'অটো'মান সাম্রাজ্যের গল্প : অটো কীভাবে দখল করল রাজপথ
রিকশা' শব্দটি এসেছে জাপানি 'জিন্রিকিশা' শব্দ থেকে। যেখানে 'জিন্' শব্দের অর্থ মানুষ, 'রিকি' শব্দের অর্থ শক্তি এবং 'শা' শব্দের অর্থ বাহন। অর্থাৎ মানুষের শক্তিতে টানা বাহন। আর আমাদের পরিচিত 'অটো' হচ্ছে যান্ত্রিক শক্তিতে টানা বাহন। টমটম, টেম্পো, টুকটুক বা টুক্সি - যে শহরে আপনি যে নামেই ডাকুন না কেন রং আর আকার পাল্টালেও চাকা তিনটেই থাকবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চারিদিকে যখন বিশাল ধুমধাম লাগল তখম অলি-গলি চলি রামের জন্য এই যানের প্রয়োজন পড়ল।
কিন্তু কারা বানাল এই আজব যান? সেই গল্পই বলা যাক।
সময়টা ১৯৩১। 'মাজদা-গো' এই নামে তিনচাকার ট্রাক বানালো জাপানী মাজদা কোম্পানি।মালপাট আসবে-যাবে।এরপর জাপান থেকে সিঙ্গাপুর সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে এই যান। যুদ্ধের সময় ইটালির কোম্পানি পিয়াগিও (Piaggio)জাপানি ওই মডেল মনে রেখে নিজেদের মানুষ আর মাল টানাটানির জন্য একটু অদলবদল করে নিল। তারপর ১৯৪৭ সালে এই কোম্পানির ডি অ্যাসকোনিও গাড়িটার আরেকটু বদল এনে ইঞ্জিনের 'গোঁ-গোঁ' শব্দটাকে ভেবেই হয়তো নাম দিলো ‘এপ’। ইটালিয় ভাষায় যার অর্থ মৌমাছি।
আমাদের দেশে কীভাবে 'অটো'মান সাম্রাজ্যের সূত্রপাত? ফোর্স কোম্পানির (পরে যারা বাজাজ নাম নেবে) আধিকারিকরা ইটালিয় তেচাকার মডেল দেখাল চাচা নেহেরু আর মোরারজি দেশাইকে। ব্যস্। ওরা বুঝলেন গরীব দেশে জনপরিবহনে এটা একটা দারুণ কার্যকরী মডেল হতে পারে। পুনেতে শুরু হয়ে গেল অটো তৈরি করা। প্রথমে পিয়াগিও কোম্পানির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চললেও ১৯৭১ এ স্বাবলম্বী হল বাজাজ। নিজের মতোই অটো বানাতে শুরু করল তারা।
ভারতে অটোর বাড়াবাড়ি দেখে অনেকেরই মনে হয় শুধু বুঝি এদেশেই এদের এত রমরমা। তা কিন্তু নয়। জাপান থেকে ইটালি,গাজা থেকে ম্যাডাগাস্কার,নাইজেরিয়া থেকে ইজিপ্ট,সুদান-তাঞ্জিনিয়া-উগাণ্ডা কোথায় নেই অটো?এক-এক জায়গায় এক-এক নাম। কিন্তু তিন চাকার ধুঁয়াধার এই যান পৃথিবীর বহু দেশেই জনতা জনার্দনের সেবায় নিয়োজিত।
বড়োলোকের যান নয়। আভিজাত্যের ছাপ নেই। কিন্তু পৃথিবীর সর্বত্রই সাধারণ মানুষের পায়ের ঘাম মাথায় ফেলে রোজগার করা অর্থের মূল্য দিতে জানে এই অটো।
...............
ঋণ : The Hindu
#auto #three wheeler #silly পয়েন্ট