এই প্রথম ভারতীয় ভাষার বই পেল বুকার, সম্মানিত গীতাঞ্জলি শ্রী-র উপন্যাস
আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেলেন ভারতীয় কথাসাহিত্যিক গীতাঞ্জলি শ্রী। আর তাঁর হাত ধরেই ভারতীয় সাহিত্য গড়ল এক নতুন রেকর্ড। এই প্রথম ভারতীয় ভাষায় লেখা কোনও বই এই বিখ্যাত পুরস্কার পেল। বুকার-প্রাপ্রকের তালিকায় এর আগে একাধিক ভারতীয় লেখক জায়গা পেয়েছেন, তবে সেই সব বই-ই ইংরেজিতে লেখা। কোনও ভারতীয় ভাষার ঝুলিতে এই সম্মান এই প্রথম।
গীতাঞ্জলির লেখা মূল হিন্দি উপন্যাসটির নাম ‘রেত সমাধি’। এই বইয়ের জন্য বৃহস্পতিবার লন্ডনে গীতাঞ্জলির হাতে তুলে দেওয়া হয় বুকার পুরস্কার। পদকের সঙ্গে ৫০ হাজার পাউন্ড অর্থ পেয়েছেন তিনি। তাঁর বইটির ইংরেজি অনুবাদ করেছেন ডেইজি রকওয়েল। অনুবাদের নাম ‘টোম্ব অফ স্যান্ড’। ডেইজির সঙ্গে পুরস্কারের অর্থমূল্য ভাগ করে নিয়েছেন গীতাঞ্জলি। বুকারের দৌড়ে এই উপন্যাসের সঙ্গে সারা বিশ্ব থেকে ছিল আরও পাঁচটি উপন্যাস। দেশভাগ ও সমকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের সাধারণ জনজীবনকে ভিত্তি করে লেখা এই উপন্যাসের ভাগ্যেই শেষপর্যন্ত জুটেছে এই সম্মান।
গীতাঞ্জলির জন্ম ১৯৫৭ সালে। শৈশবের অনেকগুলো বছর কাটিয়েছেন উত্তরপ্রদেশে। আটের দশকের শেষ দিক থেকে তিনি লেখালিখি শুরু করেন। ৭২৫ পাতার 'রেত সমাধি' গীতাঞ্জলির লেখা পঞ্চম উপন্যাস। অশীতিপর এক বৃদ্ধা এই উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র। স্বামীর মৃত্যুর পর পাকিস্তানে পাড়ি দিয়েছেন সেই বৃদ্ধা। নিজের যৌবনের দিনে দেশভাগ দেখেছিলেন তিনি। সেই সময়ের দগদগে ক্ষতগুলিই যেন ফের ছুঁয়েছেনে দেখতে চান বৃদ্ধা। মেয়ের ভূমিকায়, মায়ের ভূমিকায়, এক নারীর ভূমিকায়, কিংবা এক নারীবাদীর ভূমিকায় দাঁড়িয়ে, ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সেই সময়ের মূল্যায়ন করতে চাইছেন তিনি। ভাষাভঙ্গির জন্য বুকারের মঞ্চে ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছেন গীতাঞ্জলি। তিনি জানিয়েছেন, বুকারের মতো সম্মান পেয়ে তিনি অভিভূত। তাঁর এই সম্মানপ্রাপ্তি ভারতীয় তথা দক্ষিণ-এশীয় সাহিত্যের প্রতি সারা পৃথিবীর পাঠকদের আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলবে বলে তিনি মনে করছেন।
.....................