বডি (প্রথম কিস্তি)
........................
প্রথম কিস্তি
.....................
(আলো জ্বললে দেখা যাবে, একজন খাটে মাথায় বালিশ দিয়ে চাদর গায়ে ঘুমিয়ে, আর একজন মাটিতে মাথায় একটা থলি দিয়ে ঘুমিয়ে। একটু পরে খাটের লোকটা পাশ ফিরে একটা হাই তোলে। নিচের লোকটাও হাই তোলে। আচমকা দুজনেরই ঘুম ভেঙে যায়, আর পরস্পরকে দেখে ভয়ানক চমকে ওঠে তারা। খাটে শুয়ে থাকা প্রীতম বালিশ আঁকড়ে পিছিয়ে যায় খানিকটা। আর নিচে শুয়ে থাকা কালু থলিটা বুকে জড়িয়ে ধরে দৌড়ে ঘরের এক কোণে গিয়ে দাঁড়ায়। দুজনেই সন্ত্রস্ত)।
প্রীতম।। কে? কে? কে তুই?
কালু ।। আপনি কে?
প্রীতম ।। আমি কে? হতচ্ছাড়া! আমার বাড়িতে ঢুকে আমাকেই জিজ্ঞেস করা আপনি কে?
কালু ।। ও! প্রীতমবাবু! আপনার মুখটা এরকম ঝুনো নারকেলের মতো লাগছে কেন? ও বুঝেছি। চশমাটা পরেননি। তা সারাক্ষণ চশমা পরে থাকেন, হঠাৎ একদিন চশমা না পরলে লোকে চিনবে কী করে শুনি?
প্রীতম।। আমি তো ঘুমোচ্ছিলাম। চশমা পরে কেউ ঘুমোয়? ছাগল কোথাকার! তুই কে?
কালু ।। আমি কালু।
প্রীতম।। কে কালু? আমার ঘরে কী করছিস?
কালু ।। এই একটু চোখটা লেগে এসছিল, তাই একটু গড়িয়ে নিলাম। আপনার ঘরটাও বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা কি না। দক্ষিণদিকে জানলা। হাওয়ায় একেবারে উড়িয়ে নিয়ে যায়। আহা! পুরনো বাড়ির এই বড় বড় জানলাগুলো আমার ভারি ভাল্লাগে। পুরনো বনেদি বাড়ির ব্যাপারই আলাদা।
প্রীতম।। এখানে কী করছিস? ঢুকলি কী করে এখানে?
কালু ।। অতবড় জানলা থাকতে আর কোথা দিয়ে ঢুকব? ওই দেখুন না, গ্রিল কেটেছি। আমি চলে গেলে সারিয়ে নেবেন মনে করে।
প্রীতম।। এত সাহস! জানলা দিয়ে ঢুকেছিস?
কালু ।। অদ্ভুত কথা বলেন! না তো কি রাতবিরেতে কলিং বেল বাজিয়ে আপনাকে ঘুম থেকে তুলে ঘরে ঢুকব?
প্রীতম।। চুরি করতে ঢুকে আবার বড় বড় কথা! বাহাদুর! বাহাদুর! (প্রীতম কালুকে দু-হাতে জাপটে ধরে চেঁচাতে লাগল) চোর! চোর!
কালু ।। আরে আরে ছাড়ুন! কাতুকুতু লাগছে। ছাড়ুন। (নিজেকে ছাড়িয়ে প্রীতমের মুখ চেপে ধরে) বাহাদুরকে এখন ডেকে লাভ নেই। বাহাদুর খেয়েদেয়ে রাত্তির এগারোটার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে, উঠতে উঠতে নটা। নটা বাজতে এখনও ঘণ্টা তিনেক।
প্রীতম ।। ঘুমিয়ে পড়ে? ঘুমিয়ে পড়ে মানে? ওর তো রাতে পাহারা দেবার কথা।
কালু ।। না না, রাগ করবেন না। রোজ ঘুমায় নাকি? মাঝে মাঝে একেকদিন পাহারাও দেয়।
প্রীতম ।। ব্যাটাকে আজই দূর করব! (দরজার দিকে এগোয়। কিন্তু কালু পথ আটকায়)।
কালু ।। কেন গরিবের পেটে লাথি মারবেন স্যার? ছেড়ে দিন না। আপনার ঘরে তো আর চোর-ডাকাত পড়েনি! বাহাদুরের চেহারা দেখেই চোর-ডাকাত এদিকে ঘেঁষে না! উগান্ডার মোষের মতো চেহারা একখানা!
