৬০০ একর বনভূমি সংরক্ষণ : দামোদর কাশ্যপের লড়াই ঠাঁই পেয়েছে পাঠ্যবইয়েও
পড়াশোনার জন্য গেছিলেন জগদলপুর। সেখান থেকে ফিরে এসে দেখেন, গ্রামের সবুজ বনের অনেকটাই চলে গেছে উন্নয়নের পেটে। ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলার সিন্ধুকমারি গ্রামের দামোদর কাশ্যপ সেদিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সবুজ ফিরিয়ে আনবেন গ্রামে। গত পাঁচ দশক ধরে সেই লক্ষ্যেই তিনি অবিচল রয়েছেন। সফলও হয়েছেন। একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বন সংরক্ষণ করতে পেরেছেন তিনি ও তাঁর সহযোগী গ্রামবাসীরা। দামোদর কাশ্যপের হার না মানার গল্প এখন জায়গা পেয়েছে ছত্তিশগড়ের নবম শ্রেণির সমাজবিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে।
দামোদরের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামেই। উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কর্মজীবন বাইরে কাটাতে চাননি। তাই স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে ১৯৭০ সালে ফিরে আসেন গ্রামে। তারপরেই, প্রায় ন্যাড়া হয়ে যাওয়া গ্রামকে দেখে বন সংরক্ষণের জন্য জীবন উৎসর্গ করে দেবার সিদ্ধান্ত নেন। গ্রামবাসীদের সে বিষয়ে সচেতন ও সংগঠিত করতে শুরু করেন। কর্মোদ্যোগী দামোদরকে ১৯৭৬ সালে গ্রামের প্রধান নির্বাচন করা হয়। তারপর আরও জোরকদমে শুরু করেন সবুজ সংরক্ষণ। তাঁর নেতৃত্বে সিন্ধুকমারি গ্রামের মানুষজন প্রায় ৬০০ একর বনভূমি গড়ে তুলতে পেরেছেন। এই বনভূমির ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে তাঁদের স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনীতি। বনভূমিকে ঘিরে তাঁরা প্রণয়ন করেছেন নিজস্ব নিয়মবিধি। বনভূমি পাহারা দেবার ব্যবস্থা রয়েছে। গাছ কাটলে মোটা জরিমানা দিতে হয়। তবে শুকনো, খসে পড়া ডাল ও পাতা সংগ্রহ করা যাবে। ৩৫ বছর ধরে গ্রাম-প্রধানের ভূমিকায় থাকা দামোদর কাশ্যপের নেতৃত্বে কার্যত বিপ্লবই করে ফেলেছে ছত্তিশগড়ের এই গ্রাম। আর তাকেই স্বীকৃতি দিয়ে ছত্তিশগড় সরকার ছোটোদের পাঠ্যবইয়ে জায়গা দিয়েছেন দামোদর ও তাঁর সহযোগীদের।
আরও পড়ুন : গাছের গায়ে যথেচ্ছ পেরেক আর ব্যানার : ক্ষত সারাচ্ছেন ওয়াহিদ সরদার / টিম সিলি পয়েন্ট
...................