কলকাতার 'জন্মদিন'
কলকাতার জন্মদিন কবে,আদৌ কলকাতার কোনো জন্মদিন বের করা সম্ভব কিনা এ নিয়ে বিস্তর ঐতিহাসিক-বিদ্যায়তনিক- সাংস্কৃতিক এমনকি আইনি মারপিট হয়েছে। সব থেকে সাম্প্রতিক মারপিটটি আইনি। বেহালার সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার পরিষদ কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। যার মূল বক্তব্য ছিল, জোব চার্নক আসার আগেই কলকাতার অস্তিত্ব ছিল। সুতরাং চার্নকের তৃতীয় বার সুতানুটিতে আসার দিন অর্থাৎ ১৬৯০ এর ২৪ এ আগস্টকে কলকাতার জন্মদিন বলা একেবারেই সঙ্গত নয়। এবং এই সূত্রেই চার্নক কিছুতেই কলকাতার জনক হতে পারেন না। ২০০৩ সালের ১৬ মে শুক্রবার বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট মেনে প্রধান বিচারপতি অশোককুমার মাথুর এবং বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেন, যে সত্যিই কলকাতার জন্মদিন নেই। আর কলকাতার কোনো বাবাও নেই।
এখন এ কথা তো বলা বাহুল্য কোনো জনপদ হঠাৎ একদিনে গড়ে ওঠে না। চার্নককে কলকাতার বাবা করে তোলার কৃতিত্বও নিঃসন্দেহে ইউরোপীয় ঐতিহাসিকদের। এবং তাঁর সুতানুটিতে পদার্পণের দিনটিকে বিশেষভাবে শহর কলকাতার জন্মদিন বলাও সঙ্গত নয়। ১৬৯০ সালে সেই তথাকথিত কলিকাতা গ্রামের জমির মালিক সাবর্ণ রায়চৌধুরীরা । স্বভাবতই সেই বছরের একটা বিশেষ দিনে, কেবল সুতানুটিতে তৃতীয়বার বুটের ধুলো দেওয়ার জন্য চার্নক সাহেবকে কলকাতার পিতৃত্বের অধিকার দেওয়ার কোনো মানে নেই। সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার পরিষদ বলেছিলেন, কলকাতার জন্মদিন যদি ধরতেই হয় তাহলে ১৬৯৮ সালের ১০ই নভেম্বরকে ধরা উচিত। কারণ সেইদিনই কলকাতা সুতানুটি গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রামের জমির দলিল ইংরেজদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই দিনটিকে তাই শহর কলকাতার সূচনাবিন্দু ধরা যেতে পারে।
[ ছবির হদিশঃ কলকাতার সৃষ্টি ও জব চার্নক, পি তৎকপ্পন নায়ার, এম. এল. দে এন্ড কোং, ১৩৯১ ]
এখন কলকাতার জন্ম যে এক বিদেশি ব্যবসায়ী সৈনিকের তৃতীয়বার সুতানুটিতে নেমে পড়ার ফলে হয়ে যায়নি , এ কথা মেনে নিতে কোনো অসুবিধে থাকার কথা নয়। তবে শহর কলকাতার একটা সম্ভাবনা সেই দিনটিতে হয়ত দানা বেঁধেছিল। বা শহর কলকাতার জন্ম ছিল ইতিহাসের এক অনিবার্য নিয়তি। বিদেশি বেনিয়া ব্যবসা করবে যখন তখন সেই ব্যবসাকেন্দ্রকে ঘিরে গড়ে উঠতেই হবে একটা শহর।
তবে কলকাতার প্রাচীনত্ব নিয়ে বেশ কিছু পণ্ডিতি কথাকাটাকাটি অনেকদিন থেকেই চলে আসছে। ১৩৪৫ এ সাহিত্য পরিষদ পত্রিকার পয়লা সংখ্যাতেই বিখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় "কলিকাতা নামের ব্যুৎপত্তি"বলে একখানা প্রবন্ধ লিখেছিলেন। সেই প্রবন্ধই পুনর্মুদ্রিত হয় ২৫ ফাল্গুন ১৩৭৪ - এ দেশ পত্রিকায়। এখানে কলকাতার সম্ভাব্য প্রাচীনত্ব এবং ব্যুৎপত্তিগত উৎস সম্পর্কে সুনীতিবাবু যা যা পয়েন্ট এনেছিলেন তার প্রায় সবকটাকেই ধরে ধরে কেটে দেন রাধারমণ মিত্র। কলকাতার জন্ম, আর পাকেচক্রে কলকাতার বাবা হয়ে যাওয়া চার্নককে নিয়ে কথা বলতে বলতে আমরা কেন এই পণ্ডিতি চুলোচুলির খবর নিচ্ছি? কলকাতা হাইকোর্টের বিধানের পর চার্নক আইনি ভাবেই কলকাতার বাবার পোস্ট হারিয়েছেন। কলকাতার জন্মদিনও ২৪ আগস্ট নয় বলে স্বীকৃত হয়েছে। এখন মহামান্য আদালতের আজ্ঞা জো হুজুর বলে মেনে নেওয়া ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। এবং মেনে না নেওয়ার কোনও সঙ্গত কারণও নেই। তাহলে এত তথ্যের কচাকচি কেন?
