বাঁশের জলবিদ্যুৎকেন্দ্র আলো দিচ্ছে প্রান্তিক গ্রামকে : ঝাড়খণ্ডের গবেষকের অভিনব উদ্যোগ
বাঁশের কেল্লা গড়ে লড়েছিলেন তিতুমীর। ঝাড়খণ্ডের প্রান্তিক গ্রামের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে বাঁশ দিয়েই আস্ত একটা জলবিদ্যুৎ প্লান্ট তৈরি করে ফেলেছেন তরুণ উদ্ভাবক কেদার প্রসাদ মাহাতো (Kedar Prasad Mahato)।
ঝাড়খণ্ডের ডুমকি ব্লকের বায়াং গ্রাম তেমনই একটি অঞ্চল। বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু নামমাত্র। দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। বেশিরভাগ দিনই সন্ধের পর আলো জ্বলে না গ্রামের পথে। কখনও সেচের জন্য পাম্প চালানোই দায় হয়ে ওঠে কৃষকদের। এবার এই সমস্যারই সুলভ এক সমাধান খুঁজে বার করলেন কেদার প্রসাদ। গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা আমঝরিয়া নদীর ওপরেই গড়ে তুললেন বাঁশের জলবিদ্যুৎকেন্দ্র (Hydel Powerplant)। নিজেই বানিয়েছেন টারবাইন ও জেনারেটর। আরও অবাক-করা তথ্য হল, কেদারের কিন্তু কলেজের ডিগ্রিটুকুও নেই। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে কলেজের পড়া শেষ করতে পারেননি তিনি। কিন্তু ছোট থেকেই ইঞ্জিয়ারিংয়ের খুঁটিনাটি নিয়ে আগ্রহ ছিল তাঁর। নিজের চেষ্টায় শিখেছেন সবকিছু। শেষমেশ তাঁর প্রবল ইচ্ছাশক্তির সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব। নিজেরই সঞ্চয় ভেঙে যন্ত্রপাতি কিনে খুব কম মূল্যে তৈরি করে ফেলেছেন এই অভিনব প্লান্ট। এই মুহূর্তে কেদারের এই প্লান্ট গ্রামের সমস্ত রাস্তা এবং দুটি মন্দিরকে বর্তমানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। তাঁর এই উদ্যোগ National Bank for Agriculture and Rural Development (NABARD)-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। পরিবেশ-বান্ধব ও সাশ্রয়ী এই প্রকল্প প্রান্তিক অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা যায় কিনা — তা নিয়েই পরীক্ষা চালাচ্ছে এই সংস্থা। সন্তুষ্ট হলে অর্থসাহায্য করবেন তাঁরা। কেদার জানিয়েছেন, ‘নাবার্ড’-এর থেকে উপযুক্ত অর্থসাহায্য পেলে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতাকে ৩০-৪০ কিলোভোল্ট-অ্যাম্পিয়ারের কাছাকাছি পৌঁছে দিতে সক্ষম তিনি। তাতে অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা পাবেন গোটা গ্রামের মানুষ। ঝাড়খণ্ডের একটা গ্রামকে শুধু নয়, একটু ভালো জীবনযাপনের জন্য লড়াই করতে থাকা আস্ত একটা দেশকেই স্বপ্ন দেখাচ্ছনে কলেজছুট কেদার প্রসাদ মাহাতো।
............
তথ্যসূত্র : thelogicalindian.com