মহিলাদের উদ্যোগে বিদ্যুৎহীন গ্রাম এখন 'Solar Village': মহারাষ্ট্রের সাতারায় তৈরি হল দৃষ্টান্ত
মহারাষ্ট্রের প্রত্যন্ত এলাকার জনপদগুলিতে আজও সব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। পৌঁছলেও দিনের বেশিরভাগ সময় ঘন ঘন লোডশেডিং-এ জর্জরিত হতে হয়। সাতারা জেলার মান্যচিওয়ারি গ্রামের গল্পটা কিন্তু একেবারে অন্যরকম। সেখানের ১২৮ টি পরিবারের ঘরে রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন সৌর বিদ্যুতের সুবিধা। রাস্তায় রয়েছে ১২ টি স্ট্রিট লাইট। সরকারি আনুকুল্যে না। এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব গ্রামের মহিলাদের।
গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছিল কয়েক দশক আগে। কিন্তু দিনে গড়ে আট ঘণ্টাই অন্ধকারে ডুবে থাকতে হত। অন্যান্য গ্রাম যখন আবেদন-নিবেদন, হতাশা বা মাঝে মাঝে মৃদু প্রতিবাদের বাইরে বেরোতে পারেনি, তখন মান্যচিওয়ারি গ্রামের মহিলারা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই গড়ার তোড়জোড় শুরু করেন। ১৩ বছর আগে, গ্রামের মহিলা-পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীরা এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়। মহিলারা পরিবারের খরচ থেকে যথাসম্ভব বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে যে তহবিল তৈরি করেন, তা দিয়েই দীর্ঘদিনের চেষ্টায় ধীরে ধীরে গড়ে তোলা হয় সৌর প্যানেলসহ সৌর ব্যবস্থা। গ্রামের কিছু তরুণ-তরুণীকে সৌর প্যানেল রক্ষণাবেক্ষণের তালিমও দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশিই তৈরি হয়েছে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট ও গ্রামের নিজস্ব ভূতল নিকাশী ব্যবস্থা। এখন মহারাষ্ট্রের রাজ্য ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের (Maharashtra State Electricity Distribution Ltd, সংক্ষেপে MSEDCL) ওপর এই গ্রামকে সামান্যই নির্ভর করতে হয়। সৌরবিদ্যুৎ আনার আগে বিদ্যুৎ-বাবদ গ্রামের সামগ্রিক খরচ ছিল মাসিক ৬৫ হাজার টাকা, এখন সেই খরচ নেমে এসেছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায়। উপরি পাওনা, বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাকাল হওয়া এখন প্রায় অতীত। ২০০১ সালে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা চালু হবার পর থেকে জাতীয় ও রাজ্যস্তর মিলিয়ে মোট ৫৯ টি পুরস্কার পেয়েছে এই গ্রাম। ২০১৮ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে মান্যওয়ারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গোবিন্দ আনন্দরাও মানে লাভ করেছেন 'আদর্শ গ্রাম পুরস্কার'। তাঁর কথায়, "এই কৃতিত্ব গ্রামের মহিলাদেরই। তাঁরাই আসল শক্তি।"
মহারাষ্ট্রের মান্যচিওয়ারি গ্রাম এখন স্বনির্ভরতার এক অসাধারণ উদাহরণ তো বটেই, পাশাপাশি 'Sustainable living'-এরও অনন্য দৃষ্টান্ত।
….…………………..
ঋণ : thebetterindia.com
আরও পড়ুন: বইপাঠেই মুক্তিলাভ : পড়াশোনা করলে সাজার মেয়াদ কমছে ব্রাজিলের কারাগারে/ অলর্ক বড়াল