কারণ, সেই রায়ের প্রেক্ষিতে এই কথা অনেকদিন ধরেই হাওয়ায় ভাসছে যে, কলকাতা ব্যাপারটা নাকি হেব্বি পুরোনো। শহর কলকাতার জন্মের সুস্পষ্ট তারিখ না থাকলেও ডকুমেন্টেশন আছে। এমনকি যদি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির, ওই-তিনটে-গ্রামের-জমির-অধিকার-পাওয়ার-দিনটাকে শহর কলকাতার জন্ম বলে ধরে নেওয়া হয়, তাহলে কলকাতার একটা বার্থ সার্টিফিকেটও আছে।
কিন্তু কলকাতা নামটা নাকি আরও অনেক পুরোনো। এমনকি বিপ্রদাস পিপলাইয়ের মনসামঙ্গল , আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরী, মুকুন্দের চণ্ডীমঙ্গল সবেতে নাকি কলকাতা শব্দটা কোনো না কোনো অপভ্রংশে আছে। তা কলকাতা নামটিকে মান্ধাতার বাপের আমলের করে দেওয়ার চেষ্টা খুব হাল আমলের নয়। সুনীতিবাবু স্বয়ং তাঁর প্রবন্ধে এই সমস্ত কথাই তথ্য প্রমাণ সহ লিখেছিলেন। আর সে সমস্ত প্রমাণকে ঘ্যাচাং করে কেটে দিয়েছিলেন রাধারমণ। অত্ত বড়ো পণ্ডিতের কথাকে কেটে দিতে প্রচুর মনের জোর লাগে। তার থেকেও বেশি লাগে তথ্যের জোর। তা রাধারমণের দুটোই ছিল। তিনি সুকুমার সেন আর আশুতোষ ভট্টাচার্যকে সাক্ষী মেনে জোর গলায় বলেছিলেন, মনসামঙ্গল আর চণ্ডীমঙ্গলের কলকাতার উল্লেখ আসলে পরবর্তী প্রক্ষেপ। ওদের সূত্রে কলকাতাকে বুড়োর বুড়ো তস্য বুড়ো করে দেওয়া যায় না। আর আইন-ই-আকবরীর কেসে রাধারমণ সাক্ষী মেনেছেন স্বয়ং ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকারকে। যিনি মূল আইন-ই-আকবরী থেকে কর্নেল এইচ.এস. জ্যারেট-কৃত দ্বিতীয় খণ্ডের অনুবাদের পাদটীকায় পরিষ্কার বলেছিলেন, আইন-ই-আকবরী তে উল্লিখিত Klkt/Kln/ Klt - এই সমস্ত পাঠভেদের মধ্যে ক্যালকাটার চাইতে কালনাকেই তিনি বেশি "Prefer" করেন ( "Calcutta is unlikely, I prefer the variant in text Kalna")।
ডিসেম্বর ১৯৫২ তেই কলিকাতা দর্পণের প্রথম খণ্ডে রাধারমণ এইসব তথ্য প্রমাণ জড়ো করেছিলেন। কিন্তু ৩০.০৮.১৯৮৭ তে দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় দেবাশিস ভট্টাচার্য আবার কলকাতাকে বুড়োর বুড়ো প্রমাণ করতে সুনীতিবাবুর ওই বিপ্রদাসের মনসা, মুকুন্দের চণ্ডী, আর আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরী তুলে ধরেন। রাধারমণ অত খাটনির এহেন ব্যর্থতায় নিশ্চয় পুলকিত হননি সেদিন।
আরও পড়ুন
