ভারতে প্রথম কোনো নারীর নামে অরণ্য : বনকর্মী সরোজিনীকে অনন্য সম্মান ওড়িশা সরকারের
সবুজ কার্যত মুছে যেতে বসেছিল ওড়িশার বনাই অঞ্চল থেকে। খনিজ পদার্থ উত্তোলনের হিরিকে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল সেখানকার বাস্তুতন্ত্র। অবশিষ্ট অরণ্যভূমি বাঁচাতে বছরকয়েক আগে থেকে বনদপ্তর শুরু করেছিল ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। তাতে বনকর্মী হিসেবে শামিল হয়েছিলেন সরোজিনী মোহন্ত। ৪২ বছর বয়সী এই বনকর্মী অক্লান্ত পরিশ্রম করে নতুন জীবন দিয়েছেন এই অঞ্চলের অরণ্যকে। শুধু অরণ্যের দেখভাল করাই নয়, তিনি প্রায় তিন একর অনুর্বর জমিকেও নিয়ে এসেছেন অরণ্যের আওতায়।
ওড়িশার সুন্দরগড় জেলার বনাই মূলত খনিপ্রধান অঞ্চল। যথেচ্ছ খননের ফলে বিপন্ন হয়ে উঠেছে অরণ্য। তবে যেটুকু অরণ্য বন দপ্তরের আওতায় আছে, সেটুকুর অস্তিত্ব নিশ্চিত করতেই বেশ কিছু অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করেছিল বন দপ্তর। সরোজিনী তাঁদের মধ্যেই একজন। কিন্তু শুধু নিজের দায়িত্বটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি। সারাদিনের টহলদারি শেষ করে বিকেল হলে গাছের চারা ও কলম তৈরি করতেন তিনি সরোজিনী। নিজে হাতেই তৈরি করেছেন ভার্মি-কম্পোস্ট। দীর্ঘ দু-বছর ধরে তাঁর এই একান্ত পরিচর্যারই ফলাফল বনাই-এর জঙ্গলের মাঝে ৩ একরের এই ছোট্ট বন। গোটা অঞ্চল জুড়ে ছিল অনুর্বর ল্যাটেরাইট মাটি। এই ধরনের মাটিতে সাধারণত সহজে কোনো গাছ জন্মাতে চায়না। সরোজিনী অত্যন্ত পরিশ্রমের সাথে এই মাটিতেই গাছের চারা রোপণ শুরু করেন। চারা গাছে নিয়মিত জল দেওয়া থেকে শুরু করে তাদের যত্ন করা, সব দায়িত্ব তিনি সামলেছেন একা হাতে। বনাই-এর ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্ট বলছে, সরোজিনীর রোপণ করা চারাগুলির ৯৫ শতাংশই বেঁচে রয়েছে। এমনকি পরিণতও হয়েছে সেগুলি। সব মিলিয়ে প্রায় ৩২০০ প্রজাতির গাছপালা রয়েছে এখানে। সঙ্গে আরও চার একর জমির ওপরে বনায়নের কাজ শুরু করেছেন পেশায় দিনমজুর এই মহিলা।
আরও পড়ুন : চড়াইদের জন্য বাড়ি : চড়াই সংরক্ষণের জন্য লড়ছেন ব্যাঙ্গালোরের 'স্প্যারো-ম্যান'
সরোজিনীর এই একাগ্রতা ও পরিশ্রমকে শ্রদ্ধা জানাতেই ওড়িশা সরকার তাঁর নামেই নামকরণ করেছেন এই অরণ্যের। দৈনিক মাত্র ৩১৫ টাকা মজুরিতে কাজ শুরু করে আজ সরোজিনী মোহন্তের নামেই 'সরোজিনী বন'। ভারতে আর কোনও মহিলা এর আগে এমন সম্মান পাননি।
..................
ঋণ : inspiringodisha.com
#Sarojini Vana #Bonai forest division #পরিবেশ #অরণ্যরক্ষা #silly পয়েন্ট