ভালো কাজ করলেই মিলবে খাবার : ঢাকার 'ভালো কাজের হোটেল'
খাবার খেতে লাগবে না কোনও টাকাপয়সা। শুধু কোনও একটা ভালো কাজ করতে হবে। করতে হবে কারও উপকার। তাহলেই জুটবে গরম সুখাদ্য। আজ্ঞে হ্যাঁ। ঢাকার ‘ভালো কাজের হোটেল’-এ খাবার পাবার এটাই নিয়ম।
"আপনি আজ কী ভালো কাজ করেছেন?" এই প্রশ্নের উত্তর দিলেই একজন স্বেচ্ছাসেবী খাদ্যপ্রার্থীর নামের পাশে তা লিখে নেবেন আর তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে খাবারের প্লেট। ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনের কাছেই এই অভিনব ‘ভালো কাজের হোটেল’। সঙ্গত কারণেই রোজ প্রচুর মানুষের লাইন পড়ে যায় হোটেলের সামনে। প্রতিদিন এভাবে ২০০ থেকে ২৫০ জনকে তাঁরা খাওয়ান। ভালো কাজ বলতে কিন্তু খুব বড়সড় কাজের দাবি করা হচ্ছে না। অন্ধ মানুষকে হাত ধরে রাস্তা পার করে দেওয়া বা পথকুকুরদের যত্ন নেওয়াও এই হোটেলে খাওয়ার বিনিময়মূল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
সপ্তাহে একদিন ২৫০ থেকে ৩০০ মানুষের খাবার সংস্থান করা থেকে শুরু হয়েছিল এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। উদ্দেশ্য ছিল দুঃস্থ মানুষজনের পাশে দাঁড়ানো। তারই সঙ্গে উদ্যোক্তারা জুড়ে দিয়েছিলেন ভালো কাজের বিষয়টি। করোনা-অতিমারির সময় সহায়-সম্বলহীন, কর্মহীন মানুষদের কথা ভেবে এই উদ্যোগকে নিয়মিত করে তোলার কথা ভাবেন তাঁরা। সেই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় 'ভালো কাজের হোটেল'। উদ্যোক্তারা ‘ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ’ নামের ফেসবুকভিত্তিক একটি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। হুমায়ুন আহমেদের একটি নাটকের কাহিনিই নাকি তাঁদের অনুপ্রেরণা। এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যপদ পেতে গেলে রোজ সংগঠনের তহবিলে ১০ টাকা করে জমা দিতে হবে। সদস্যদের চাঁদা থেকে মাসে প্রায় আশি হাজার টাকা সংগৃহীত হয়। তাই দিয়েই চলে হোটেলের কাজ। এই কয়েক বছরে ঢাকার ওই বিশেষ অঞ্চলের নিরন্ন মানুষের সম্বল হয়ে উঠেছে 'ভালো কাজের হোটেল'। পুঁজির শাসনকে অগ্রাহ্য করে এখনও এ-পৃথিবীর আনাচেকানাচে রূপকথা লেখা হয় তবে।
........................