কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে লেখার বন্যা : লেখা জমা নেওয়া বন্ধ করল কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা
![](https://firebasestorage.googleapis.com/v0/b/sillypoint-3.appspot.com/o/images%2Fthumbs%2Fmm3XT1677232172365chat_1366x1366.jpg?alt=media)
যন্ত্রেরা বুদ্ধিমান হতে হতে কোথায় গিয়ে থামবে? সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা আবারও উস্কে দিয়েছে পুরনো এই প্রশ্ন।
চ্যাট জিপিটি বা এই ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর সফটওয়ারের আগমনে আমাদের চেনা দুনিয়াটা একেবারে বদলে যেতে চলেছে। আর সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হতে চলেছে সম্ভবত লেখালিখির দুনিয়া। সাম্প্রতিক ঘটনাবলি থেকে তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়ে প্রচুর লেখা জমা পড়ছে, এই অভিযোগ তুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য নতুন লেখা জমা নেওয়া বন্ধ করল সুপরিচিত মার্কিন কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা ক্লার্কসওয়ার্ল্ড (Clarkesworld)।
নিউ জার্সি থেকে প্রকাশিত 'ক্লার্কসওয়ার্ল্ড' সারা বিশ্বের কল্পবিজ্ঞান পত্রিকাগুলোর মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে থেকেছে বরাবর। সতেরো বছর ধরে এই পত্রিকা পাঠকদের বিনোদন ও ভাবনার খোরাক যোগাচ্ছে, উপহার দিচ্ছে সেরা লেখকদের লেখা। সম্প্রতি পত্রিকার সম্পাদক নীল ক্লার্ক (Neil Clarke) টুইটারে লেখা জমা নেওয়া আপাতত বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছেন। তিনি লিখেছেন, "আমরা এই মুহূর্তে নতুন লেখা জমা নেওয়া বন্ধ রাখছি। এর কারণ অনুমান করা আশা করি কঠিন নয়।" লেখা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে 'ক্লার্কসওয়ার্ল্ড' বেশ কড়া। প্রতি মাসে বিপুল সংখ্যক লেখা জমা পড়ে। স্বভাবতই প্রচুর লেখা বাতিলও হয়। পত্রিকার স্পষ্ট ঘোষিত নীতি, "যৌথভাবে লেখা বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে লেখা গ্রহণযোগ্য নয়।"
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু এই ফেব্রুয়ারি মাসেই বিখ্যাত অনলাইন কেনাকাটার ওয়েবসাইট আমাজনে ২০০-রও বেশি বই যুক্ত হয়েছে যেগুলি ChatGPT-র সাহায্যে লেখা। এমনকি এই সফটওয়ারের সাহায্যে কীভাবে লিখতে হবে, তার সহায়িকা বইও বেরিয়ে গেছে বাজারে। নীল ক্লার্ক জানিয়েছেন, যন্ত্রের লেখাগুলোকে তিনি স্পষ্ট করে আলাদা করতে পেরেছেন বলে বাদ দিতে পেরেছেন। কিন্তু এইসব সফটওয়ারের সাহায্যে মোটামুটি একটা লেখা দাঁড় করানো সহজ হয়ে গেছে বলেই পত্রিকার মেলবক্স উপচে পড়ছে এই ধরনের লেখায়। সে কারণেই আপাতত ছেদ টানতে হয়েছে লেখা নেওয়ায়।
এই সমস্যা অবশ্য 'ক্লার্কসওয়ার্ল্ড' পত্রিকার একার নয়। আরও বহু পত্রিকাকে এই একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। 'ক্লার্কসওয়ার্ল্ড'-ই প্রথম এই ধরনের লেখার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিল। এই একই পথ কি নেবে অন্যান্য পত্রিকাও? সে কথা ভবিষ্যতই বলবে।
ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোগ্রামিং-বিশেষজ্ঞ মেলিসা রোমেল (Melissa Roemmele)-এর মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর লেখার সফটওয়ারগুলো অতি সম্প্রতি মানুষের লেখালিখির কায়দার অনেকটা কাছাকাছি এসে পড়েছে। খুব তাড়াতাড়িই কঠিন হয়ে উঠবে মানুষ আর যন্ত্রের লেখার তফাৎ করা। আরও অনেক কিছুর মতো সৃষ্টিশীল লেখালিখির দুনিয়াটাতেও কি রাজ্যপাট জমিয়ে বসবে যন্ত্রেরা? অশনি সংকেত কিন্তু দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই।
..........................