ফিচার

ফতোয়ার জবাব অক্ষরেই, মধ্যযুগের ভারতকে ছুঁয়ে নয়া উপন্যাস রুশদির

আহ্নিক বসু Feb 8, 2023 at 5:26 am ফিচার

ছুরি খাবার ছ-মাসের মাথায় মুক্তি পেল সলমন রুশদির নতুন উপন্যাস। নাম "Victory City"। উপন্যাসের প্রেক্ষাপট চতুর্দশ শতকের ভারতবর্ষ। আগামীকাল (৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে বাজারে আসছে এই বই। বইয়ের প্রচার-অনুষ্ঠানে অবশ্য সশরীর উপস্থিত থাকবেন না লেখক, জানিয়েছেন তাঁর সাহিত্য-প্রতিনিধি অ্যান্ড্রু ওয়াইলি। মাত্র মাসছয়েক আগেই মৌলবাদী হামলা থেকে কোনোমতে প্রাণ বাঁচিয়ে ফেরা রুশদির এই নতুন বইয়ের প্রকাশ নানা দিক থেকেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই বিশ্ববরেণ্য ব্রিটিশ কথাসাহিত্যিক নিজেই হয়ে উঠেছেন মৌলবাদের বিরুদ্ধে এক জ্বলন্ত প্রতিবাদ। চতুর্থ উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ থেকেই রুশদি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। ১৯৮৮ সালে এই উপন্যাসটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল মুসলিম দেশগুলি। রুশদির বিরুদ্ধে তারা এনেছিল ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ। ১৯৮৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি সালমান রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন। সেই সঙ্গে তাঁর মাথার দাম হিসেবে ৩ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন। তারপর দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক ধরে প্রাণের হুমকির মধ্যে থাকতে হয়েছে রুশদিকে। কিন্তু তিনি মাথা নোয়াননি। ঝুঁকি নিয়েই, জীবন-মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য করেই বেঁচেছেন। তারই পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন লেখালিখি। 

তাঁর ওপর সাম্প্রতিক আক্রমণের ঘটনাটিও হতচকিত করে দিয়েছিল বিশ্ববাসীকে। গত বছর ১২ অগস্ট নিউ ইয়র্কে লেক এরি-র কাছে এক অনুষ্ঠানে মঞ্চের উপরেই ছুরি নিয়ে রুশদির উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল হাদি মাতার (Hadi Matar) নামে চব্বিশ বছরের এক যুবক। রুশদির দেহের নানা জায়গায় বেশ কয়েকবার ছুরির আঘাত করতেও সক্ষম হয়েছিল সে। গুরুতর জখম অবস্থায়  হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রুশদিকে। তৈরি হয়েছিল মৃত্যুর আশঙ্কাও। ৭৫ বছর বয়সি ঔপন্যাসিক সৌভাগ্যক্রমে আঘাত সামলে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে খোয়াতে হয় একটি চোখ। নিজের একচক্ষু ছবি টুইটার হ্যান্ডলে প্রকাশ করে রসিকতা করেছেন লেখক। আর এবার এল তাঁর নতুন উপন্যাসের ঘোষণা। সব মিলিয়ে তিনি তাঁর অনুরাগীদের এই বার্তাই দিতে চাইছেন যে, তিনি মৌলবাদের বিরুদ্ধে হার মানছেন না।    

রুশদির প্রতিনিধি ওয়াইলি জানিয়েছেন, নিউ ইয়র্কের সেই হামলার আগেই  ‘ভিক্ট্রি সিটি’ লেখা সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এটি রুশদির পনেরোতম উপন্যাস। উপন্যাসটি মূলত সংস্কৃত ভাষায় লেখা একটি ঐতিহাসিক মহাকাব্যের অনুপ্রেরণায় রচিত। এখানে পম্পা কাম্পানা নামের এক অনাথ মেয়ের গল্প তুলে ধরেছেন ঔপন্যাসিক। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এক নারীর শাসন করার গল্প থাকছে এখানে। বোঝাই যাচ্ছে, যে-কোনোরকম ঘৃণার রাজনীতি বা একচেটিয়া ক্ষমতার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুশদির কলমকে 'দাবায়া রাখতে' পারা সম্ভব না।   

............ 

#Salman Rushdie #Victory City #silly পয়েন্ট

Leave a comment

All fields are required. Comment will appear after it is approved.

trending posts

newsletter

Connect With Us

today's visitors

28

Unique Visitors

214998