পরিবেশ ও প্রাণচক্র

নদীদের বাঁচাতে নীলকণ্ঠ হচ্ছে সাগর : শিল্পনগরী গুজরাটে দূষণের ভ্রূকুটি

টিম সিলি পয়েন্ট Dec 21, 2023 at 8:44 pm পরিবেশ ও প্রাণচক্র

নদী বাঁচাতে এবার কষ্ট ভোগ করতে হবে সমুদ্রকে। গুজরাটে সবরমতি, বিশ্বামিত্রির মতো নদীদের দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে নীলকণ্ঠ হতে হবে আরব সাগরকে। আগামী এক দশকের মধ্যেই হয়তো গুজরাটের সমস্ত শিল্পাঞ্চল থেকে সাগরের গভীর অঞ্চলে বিরাট পাইপলাইনের সাহায্যে জমা হবে কলকারখানার দূষিত অবশেষ।


গুজরাটের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল ও কলকারখানায় প্রতিদিন সব মিলিয়ে ৫৭৫ মিলিয়ন লিটার দূষিত অবশেষ তৈরি হয়।  সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (CPCB) ২০১৮ সালে গুজরাটের ২০ টি দূষিত নদীকে চিহ্নিত করেছিল, যাঁদের মধ্যে ৫ টি-ই অতি দূষিত। এর জন্য দায়ী কলকারখানার অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিশোধিত অবশেষ, যা সরাসরি এসে মেশে নদীর জলে। শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিত গুজরাটে সাতটি শিল্পতালুক রয়েছে। আমেদাবাদ, ভদোদরা, আঙ্কালেশ্বর, সুরাট, ভাপি, সারিগাম ও জেতপুর। সাতটি Industrial Cluster বলা হয় এদের। এবার এই প্রচণ্ড দূষণের হাত থেকে নদীদের বাঁচাতে সমুদ্রের অতি গভীর অঞ্চলকে আস্তাকুড় হিসেবে ভাবছে শিল্পমহল। এতে সরকারেরও সায় আছে। কারণ ইতোমধ্যেই ৮০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের এই কর্মসূচি সবুজ সংকেত পেয়ে গেছে। অবশ্য এর আগেই ২০১৬ সালে গুজরাটের ভারুচ জেলায় সামুদ্রিক পাইপলাইন তৈরি হয়েছে। তটভূমি থেকে ৯.৪ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের গর্ভে অবশেষ জমার কাজ চলেছে। এবার ধীরে ধীরে সাতটি শিল্পতালুকেই এই মডেল অনুসরণ করা হবে। গুজরাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শৈলেশ পাটোয়ারির মতে, "নদীর ব্যাপারে পরিবেশ-আইন এখন খুবই কড়া। ফলে গভীর সাগরে এইসব অবশেষ জমা করাই এখন একমাত্র পথ।" এর ফলে নদীরা হয়তো নতুন জীবন পাবে। কিন্তু পরিবেশবিদরা লাল সংকেতই দেখতে পাচ্ছেন। তাঁদের আশঙ্কা, এর ফলে সাগরের বাস্তুতন্ত্র বিপর্যস্ত হবে। বিঘ্নিত হবে উপকূলবর্তী জীবন। পরিবেশকর্মী রোহিত প্রজাপতি যেমন বলছেন, "যদি এইসব দূষিত অবশেষকে শোধন করা ব্যয়বহুল হয়, তাহলে উৎপাদন কম করাই একমাত্র রাস্তা। সাগরের পেটে সব জমা করা কোনও সমাধান হতে পারে না।"  

নদী থেকে সাগরে গেলেই কমে যাবে না দূষণের ভ্রূকুটি। সুস্থায়ী সমাধান নয়, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। শিল্পপতিরা এ-বিষয়ে সুস্থায়ী সমাধান খুঁজতে কতটা আগ্রহী, প্রশ্ন আসলে সেটাই। পরিবেশ আর মুনাফার মধ্যে তাঁরা কোনদিকে ঝুঁকবেন তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু সরকার কি একটা স্থায়ী সমাধান খুঁজবেন না? 

............ 

ছবি-ঋণ : India Today 

#Offshoring pollution #Environment #deep-sea pipelines #silly পয়েন্ট

Leave a comment

All fields are required. Comment will appear after it is approved.

trending posts

newsletter

Connect With Us

today's visitors

97

Unique Visitors

213007