প্রীতম ।। চোর-ডাকাত এদিকে ঘেঁষে না? তাহলে তুমি কী করে এলে?
কালু ।। আরে বাবা আমি তো আর চোর ডাকাত নই! আমি একটা জিনিস খুঁজতে এসেছিলাম। এসে ফ্রিজ খুলে দেখলাম খাবারদাবার সাজানো, আপনি খাননি, আমি ভাবলাম রেখে কী হবে, খেয়েই নিই। না হলে তো ফেলাই যাবে। কিংবা বাসি জিনিসপত্তর খেয়ে আপনার পেট খারাপ করবে! তাই খেয়ে নিলাম। হাফ পাউন্ড পাউরুটি, এক বাটি পোলাও, এক বোতল দুধ আর একটা পেয়ারা। ও, একটা আদ্ধেক চকোলেট ছিল, সেটাও খেয়েছি। ওভাবে তাকাচ্ছেন কেন? আপনার উপকারই তো করলাম। সঙ্গে আমারও উপকার হল। হে হে। খেয়েদেয়ে ঢকঢক করে খানিকটা জল খেয়ে নিলাম। তারপরেই চোখটা লেগে এল। হাওয়াও দিচ্ছিল বেশ।
প্রীতম ।। হতচ্ছাড়া! সব খেয়ে নিয়েছিস? আমি ব্রেকফাস্টে কী খাব?
কালু ।। মোবাইলে একটা টিপুনি দিলেই তো ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়ে যাবে স্যার। মন ছোটো করবেন না।
প্রীতম ।। সাহস কম না। আমার ঘরে চুরি করতে ঢুকেছিস আবার মুখে মুখে তর্কও করছিস? এখনই পুলিশে ফোন করছি।
কালু ।। আরে স্যার বসুন না। কথায় কথায় এত উত্তেজিত কেন হয়ে পড়েন বলুন তো? বলছি তো, আমি চুরি করতে আসিনি। আমি অতি নিরীহ ভদ্রসন্তান স্যার। নিতান্ত দায়ে পড়ে আপনার ঘরে ঢুকেছি। আমি আসলে একটা জরুরি জিনিস খুঁজছি।
প্রীতম ।। আমার ঘরটা তোর জরুরি জিনিস খোঁজার জায়গা? অ্যাই! অ্যাই ব্যাটা! ওই ব্যাগটায় কী নিয়েছিস রে? কী চুরি করেছিস বল।
কালু ।। এইটায়? জামাকাপড় আছে। ছেলের জন্য একটা জামা, আর মেয়ের জন্য একটা টপ। গতবার পুজোয় কিছু দিতে পারিনি। কথা দিয়েছিলাম, এবার পুজোয় যে করে হোক, দেবই।
প্রীতম ।। ওগুলোও নিশ্চয়ই কোথাও থেকে চুরি করেছিস?
