পায়রা থেকে ইন্টারনেট : সংবাদ-সংস্থা রয়টার্সের গল্প
বিশ্ববিখ্যাত সংবাদ-সংস্থা রয়টার্সের নাম সকলেই জানেন। বহু জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের খবর বা ছবির ওপর নির্ভর করেন। এই রয়টার্সের শুরু কিন্তু আজ থেকে প্রায় একশো বাহাত্তর বছর আগে। প্রতিষ্ঠাতার নাম পল জুলিয়াস রয়টার। পায়রা দিয়ে যে-সংস্থার যাত্রা শুরু হয়েছিল, আজ ইন্টারনেট-যুগেও সে-জয়যাত্রা অব্যাহত।
জন্মসূত্রে জার্মান জুলিয়াস রয়টার প্রথম জীবনে বার্লিনের একটি ব্যাঙ্কে কেরানি ছিলেন। চাকরি ছেড়ে বইয়ের ব্যবসায় নামেন। তারপরে সংবাদ সরবরাহের ব্যবসার কথা তাঁর মাথায় আসে। ফ্রান্সের টেলিগ্রাফের লাইন তখন বেলজিয়ামের ব্রাসেলস পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। অন্যদিকে জার্মানির টেলিগ্রাফের লাইন শেষ হয়েছে আকেনে এসে। ব্রাসেলস থেকে আকেন - এই একশো মাইল দূরত্বে খবর আদান-প্রদানের কোনও ব্যবস্থা নেই। জুলিয়াসের ব্যবসায়িক বুদ্ধি ছিল। তিনি আকেনে একটা অফিস খুলে সংবাদ সরবরাহের কাজ শুরু করে দিলেন। শুরুতে পায়রা ছিল তাঁর পিয়ন। ব্যবসা কিছুদিন ভালোই চলল। তবে অচিরেই ব্রাসেলস থেকে আকেন টেলিগ্রাফ লাইন বসল। ফলে জুলিয়াসকে সেখান থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হল। তাতে অবশ্য তিনি দমলেন না। নতুন ব্যবসার দিকেও পা বাড়ালেন না। আসলে জুলিয়াস খবরের মধ্যে ব্যবসার গন্ধ পেয়ে গিয়েছিলেন। তিনি চলে এলেন লন্ডন। ১৮৫১ সালে লন্ডনে খুললেন অফিস। খুব অল্প সময়েই ফুলেফেঁপে উঠল রয়টার্স। ১৮৯৯ সালে জুলিয়াস মারা যান। ততদিনে রয়টার্স খবরের এজেন্সি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। শতাব্দী পার করে রয়টার্স আজ পৃথিবীর বৃহত্তম সংবাদ-সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। ২০০৮ সালে কানাডার ব্যবসায়ী সংস্থা থম্পসন কর্পোরেশন রয়টার্সকে অধিগ্রহণ করেছে। এখন রয়টার্সের সঙ্গে প্রায় আড়াই হাজার সাংবাদিক ও ছশো চিত্রসাংবাদিক কাজ করেন।
...............