকিং' করবেন এবং এই বিরাট যাত্রাপথে মোট ১৫ টি ঘাটে নোঙর ফেলবেন। সেখানের মানুষজনের সঙ্গে নদীর আগামী নিয়ে ভাবনাচিন্তা বিনিময় করবেন। নদী বাঁচলে তবেই মানুষ বাঁচবে, বাঁচবে জীবকুল - এই বার্তাই তিনি পৌঁছে দিতে চান সকলের কাছে। গত ২৮ নভেম্বর যাত্রা শুরু করেছেন। আগামী ১২ ডিসেম্বর প্রিন্সেপ ঘাটে নৌকা ভিড়ানোর ভাবনা তাঁর। পথে বহরমপুর, পলাশি, উদ্ধারণপুর, অগ্রদ্বীপ, নবদ্বীপ, শ্রীরামপুর, কল্যাণী, ব্যারাকপুর ইত্যাদি ঘাটে থামবেন। সুদেষ্ণার এই অভিযানের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন 'পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ এবং নদী বাঁচাও জীবন বাঁচাও' সংগঠন।
এদেশে মানুষ নদীকে ‘মা’ বলে ডাকে। আর এদেশেই একের পর এক নদী মরে যায় মানুষের অবহেলা আর উদাসীনতায়। ভেবে অবাক হতে হয় যে, এত ভক্তির উল্টোপিঠেই কীভাবে বাস করে এত অবহেলা? পরিবেশকর্মী ও নদী-আন্দোলন কর্মীদের নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না সেভাবে। সুদেষ্ণার এই প্রয়াস নিশ্চিতভাবেই মানুষের নজর কাড়বে। কিন্তু ভাবাতে পারবে কিনা, তার উত্তর সময়ই দেবে।
..................
#Save River #Environment #Kayaking for river #silly পয়েন্ট