কালু ।। আজ্ঞে না। কিনেছি। সস্তা। কিন্তু পয়সা দিয়েই কেনা। আমি চোর নই স্যার। ওরকম মুখ কুঁচকাচ্ছেন কেন? গরিব বলে হতচ্ছেদ্দা করবেন না। কারও কারও কাছে আপনিও তো গরিব। আপনার একদিনের রেস্টুরেন্টের খরচা দিয়ে আমার সারা মাস চলে যায়। আবার মুকেশ আম্বানির ছেলে আর ছেলের বউ বিয়ের সময় চুলে যে ছাঁট দেবে, সেই খরচা দিয়ে আপনার মেয়ের গোটা বিয়েটাই হয়ে যাবে।
প্রীতম।। বেশি বাতেলা দিয়ো না। সাতসকালে তোমার এইসব কেত্তন শুনব বলে বসে আছি আমি? চুরি করোনি তো কী? চুরি করে ঘরে ঢুকেছ। চুরি করে খাবার খেয়েছ। সেগুলো কি চুরির চেয়ে কম কিছু? তোমাকে আমি পুলিশে দেব।
কালু।। সে দিতেই পারেন। তার সঙ্গে তো আমার চুরি করা না করার কোনও সম্পর্ক নেই! চুরি করলেও দিতে পারেন, না করলেও দিতে পারেন। এই তো সেদিন, খুন করল বিষ্ণু সামন্ত, পুলিশ তুলে নিয়ে গেল নির্মল হালদারকে। আমাদের বস্তির ফুচুকে চেনেন?
প্রীতম।। না। আমি কী করে চিনব?
কালু ।। তাই তো, আপনি কী করে চিনবেন! সে যাই হোক, যেটা বলছি সেটা হচ্ছে, ফুচু তো এই করেই খায়। যাকে বলে পেশাদার আসামি।
প্রীতম।। পেশাদার আসামি আবার কী!
কালু ।। দুনিয়ার কোনও খবর রাখেন না স্যার। (মৃদু গলায়) শুধু ওপরওয়ালার জুতোর খবর… যাক গে সেসব কথা…।
প্রীতম ।। কী? ওপরওয়ালার কী?
কালু ।। কিছু না, কিছু না, বলছিলাম, নীলু হাজরাকে চেনেন তো?
প্রীতম।। গুন্ডা নীলু হাজরা?
কালু ।। হ্যাঁ?
প্রীতম ।। হ্যাঁ, চিনি।
কালু ।। নীলু হাজরা ফি-বছর একটা করে খুন করে জেলে যায় জানেন তো?
প্রীতম।। হ্যাঁ, সে তো সবাই জানে।
কালু ।। সবাই সবটা জানে না। নীলু হাজরা জেলে যায় বটে, কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যে বেরিয়েও যায়। ব্যস্ত মানুষ কিনা। কত কাজ। জেল খাটার সময় কই! তার জায়গায় কে জেল খাটে জানেন? আমাদের ফুচু।
প্রীতম।। এরকম আবার হয় নাকি?
কালু ।। মা কালীর দিব্যি খেয়ে বলছি। ফুচুর তো জেলের লপসি খেতে খেতে এমন অবস্থা হয়েছে এখন মায়ের রান্না আর মুখেই রোচে না। যাক গে কথাটা পাঁচকান করবেন না যেন। ফুচুর কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে।
প্রীতম।। বাজে কথা ছাড়ো। যতসব উলটোপালটা গল্প দিচ্ছে! তুমি ভালোয় ভালোয় এখান থেকে যাবে কি না বলো! আমি কিন্তু পুলিশ ডাকব এবার।
কালু ।। উফফ! দাঁড়ান দাঁড়ান! অত তাড়া দেবেন না! শরীরটা একটু কেমন-কেমন করছে! একটু হজমি হবে?
প্রীতম।। তা পোলাওয়ের পর দুধ, তারপর পেয়ারা খেলে তো শরীর কেমন করবেই। ইডিয়ট কোথাকার!
কালু ।। ঠিকই বলেছেন, খাওয়াটা একটু এদিক-ওদিক হয়ে গেছে। খুব খিদে পেয়ে গেছিল তো।
প্রীতম।। এরকম ছোঁচা টাইপের লোক জীবনে দেখিনি!
কালু ।। ছিঃ, কারও খাওয়া নিয়ে ওরকম বলতে আছে স্যার?
প্রীতম।। আবার জ্ঞান দিচ্ছ! মারব এক চড়!
