এককালের চোরাশিকারীরাই এখন অরণ্যের রক্ষক : অসমের জঙ্গলে উলটপুরাণ
কেউ গাছ কাটার জন্য গ্রেপ্তার হয়েছিলেন পুলিশের হাতে, কেউ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন চোরাশিকারের অভিযোগে। কিন্তু এখন তাঁরাই অরণ্যের পাহারাদার। এমনই উলটপুরাণের সাক্ষী হয়ে থাকছে আসামের মানস জাতীয় অভয়ারণ্য। প্রাক্তন অপরাধীরাই এখন এখানে ওয়াকিটকি, লাঠি হাতে অরণ্য রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত।
১৯৮৫ সালে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা পাওয়া মানস জাতীয় অরণ্য মূলত বিখ্যাত গণ্ডারের জন্য। কিন্তু বেশ কয়েক দশক ধরে চোরাশিকারীদের দাপটে নাজেহাল হতে হয়েছে এখানের বনকর্তাদের। চলেছে ব্যাপক হারে অরণ্যনিধনও। ২০০৩ সালে বোরোল্যান্ড টেরিটরিয়াল কাউন্সিল (BTC) তৈরি হবার পরে একটা অদ্ভুত পরিবর্তন দেখা যায়। এই সংস্থার নেতৃত্বে বোরো উপজাতির মানুষেরা অসমের বনভুমি রক্ষার্থে সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেন। আর তারই ফলশ্রুতিতে দেখা যায়, বেশ কিছু প্রাক্তন অপরাধী, এমনকি চোরাশিকারীরাও স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসছেন এই কাজে।
বুধেশ্বর বোরো, আটের দশকের এক কুখ্যাত চোরাশিকারী আজ অরণ্যের পাহারাদার। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, "BTC আমাদের উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছে যে আমাদের মাতৃভূমির সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই।" প্রাক্তন অপরাধীদের এ কাজে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পাওয়ায় প্রশাসনিক দিক থেকে আগ্রহ দেখিয়ে তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই মডেল অনুসরণ করছে অসমের চালা সংরক্ষিত অরণ্যসহ আরও কয়েকটি অরণ্য। সব মিলিয়ে অরণ্যের হাত ধরে মূলস্রোতে ফিরছেন এককালের অপরাধীরা, পাশাপাশি তাঁদের হাত ধরে রক্ষা পাচ্ছে অরণ্যও।