স্ত্রী-র ক্ষত সারাতে গিয়ে আবিষ্কার : শতবর্ষ পেরিয়ে আজও অপরাজিত ‘ব্যান্ড-এইড’
'প্রত্যেক সফল পুরুষের সাফল্যের পিছনে থাকে একজন নারী'। এই আপ্তবাক্য কম-বেশি সকলেরই জানা এবং এর বাস্তব উদাহরণও নেহাত হাতে গোনা নয়। কিন্তু, স্বামীর সাফল্যের শিখরে পৌঁছনোর কারণ স্ত্রী-র ক্ষত, এমন কথা সচরাচর শোনা যায় না। এমন অনুপ্রেরণা বোধহয় কেউ পেতে চাইবেনও না। তবে আমাদের অতি পরিচিত প্রায় নিত্য ব্যবহার্য একটি জিনিস আবিষ্কারের নেপথ্যে দায়ী ছিল এমনই একটি ঘটনা। আজ্ঞে হ্যাঁ, ‘ব্যান্ড-এইড’-এর জন্ম হয়েছিল এভাবেই।
বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকের গল্প। আমেরিকার নিউ জার্সির এক মহিলা জোসেফিন নাইট গৃহস্থালীর কাজে বিশেষ দড় ছিলেন না। ঘরের বিভিন্ন কাজে, বিশেষত সবজি কাটতে গিয়ে প্রায়শই তিনি হাত কেটে ফেলতেন। তাঁর স্বামী আর্ল ডিকসন চাকরি করতেন বিখ্যাত জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানিতে। স্ত্রী-র এই সমস্যা দেখে তার সুবিধা করার জন্য আর্ল জনসন কোম্পানিরই দুটি পণ্য গজ আর টেপ একসঙ্গে জুড়ে ক্ষুদ্রায়তন একটি ব্যান্ডেজ তৈরি করলেন। এই নতুন ধরনের ব্যান্ডেজটি ব্যবহার করা সহজ এবং কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এটি ব্যবহার করা যেত। আর এভাবেই জন্ম হল আমাদের সবার চেনা 'ব্যান্ড-এইড'-এর, যা দিনে দিনে শুধু জোসেফিনের নয়, তার বাড়ির চৌকাঠ ডিঙিয়ে সারা বিশ্বের লোকের কাটাছেঁড়ার উপশম করবে - হয়ে উঠবে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে একটা।
আরও পড়ুন : বিল গেটসের ‘THINK WEEK’ হতে পারে আপনারও ভালো থাকার মন্ত্র
নিজের এই আবিষ্কারে জোসেফিনের রীতিমতো উপকার হচ্ছে দেখে আর্ল জনসন কোম্পানির কর্তা জেমস উড জনসনকে এই ব্যান্ডেজটির বিষয়ে জানান। জেমস উড জনসনের এই নতুন ধরনের ব্যান্ডেজটি ভালো লাগে। তিনি এটি বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেন। এরপর বেশ কিছুদিন ধরে জনসন কোম্পানিতে এই ব্যান্ডেজ নিয়ে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের উপযুক্ত রূপ দেওয়া হয়। ১৯২৪ সালে জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানির পণ্য হিসাবে আর্ল ডিকসনের মস্তিষ্কপ্রসূত এই আঠাযুক্ত ব্যান্ডেজ 'ব্যান্ড-এইড' নাম নিয়ে বাজারে আসে। নতুন এই পণ্যটি বাজারে আসার কিছুদিনের মধ্যেই প্রভূত জনপ্রিয়তা পায় এবং ক্রমে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে ও সমাদৃত হয়। ১৯২o সালে ব্যান্ড-এইড প্রথমবার বাজারে এসেছিল। গত বছর শতবর্ষ পেরোনো এই জনপ্রিয় মেডিকেল পণ্য আজও একইরকম অপ্রতিদ্বন্দ্বী।