মিছিলের ডায়েরি থেকে ৫
সময় হলো। এবার থামতে হবে। ছাই জমে উপচে পড়ছে অ্যাশট্রে। শেষ সিগারেট ছেড়ে যাচ্ছে ধোঁয়া। আগুনের সঙ্গে ফিল্টারের দূরত্ব আর কয়েক টানের। এর মধ্যেই বলে যাব যাবতীয়। ফুরন্ত কলম চুঁইয়ে পড়বে তলানী শব্দ। নিজের কথাটুকু বলে যাব আরও একবার। তারপর? চিরঘুমের দুনিয়ায় নির্বাসন। আমার মধ্যে একটা ফাঁকা মাঠ আছে। শুধু ফাঁকা বললে ঠিক বোঝানো যাবে না , ন্যাড়া মাঠ বললে খানিকটা কাছাকাছি পৌঁছনো যায়। এর জন্যে আমি খানিকটা লজ্জায় লজ্জায় থাকি। ন্যাড়া মাঠ বয়ে বেড়াবার ফ্যাচ্যাং অনেক। মেঘ দেখলেই তার তেষ্টায় গলা কাঠ।কোনো দিনও সবুজ পাবে না জেনেও, নদীর পাড়ে বুড়ো বটের দিকে তাকিয়ে বুকে তুলছে ধুলোর ঝড়। কোনো মানে হয়! হাওয়ার দোষে ধূসর অঞ্চল ভারী হয়ে উঠছে সন্ধ্যায়। আকার পাচ্ছে স্মৃতি। আসলে স্মৃতির ভিতর আমরা নিজেকেই খুঁজি। ফিরে দেখি প্রতিবার। এরও কি কম ঝঞ্ঝাট ! সে যেন তুলনামূলক সাহিত্যের অভিমানী অধ্যাপিকা। চট করে কারুর সমস্তটা জুড়ে অনায়াসে জেঁকে বসে। অথচ সহজে খুশি হয় না। মাঝরাতে অবশ বুক ফাটিয়ে বেরিয়ে পড়তে চাইলে খুব মাথা ধরে। জোরে জোরে শ্বাস নিই, জল খাই, একটু হেঁটেও আসি, তবু বালিশে মাথা রাখলেই বুক ধড়ফড় । উঠে বারান্দায় এসে দাঁড়াই। নয়তো জানলা খুলি। দেওয়ালে পিঠ থেকে গেলে স্মৃতির সঙ্গে যুদ্ধে নামি। বেশিরভাগ সময়ই হেরে যাই। চুপ করে থাকি। এভাবেই চুপ থাকতে থাকতে সমস্ত রোদের মুখে ছাই ছড়িয়ে পেরোব অনেক দূরের পথ। যেখানে খুঁজতে এলে আধপোড়া নাভিচিহ্নটুকু সঙ্গে নিতে হয়।
#বাংলা #মুক্তগদ্য #শৌভিক মুখোপাধ্যায় #ডিসকোর্স