আসলে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য নিয়ে কথা বলতে গেলেই সুনীতিবাবু লেভেলের একাডেমিশিয়ান থেকে শুরু করে আজকের এঁচোড়পক্ব বাংলা অনার্স সবাই সুকুমার বাবুকে নিয়ে টানাটানি করেন। এই কলকাতার ব্যাপারটাই দেখুন। সুনীতিবাবু ১৩৪৩ এর সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা দ্বিতীয় সংখ্যায় সুকুমার সেনের একটা প্রবন্ধের ওপর ভিত্তি করেই বলেছিলেন, বিপ্রদাসের মনসামঙ্গলে কলকাতার উল্লেখ আছে। তাই কলকাতা নামটা অন্তত অনেক প্রাচীন। রাধারমণ সেই সুকুমার সেনেরই ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস প্রথম খণ্ডের পূর্বার্ধ কোট করে দেখিয়ে দেন আসলে বিপ্রদাসের কাব্যে কলকাতা স্থাননামের উল্লেখ সুকুমারবাবুর মতেই প্রক্ষেপ ছাড়া আর কিছু নয়। যেকোনো যথার্থ গবেষকের মতই সুকুমার সেনও কিন্তু নতুন পাওয়া তথ্য এবং ভাবনার ওপর ভিত্তি করে নিজের সিদ্ধান্ত বদলাতেন। সুতরাং তাঁরই দুই মতে যদি দ্বন্দ্ব হয় তাহলে অপেক্ষাকৃত শেষমতটিই গ্রহণযোগ্য। এইখানেই রাধারমণ জিতে যান সুনীতিবাবুর থেকে। এমনকি আনন্দ পাবলিশার্স প্রকাশিত 'বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস' প্রথম খণ্ড ১৯৯১ সংস্করণের ২০০ পৃষ্ঠাতেও সুকুমার সেন বিপ্রদাসের কাব্যে কলকাতার উল্লেখ প্রক্ষেপ বলেই মনে করেছেন। সুতরাং এখানে রাধারমণ জয়ী।
তা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের এহেন বেদব্যাস কি নিজে কলকাতার প্রাচীনত্ব সম্পর্কে কিচ্ছুটি বলেননি! বলেছেন বৈকি। আনন্দ পাবলিশার্স থেকেই জুলাই ১৯৯০ এ বেরোয় সুকুমার সেনের 'কলিকাতার কাহিনী'। সেখানে কিন্তু তিনি সুনীতিকুমারকৃত কলিকাতার ব্যুৎপত্তি মানেননি। তবে প্রাচীনতার ক্ষেত্রে রাধারমণ তথা যদুনাথ সরকারকে উপেক্ষা করে আইন-ই-আকবরী, মুকুন্দের চণ্ডীমঙ্গল এই দুইয়ে কলকাতার উল্লেখের আবছা স্বীকৃতি দিয়েছেন। আবছা বলছি এই জন্য, সুকুমারবাবুর লেখায় একটি "যদি" আছে। তিনি সপ্তদশ শতকের শেষার্ধে কৃষ্ণরাম দাসের রচনায় কলিকাতা পরগণার উল্লেখ যেমন জোর দিয়ে বলেন, মুকুন্দের ক্ষেত্রে তেমনটা বলেন না। মুকুন্দের কোনও কোনও প্রাচীন পুঁথিতে নাকি কলকাতাকে "কুচিনান" বলা হয়েছে। এই তথ্য জানিয়ে সুকুমার সেন বলছেন, "এই পাঠ যদি মৌলিক হয়, তাহলে কলিকাতা গ্রামের ইতিহাস আরও একশ বছর পিছিয়ে যায়"।
