ওষুধ পরীক্ষায় পশুরা বলি হবে না : আইনবদল হলেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে
যে-কোনও ওষুধ কতটা কার্যকর হবে তা পরীক্ষা করার জন্য হিউম্যান ট্রায়ালের আগে অ্যানিম্যাল ট্রায়াল করা দীর্ঘকালের রীতি। এই প্রথায় প্রতি বছর কোল্যাটারাল ড্যামেজের শিকার হয় বহু জীবজন্তু। মানুষের কল্যাণের জন্য প্রাণ দিতে হয় ইঁদুর, গিনিপিগ থেকে বাঁদর, কুকুরের মতো স্তন্যপায়ী জীবেদের। ‘নিউ ড্রাগস অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রুলস’-এ এবার বেশ কিছু সংশোধন করে স্থায়ী বদল আনল ভারত সরকার। গত জুন মাসেই কাগজেকলমে এই বদল হয়েছে। প্রাণীদের প্রাণহানি ছাড়াই ওষুধ-পরীক্ষার স্থায়ী পদ্ধতি আনতে চায় সরকার।
এই সাবেকি পদ্ধতিতে ওষুধ যত না সাফল্য পায়, সেই অনুপাতে বিভিন্ন প্রাণীর প্রাণ যায় অনেক বেশি। ফলে এই সংক্রান্ত আইনের বদল আশু প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, "The Prevention of Cruelty to Animals Act" মেনেই তো প্রাণী-পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া কি উপযুক্ত পরীক্ষার পথ আছে কোনও? প্রাণীদের ওপর পরীক্ষা ছাড়া কি আদৌ চিকিৎসাবিজ্ঞান বা জীববিজ্ঞানের এত উন্নতি কি সম্ভব হত? এই পরীক্ষার আওতা থেকে মানবেতর প্রাণীদের বাদ দিতে গিয়ে কোথাও চিকিৎসাবিদ্যার অগ্রগতির সঙ্গে আপস করা হয়ে যাচ্ছে কি?
কিন্তু তবে কীভাবে পরীক্ষা করা হবে নতুন ওষুধ? বিগত কয়েক দশকে মানবদেহের স্টেম সেল বা স্টেম কোশের ব্যবহারে ত্রি-মাত্রিক সেলুলার কাঠামো তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন গবেষকরা, যা অর্গ্যানয়েড বা ‘মিনি অর্গ্যান’ নামে পরিচিত। থ্রি-ডি প্রিন্টার এবং বায়ো-ইঙ্কের সাহায্যে তৈরি কয়েক মিলিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের এই অণু-অঙ্গের ওপরেই পরীক্ষা করা হবে নতুন ওষুধ। তা হুবহু মানবদেহে ওষুধের ট্রায়ালের মতোই প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। বলে রাখা ভালো, গত কয়েক বছরে এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছে ইউরোপ, আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশ এমনকি দক্ষিণ কোরিয়াও।
কিন্তু আইনবদল হলেও তার প্রয়োগ এখনই সফলভাবে করা সম্ভব হবে কি?এই পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ। উপযুক্ত পরিকাঠামো যেমন প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন ভারতের ফার্মা কোম্পানিগুলির সদিচ্ছা। আইনের নজর এড়িয়েই অবলা জীবেদের নিয়ে অবাধে কাঁটাছেঁড়া চলবে না তো?
...............................
#Animal Trial #New Drugs and Clinical Trial Rule #Clinical Trial #Drugs #Medicines #silly পয়েন্ট