'ছুটির দিনলিপি' : একটি অন্যরকম ছবির বই
............
বই : ছুটির দিনলিপি
শিল্পী : কাজুও আজুমা
প্রকাশনা : পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি
...............
শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতীকে ঘিরে কয়েকজন বিদেশী মানুষের অবদান ভোলার নয়। অধ্যাপক, রবীন্দ্র-অনুরাগী কাজুও আজুমা তাঁদেরই মধ্যে একজন। রবীন্দ্রনাথ, বাঙালি ও বাংলাভাষা ছিল তাঁর সারা জীবনের আরাধনা। ঘনিষ্ঠমহলে পরের জন্মে বাঙালি হয়ে জন্মানোর ইচ্ছাও প্রকাশ করতেন। তিনি যে বেশ দক্ষ চিত্রশিল্পীও ছিলেন, তার প্রমাণ এই ছবির বই। মোট ছত্রিশটি ছবির সমন্বয়ে এই বইটি বেশ অভিনব একটি উদ্যোগ, সন্দেহ নেই।
কাজুও আজুমার স্ত্রী কেইকো আজুমার আন্তরিক প্রয়াসে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির উদ্যোগে এ-বই প্রকাশ পেয়েছে। শ্রীমতি আজুমা বইয়ের ভূমিকা লিখেছেন বাংলা ভাষায়। কাজুও ইয়োকোহামা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। রবীন্দ্রসাহিত্য ও দর্শনে আকৃষ্ট হয়ে স্বদেশ ছেড়ে চলে আসেন শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতীর অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন ১৯৬৭ সালে। অক্লান্ত পরিশ্রমে জাপানি অনুবাদে বারো খণ্ডে প্রকাশ করেন সমগ্র রবীন্দ্র রচনাবলী। জাপানে জাপান-ভারত রবীন্দ্র সংস্থা এবং কলকাতায় রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবন রূপায়ণে প্রধান ভূমিকা ছিল তাঁরই। এছাড়া শান্তিনিকেতনে 'নিপ্পন ভবন' তৈরি হয়েছিল তাঁরই চেষ্টায়। ২০১১ সালে তার জীবনাবসান হয়। এই ছবিগুলি তিনি এঁকেছিলেন জাপানে থাকাকালীন। জাপানে গরমের ছুটি পড়ে আগস্ট মাসে। কোন বছর ছবিগুলি আঁকা, তা অবশ্য জানা যায় না। গোটা আগস্ট মাস জুড়ে কাজুও গরমের ছুটির দিনগুলোকে এক-একটা ছবির মাধ্যমে ব্যক্ত করেছিলেন। ৩১ তারিখ ৪ টে ছবি পাওয়া যাচ্ছে। সেই ছবির খাতা থেকেই হয়ে উঠেছে এই বই। প্রতিটি ছবির সঙ্গে রয়েছে এক লাইন করে দ্বিভাষিক (জাপানি ও বাংলা ভাষায়) বিবরণ। জাপানি চিত্রকলার একটা ছাপ রয়েছে। তেমনই ধরা রয়েছে অলস, নির্ভার, ছুটি কাটানোর মেজাজ। জাপানের সে-সময়ের জীবনযাত্রাও বেশ খানিকটা ফুটে উঠতে দেখা যায় ছবিগুলোতে। এক কিশোরের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ছবিগুলো দেখা ও আঁকা। বইটির চমৎকার প্রচ্ছদ ও নামাঙ্কন করেছেন শ্রী সুব্রত মাজী। নামাঙ্কনে জাপানি লিপির ধাঁচ ধরার চেষ্টাটি খুব দৃষ্টিনন্দন। যাঁরা ছবি ভালোবাসেন, তাঁরা বইটি সংগ্রহ করতেই পারেন।
..................
#শান্তিনিকেতন #কাজুও আজুমা #Japan #Rabindranath Thakur #silly পয়েন্ট #Book Review