রাধারমণ জানিয়েছিলেন, কর্নেল হেনরি ইউল ইংল্যান্ডের ইস্ট ইন্ডিয়া হাউজ আর অন্যান্য দপ্তর তন্ন তন্ন করে খুঁজে কলকাতা নামের যে সর্বপ্রথম উল্লেখ আবিষ্কার করতে পেরেছেন, তা ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই আগস্ট। লন্ডন ইন্ডিয়া অফিসের ফ্যাক্টরি কাউন্সিলের চিঠিপত্রে ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের ৮ই জুনের পর থেকে চিঠিপত্রের মাথায় Calcutta নাম দেখা যাচ্ছে। তবে এদের আগেও অন্তত স্থাননাম হিসেবে কলিকাতার সন্ধান মেলে।
'শ্রীপান্থের কলকাতা'য় দেখা যায়, ব্যবসার সুবিধার্থে ইংরেজরাই বিখ্যাত পর্তুগিজ বাণিজ্যক্ষেত্র কালিকটের অনুসরণে এই নতুন শহরের নাম দেয় KALIKATA। ইউরোপে তখন কালিকটের খ্যাতি তুঙ্গে। মেড ইন KALIKATA বললে ইউরোপের বাজারে জিনিস ভালো বিকোয়। তবে এই মতের পেছনে তথ্য তেমন জোরালো নেই। সেখানে মিসেস হোয়াইয়ের দীর্ঘশ্বাসময় প্রশ্ন ছিল, "হোয়াই ক্যালকাটা ইজ ক্যালকাটা"? মিস্টার বিকজ সেখানে "আই ডু নট নো" ছাড়া আর কিছু বলতে পারেননি।
আসলে না, কলকাতার জন্মদিন বা প্রাচীনত্ব নিয়ে এই ঝামেলার কোনও মানে হয় না। এ কথা অনস্বীকার্য সুতানুটির পারে সাহেবজাদার নেমে আসার দিনটির আগেও কলিকাতা নামটা অন্তত ছিল। কত আগে থেকে সেই নাম ছিল তা নিয়েই যত তর্ক। কিন্তু ১৬৯০এর ২৪ শে আগস্টের আগে থেকেই যে সে নাম ছিল, এ তর্কাতীত।তবে সেদিনই শহর কলকাতার জন্মের একটা আভাস দেখা গিয়েছিল।
ছবির হদিশঃ নতুন তথ্যের আলোকে কলকাতা, হরিপদ ভৌমিক, পারুল প্রকাশনী, ২০০০
আর সেই আভাস আরও স্পষ্ট হয় ১৬৯৮ এর ১০ই নভেম্বর। কিন্তু কলকাতা একদিনে গড়ে ওঠেনি। আস্তে আস্তে ব্রিটিশ বেনিয়াদের হাতেই অন্তত গোলদীঘি থেকে পার্ক স্ট্রিটের কলকাতা প্রাচ্যের সব থেকে সুন্দর শহরে পরিণত হয়। শঙ্খ ঘোষ তো হালে লিখেছেন, "এ কলকাতার মাঝে আছে আরেকটা কলকাতা"। সেদিনও কিন্তু শ্বেতাঙ্গদের কলকাতা আর কৃষ্ণাঙ্গদের কলকাতা এক ছিল না। স্পষ্টতই কলকাতা দুইভাগে বিভক্ত ছিল। কোনো খানে বড়ো বড়ো অট্টালিকা, কোনও খানে অপরিকল্পিত ঘিঞ্জি বাড়ি। কোথাও বড়ো বড়ো রাস্তা আর কোথাও অন্ধ গলিখুঁজি। তবে কলকাতা মানে তো শুধু ইঁট কাঠ পাথরের কয়েকটা অবয়ব নয়। কলকাতার জমির অধিকার যাঁদের ছিল কলকাতা কি তাঁদেরও? 