কালু ।। সরি স্যার, তবে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন মাঝে মাঝে কায়দা করে অল্প একটু আত্মপরিচয় দিতে হয়। সরাসরি না, কায়দা করে। অবশ্য দেখতে হবে যাতে আত্মপ্রচার না হয়ে যায়। কিন্তু একটু একটু আত্মপরিচয় দিতে হয় স্যার। এই দেখুন না, আমি দুটো-একটা ভালো ভালো কথা বললাম বলেই না আপনি কেমন নিজের অজান্তেই টুক করে ‘তুই’ থেকে ‘তুমি’-তে উঠে এলেন?
প্রীতম।। অমনি নিজের কথাটা রবীন্দ্রনাথের নামে চালিয়ে দিলি!
কালু ।। এ-তো হামেশাই হচ্ছে স্যার। পাড়ার বল্টুদার কথা হুমায়ুন আহমেদের মুখে, অফিসের ঘোষবাবুর কথা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মুখে, ভাজপার আইটি সেলের কথা স্বামী বিবেকানন্দের মুখে- এ তো হামেশাই হচ্ছে। আমার আসলে একটু রবীন্দ্রনাথের প্রতি একটা ইয়ে আছে। সুন্দর কথা মাথায় এলেই মনে হয়, রবীন্দ্রনাথ এত দিস্তে দিস্তে লিখেছেন, এই কথাটা কি আর লিখে যাননি?
প্রীতম।। মহা ত্যাঁদড় তো! বকে বকে মাথা ধরিয়ে দিল! কী করতে এসেছিস সেটা বলবি?
কালু ।। এই! দেখেছেন! দেখেছেন! কেমন ইগো! অমনি ‘তুই’-এ নেমে এলেন! মাঝখানে যারা থাকে তাদের এই হচ্ছে মুশকিল! ইগো! সম্মান! কথায় কথায় সম্মানে লেগে যায়! এসব ঠুনকো ব্যাপার বড়লোকের নেই, গরিবেরও নেই!
প্রীতম।। কী করতে এসেছেন সেটা বলবেন স্যার?
কালু ।। সেইটাই তো বলতে চাইছি। আপনি বলতে দিচ্ছেন কই। এ-কথা সে-কথা বলে খালি গুলিয়ে দিচ্ছেন।
প্রীতম।। আমি গুলিয়ে দিচ্ছি?
কালু ।। তা আপনি ছাড়া এখানে আছেটা কে?
প্রীতম।। শাট আপ! তুমিই তো উলটোপালটা কথা বলে আমার সব গুলিয়ে দিচ্ছ! আমার ঘরে ঢুকে বসে আছ, আবার আমার ওপরেই চোটপাট করে যাচ্ছ! আর আমার এরকম ইয়ে কেন হচ্ছে কে জানে! আমি যে কেন লোক ডাকছি না! আমি এখনই...
কালু ।। আস্তে আস্তে! বসুন! কথায় কথায় আপনি লোক ডাকেন কেন বলুন তো? এত উত্তেজনা কি শরীরের পক্ষে ভালো? গিন্নি বাপের বাড়ি গেছেন, এর মধ্যে শরীর-টরির খারাপ হলে কে দেখবে?
প্রীতম।। আমার শরীর আমি বুঝব! তুমি এর মধ্যে নাক গলাবে না! (হঠাৎ থমকে) এক মিনিট! তুমি কী করে জানলে আমার গিন্নি বাপের বাড়ি গেছে?
কালু ।। এ আর না জানার কী আছে? এটা কি নেতা-মন্ত্রীদের সুইস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর নাকি, যে কেউ জানতে পারবে না? গিন্নি তো শুক্রবার ফিরবেন? তা এই কদিন রাতের খাবার রোজই ওই কস্তুরী থেকে আসবে বুঝি?
প্রীতম।। এত খবর তুমি জানলে কী করে?
