ফিচার

রাষ্ট্রীয় অপশাসনের সাক্ষ্য ব্যঙ্গচিত্রে ধরে রাখছেন কার্টুনিস্ট সতীশ আচার্য

টিম সিলি পয়েন্ট May 2, 2021 at 4:23 am ফিচার

রাজনৈতিক সমালোচনার ক্ষেত্রে কার্টুন আবহমান সময় ধরে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি মাধ্যম হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে। গত কয়েক বছর ধরে মোদী-শাসনের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে একের পর এক ধারালো ব্যঙ্গচিত্র এঁকে সকলের নজর কেড়ে নিয়েছেন দক্ষিণ ভারতীয় কার্টুনশিল্পী সতীশ আচার্য। ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ কর্ণাটকের কুন্দাপুরায় তাঁর জন্ম। ভাণ্ডারকর কলেজ থেকে বি.কম. ডিগ্রি নেবার পর ম্যাঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.বি.এ করেন। তারপর মুম্বইয়ে একটি বিজ্ঞাপন সংস্থায় কিছুদিন কাজ করেন। কিন্তু কার্টুন আঁকায় মনোনিবেশ করবেন বলে সেই কাজ ছেড়ে দেন। ২০০৩ সালে মুম্বইয়ের একটি ইংরেজি পত্রিকা ‘Midday’-তে কার্টুনিস্ট হিসেবে যোগ দেন। ন বছর সেখানে কাজ করেছিলেন। ২০১৫ সালে চার্লি হেবদো-র ঘটনা নিয়ে সতীশ যে কার্টুনটি আঁকেন, তা তাকে গোটা বিশ্বে পরিচিতি এনে দেয়। Mail Today পত্রিকায় তিনি ফ্রিলান্স হিসেবে নিয়মিত কার্টুন আঁকতেন। মোদী-বিরোধী একটি কার্টুনকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালে মেল টুডে-র সম্পাদকের সঙ্গে তাঁর তীব্র সংঘাত হয়। ইন্দো-চিন সম্পর্ককে কেন্দ্র করে আঁকা সেই কার্টুনটি সম্পাদক দ্বৈপায়ন বোস ছাপতে রাজি ছিলেন না। শিল্পীর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে সতীশ পত্রিকার সঙ্গে সংযোগ ছিন্ন করেন। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে তিনি কিছু অপ্রকাশিত কার্টুন প্রকাশ করে তিনি জানান, সেগুলিও ইতিপূর্বে এই সম্পাদক নাকচ করেছিলেন। সম্পাদক নাকি অনেক ক্ষেত্রে তাঁকে মোদীর জায়গায় অন্য কোনও অ-গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি নেতার ছবি দিয়ে কার্টুন আঁকার প্রস্তাব দিতেন। সতীশ কোনওদিনই রাজি হননি। বিধিনিষেধ মেনে কার্টুন আঁকতে পারবেন না, এ কথা সতীশ সমাজমাধ্যমে স্পষ্ট করে জানান। তিনি বলেন, মোদী-সরকার মেল টুডে-কর্তৃপক্ষকে নত হতে বলেছিল। তারা আরও এক ধাপ এগিয়ে হামাগুড়ি দিচ্ছে। এই ঘটনার থেকে সতীশ আরও বেশি করে কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্নীতিকে আক্রমণ করে কার্টুন আঁকতে শুরু করেন। ২০১৮-১৯ সময়পর্বে ছোট-বড় প্রায় কোনও রাজনৈতিক দুরাচারই তাঁর ব্যঙ্গবাণ থেকে রেহাই পায়নি। নোটবন্দী, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, অর্থনীতির বেহাল দশা, কেন্দ্রীয় সরকারের একের পর এক ভ্রান্ত নীতি, পুঁজিপতিদের হাত শক্ত করা ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে মোদী-শাহের সরকারকে ধারাবাহকভাবে বিঁধে গেছেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে কোভিড পরিস্থিতিতে সরকারের ‘থালা বাজানো’-র নিদান বা পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবাণুনাশকে স্নান করানোর মতো ঘটনা কিংবা দিল্লিতে কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলন নিয়েও সতীশ কার্টুন এঁকেছেন। সোশাল মিডিয়ায় এসব কার্টুন তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। Gulf News, The Wall Street Journal, The Times, The Guardian ইত্যাদি বিখ্যাত পত্রিকাতেও তাঁর কার্টুন প্রকাশিত হয়েছে। শাসকের নির্লজ্জ আস্ফালন যখন সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে তখন অল্প যে ক’জন শিল্পী-বুদ্ধিজীবী শিরদাঁড়া সোজা রেখে শাসকের চোখে চোখ রাখার প্রতিস্পর্ধা দেখাচ্ছেন, সতীশ আচার্য তাঁদের একজন। রাজনৈতিক বিষয়ের পাশাপাশি সতীশ ক্রিকেট আর বলিউড নিয়েও বেশ কিছু কার্টুন এঁকেছেন। তাঁর বেশ কয়েকটি কার্টুন সংকলন বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে ভিআইপি ও আমজনতার প্রতিক্রিয়াকে কেন্দ্র করে আঁকা কার্টুনগুলির সংকলন 'GO CORONA GO',মোদী-সরকারের বিভিন্ন নীতিকে ব্যঙ্গ করে আঁকা কার্টুনের সংকলন 'CARTOON SARKAR!' কিংবা অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে আঁকা কার্টুনের সংকলন 'RUPEE OR NOT RUPEE' ইত্যাদি বইগুলি 'কালেক্টরস আইটেম' হিসেবে অসামান্য। পাঠকের জন্য আমরা সতীশ আচার্যের কয়েকটি কার্টুন এখানে সাজিয়ে দিলাম। এগুলি সতীশ আচার্যের নিজস্ব ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ এবং টুইটার হ্যান্ডল থেকে সংগ্রহ করা।
















 .....................................

[সমস্ত কার্টুন সতীশ আচার্যের নিজস্ব ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, টুইটার হ্যান্ডল এবং গুগল থেকে সংগ্রহ করা]  

#Satish Acharya #Cartoonist #Editorial Cartoonist #Political #Bjp #Narendra Modi #Amit Shah #সতীশ আচার্য #কার্টুনিস্ট #The Guardian #Gulf News #The Times #The Wall Street Journal #silly পয়েন্ট #সিলি পয়েন্ট

Leave a comment

All fields are required. Comment will appear after it is approved.

trending posts

newsletter

Connect With Us

today's visitors

44

Unique Visitors

219187