'বঙ্গীয় সাবর্ণ কথা ও কালীক্ষেত্র কলিকাতা' বইয়ে ভবানী রায়চৌধুরী কলকাতার জন্মে চার্নকের ভূমিকাকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাঁর মতে যে সমস্ত গবেষক কলকাতার সূচনাবিন্দুতে জোব চার্নকের ভূমিকাকে গুরুত্ব দিতে চান, তাঁরা "এখানকার আদি বাসিন্দা এবং আদি জমিদারদের কথা লিখতে ভুলে গিয়েছেন অথবা সজ্ঞানে এড়িয়ে গিয়েছেন"। কিন্তু চার্নকের মতোই কলকাতার আদি জমিদাররাও কিন্তু কলকাতার জনক নন। ভূমির অধিকার দিয়ে কলকাতার অধিকার পাওয়া যায় না। কলকাতা শেষ পর্যন্ত গ্রাম পরগণা থেকে একটা আধুনিক শহরে পরিণত হয়েছিল, কলকাতার ভূমির মালিকানাও বদলেছিল। এ সমস্তই ঐতিহাসিক সত্য। কিন্তু ভূমির মালিকানা দিয়ে কলকাতার সত্ত্ব নির্ধারিত হয়না। কারণ কলকাতা কেবল একটা ভূমিখন্ড নয়।
কলকাতা কলকাতা হতে শুরু করে উনিশ শতকের তথাকথিত নবজাগরণের সময় থেকে। সেদিন থেকেই এই শহর প্রেমের শহর , প্রতিবাদের শহর, রাজনীতির শহর, মিছিলের শহর, ধর্মঘটের শহর, আড্ডার শহর, সংস্কৃতির শহর। কলকাতার বয়স নিয়ে মারপিট করার তাই কোনও মানে হয় না। কলকাতার জন্ম কি আজকেও শেষ হয়েছে? যেদিন রবীন্দ্রনাথ কলকাতার রাস্তায় নেমে হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সবার হাতে রাখি পরিয়ে দেন সেদিন কলকাতার জন্ম হয়নি? যেদিন প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে অগুনতি ছাত্র হোক কলরব বলে কলকাতায় মিছিল করেছিল সেদিন কলকাতার জন্ম নয়? আর যেদিন বিদ্যাসাগরের মূর্তিভাঙার প্রতিবাদে মিছিল হয়েছিল সেইদিন! কলকাতা আসলে রোজ জন্মায়। কলকাতার জন্মের কোনও শেষ নেই। তাই যেকোনো দিন কলকাতার জন্মদিন পালন করা যায়। শুভ জন্মদিন কলকাতা।
এই লেখাটার তথ্য আমি নিচের বইগুলো থেকে টুকেছি। এই বইগুলো থেকে আরও টোকার সম্ভাবনা রয়েছে।
কলিকাতা দর্পণ ,প্রথম পর্ব, রাধারমণ মিত্র, সুবর্ণরেখা, ১৯৫২।
কলিকাতার কাহিনী , সুকুমার সেন,আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি., ১৯৯০।
বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস, সুকুমার সেন, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি., ১৯৯১।
শ্রীপান্থের কলকাতা, ত্রিবেণী প্রকাশন।
নতুন তথ্যের আলোকে কলকাতা, হরিপদ ভৌমিক, পারুল প্রকাশনী, ২০০০।
কলকাতার সৃষ্টি ও জব চার্নক, পি তৎকপ্পন নায়ার, এম. এল. দে এন্ড কোং, ১৩৯১।
কলিকাতার ইতিহাস- বিনয়কৃষ্ণ দেব(শ্রী সুবল চন্দ্র মিত্র সংকলিত), বাঙ্গালী- ইলেক্ট্রো-মেশিন প্রেস, ১৩১৪।
বঙ্গীয় সাবর্ণ কথা ও কালী ক্ষেত্র কলিকাতা- ভবানী রায় চৌধুরী, মান্না পাবলিকেশন, ২০০৬।
[ পোস্টারঃ অর্পণ দাস ]
#কলকাতা #নিবন্ধ #কলকাতার জন্মদিন #বিবস্বান দত্ত