বিজ্ঞানী রাজেশ্বরী চ্যাটার্জী : এক বিস্মৃত প্রতিভা
জন্মসূত্রে কন্নড়, কিন্তু বৈবাহিক সম্পর্কসূত্রে বাংলার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েছিলেন। কর্ণাটকের প্রথম মহিলা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় তাঁকে। মাইক্রোওয়েভ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় তাঁর নাম। অথচ সাধারণ ভারতীয়রা অনেকেই পরিচিত নন তাঁর সঙ্গে। তিনি রাজেশ্বরী চ্যাটার্জী।
১৯২২ সালে কর্ণাটকে জন্ম তাঁর। ব্যাঙ্গালোর সেন্ট্রাল কলেজ থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। শোনা যায়, সি ভি রমনের নেতৃত্বে কাজ করার ইচ্ছে থাকলেও মহিলা হবার কারণে প্রত্যাখ্যাত হন। তাতে অবশ্য তাঁর প্রতিভা বাধা পায়নি। ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ মাস্টার্স ডিগ্রির জন্যে দিল্লির সরকারের দ্বারা মনোনীত হয় তাঁর নাম। আমেরিকায় পাড়ি জমানোর সুযোগ পান তিনি। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল ব্যুরো অফ স্ট্যান্ডার্সে আট মাসের ট্রেনিং করেন। ১৯৫৩ সালে অর্জন করেন পিএইচডি ডিগ্রি। ভারতে ফিরে এসে Indian Institute of Science (IISC)-র ডিপার্টমেন্ট অফ ইলেকট্রিকাল কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর শিক্ষক পদে যোগ দেন। সেখানে তাঁর বিষয় ছিল ইলেকট্রোম্যাগনেটিক থিয়োরি, ইলেকট্রন টিউব সার্কিট, মাইক্রোওয়েভ টেকনোলজি, রেডিও ইঞ্জিনিয়ারিং। পরবর্তীতে এই ইনস্টিটিউটেরই প্রফেসর শিশিরকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। যৌথভাবে তাঁরা প্রথম এদেশে মাইক্রোওয়েভ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর উপর গবেষণার কাজ শুরু করেন। এই বিষয়ে প্রথম গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন তাঁরা। পরবর্তীকালে ইলেকট্রিকাল কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। Elements of Microwave Engineering, Antenna Theory And Practice, Dielectric And Dielectric Loaded Antennas-এর মতো বই লেখেন। ১৯৮২ সালে অবসর নেবার পর সমাজে বিজ্ঞানের প্রসারের জন্য সচেষ্ট হন। তৈরি করেন Indian Association for Women's Studies। ২০১০ সালে রাজেশ্বরী মারা যান।