সে, নিষ্পেষণে…
১ এমনকি গোধূলিটিও হারিয়েছিকেউ দ্যাখেনি তো এ সন্ধেতে আমাদের হাতে মিলল হাত যখন নীলাভ রাত্রি নেমে এল মাটির ওপর নিজস্ব জানলা থেকে দেখে গেছি দূরগামী পাহাড়চূড়ায় সূর্যাস্তের সমারোহ এবং কখনও খচিত মুদ্রার মতো টুকরো ভেঙে যাওয়া সূর্য করতলে জ্বলে উঠল, এঁকে দিল দাগ
২ পড়ল মনে তোমায়, আমার আত্মা দিয়ে আঁকড়ে ধরামুঠোয়, আমার বিষণ্ণতায় - তোমার জানাকোন অঞ্চলে ছিলে তখন? আর কে ছিল তোমার কাছে? কী বলছিল? কেনই বা প্রেম নামল এমন সমগ্রতায়যখন আমি বিষণ্ণ, তুই দূরের আকাশ? বইটি নেমে আসল, যে বই গোধূলিতে বন্ধ হত সর্বদা, সব সন্ধেখেলা এবং আমার নীল সোয়েটার পায়ের পাতায় গুটিয়ে এল নির্বিবাদে, যেমন কোনও ক্ষুব্ধ কুকুর। সমস্তক্ষণ, সমস্তক্ষণ সন্ধে বেয়ে তোমার নামা গোধূলিতে, লুপ্ত করে পাথরপ্রমাণ!
[পাবলো নেরুদা:
প্রখ্যাত স্প্যানিশ কবি, কূটনীতিজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ্। তেরো বছর বয়স থেকে কবিতা লিখতে শুরু করেন। কমিউনিস্ট মতাদর্শে বিশ্বাসী নেরুদা লেখার ক্ষেত্রে চেতনপ্রবাহী রীতি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ইস্তেহারধর্মিতা – সবরকম আঙ্গিক নিয়েই নিরীক্ষা চালিয়েছেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘কুড়িটি প্রেমের কবিতা এবং একটি হতাশার গান’, ‘এ পৃথিবীর আবাসভূমি’, ‘প্রাণের স্পেন’, ‘চিলির পাথর’, ‘ক্যাপ্টেনের কবিতা’, ‘শীতের বাগিচা’ প্রভৃতি। তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন ১৯৭১ সালে। ১৯২৭ সালে চিলির সরকার তাঁকে রাষ্ট্রদূত করে রেঙ্গুনে পাঠায়। এই পদে থেকে তিনি চিন, জাপান, কলম্বোসহ ভারতেও আসেন। চিলিতে অগাস্তো পিনোচেতের নেতৃত্বাধীন সামরিক অভ্যুত্থানের সময় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভরতি হন এবং তার তিনদিন পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোক গমন করেন।
ওপরের কবিতাটি তাঁর ‘Clenched Soul’ কবিতাটির অনুসৃজন। অনূদিত অংশটিকে অনুবাদের প্রয়োজনে দুটি পৃথক ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যা মূল কবিতায় অনুপস্থিত।]
অলংকরণ : বিবস্বান
#পাবলো নেরুদা #সৃজিতা সান্যাল #অনুবাদ