কালু ।। এ আর এমন কী! মাল্লুর খবর বলব? আপনার বিছানায় মাথার দিকের তোশকের নিচে আপনার মানিব্যাগ রাখা আছে। হাজার চারেক রয়েছে। আলমারির চাবিটা কিন্তু আপনি দারুণ জায়গায় রাখেন। খাটের নিচে ভাঙা জলের কুঁজোর মধ্যে। কারও মাথায় আসবে না। আলমারিতে অবশ্য ক্যাশ খুবই কম আছে। মাত্র হাজার তিরিশেক। হ্যাঁ আমার কাছে অনেকটাই। তারপর ওই দেরাজটায় একটা চামড়ার বটুয়ায় হাজার দশেক ক্যাশ রয়েছে। সব মিলিয়ে মোট পঁয়তাল্লিশ হাজারের কাছাকাছি ক্যাশ আছে এই ঘরে। দেখুন, চাইলেই কিন্তু চুরি করতে পারতাম! বললাম না স্যার, আমি চোর নই!
প্রীতম।। তুমি কে বলো তো! এত খবর তুমি জোগাড় করলে কী করে?
কালু ।। আরে এসব আবার জোগাড় করার মতো খবর হল? এসব তো মুড়ি-মিছরির মতো ছড়িয়েই আছে। চোখ কান একটু খোলা রাখলেই টের পাওয়া যায়। ছোট মুখে বড় কথা হয়ে যাবে স্যার, তবু বলি, আপনি যে মেটে রঙের জকির জাঙিয়া পরে অফিস যান, সেটা জানা কি খুব কঠিন? তারপর ধরুন, গত সপ্তাহে আপনার পেছনে একটা ফুসকুড়ি হয়েছিল সেটা খুঁটে দিয়েছেন বলে ঘা হয়ে গেছে, তাই আপনি চেয়ারে বসার সময় একটু এগিয়ে বসছেন, আর শোবার সময় চিত হয়ে শুচ্ছেন না- এ খবর কি ভাবছেন কেউ রাখে না?
প্রীতম।। আমার ফুসকুড়ির খবর সবাই জেনে গেছে?
কালু ।। না না, ভয় পাবেন না স্যার। সবাই কি আর জেনেছে?
প্রীতম।। তুমি এত কিছু খবর নিয়েছ, আবার বলছ চোর নও? নিশ্চয়ই অনেকদিন ধরে আমাদের বাড়ির দিকে নজর? অনেকদিন ধরে লক্ষ করছ? আচ্ছা তুমি কি কলের মিস্তিরি? কয়েকদিন আগে কাজ করতে এসেছিলে? মুখটা চেনা চেনা লাগছে মনে হচ্ছে। নাকি পেস্ট কন্ট্রোলের লোক?
কালু ।। আজ্ঞে না। আমি ও দুটোর কোনোটাই নই।
প্রীতম।। তাহলে তুমি কে?
কালু ।। আমি কালু। বললাম তো।
প্রীতম ।। চালাকি কোরো না। তুমি অতি ঘোড়েল লোক। আমি তোমার নাম জানতে চাইনি। তুমি কে সেটা বলো। আমার সম্পর্কে এত কথা জানলে কী করে?
কালু ।। আমি তো বলছি স্যার, আমি চুরি করতে ঢুকিনি। নিতান্ত বাধ্য না হলে কোনও ভদ্দরলোকের ছেলে এত রাতে অন্য কারও বাড়ি ঢোকে বলুন তো?
প্রীতম।। তাহলে কী করতে এসেছ?
কালু ।। একটা জিনিস খুঁজতে এসেছিলাম স্যার। খুঁজতে খুঁজতে খিদে পেয়ে গেল। খেলাম। খেয়ে আবার ঘুম পেয়ে গেল তাই একটু গড়িয়ে নিলাম।
প্রীতম।। কী জিনিস খুঁজছ শুনি?
কালু ।। বডি।
প্রীতম (অবাক হয়ে) ।। বডি? মানে?
কালু ।। হ্যাঁ, আমার বডিটা খুঁজছি। কোথায় যে গেল! বডি না পেলে বাড়ির লোক কী করে পোড়াবে? আর না পোড়ালে মুক্তি পাব কী করে বলুন?
[পরের কিস্তিতে সমাপ্য]
........................
অলংকরণ : বিবস্বান দত্ত